মঙ্গলবার ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১১ আশ্বিন ১৪৩০

শিরোনাম: তামিমকে ছাড়াই বিশ্বকাপ দল!    নাগোরনো-কারাবাখে জ্বালানি ডিপোতে বিস্ফোরণে নিহত ২০    রাজধানীতে মাদকবিরোধী অভিযানে গ্রেপ্তার ৪৩    শপথ নিলেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান    খেলাধুলা সুস্থ সমাজ গঠনের অন্যতম অনুষঙ্গ: প্রধানমন্ত্রী    ভোটের দিন সাংবাদিকদের মোটরসাইকেল ব্যবহারে নতুন নির্দেশনা দিলো ইসি    বিএনপিকে ৩৬ দিনের আলটিমেটাম কাদেরের   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
অশ্লীল ফোনালাপ ফাঁস
আড়াই কোটি টাকায় উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা মাসুম চেয়ারম্যান!
উৎপল দাস
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ১০ আগস্ট, ২০২৩, ৮:০৫ পিএম আপডেট: ১০.০৮.২০২৩ ৮:১৯ পিএম | অনলাইন সংস্করণ

রাজধানীর অদূরে সোনারগাঁও উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তিনি। নাম তার মাসুদুর রহমান মাসুম। নিজ এলাকায় তিনি মূর্তমান আতংক এবং তালিকাভুক্ত একজন রাজাকারের নাতি। পাশাপাশি টাকার বিনিময়ে ভাগিয়ে নিয়েছেন সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি পদটিও। আওয়ামী লীগের একজন কেন্দ্রীয় নেতাকে ম্যানেজ করেই তিনি এ পদ ভাগিয়ে নিয়েছেন। ভূমিদস্যুতা, মাদক ব্যবসা, বিভিন্ন কারখানায় শ্রমিক সরবরাহের নামে চাঁদা আদায় এবং অপ্রাপ্ত বয়স্ক মেয়েদের সঙ্গে অশ্লীল ফোনালাপও ফাঁস হয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। 

সরকারি নথি থেকে জানা গেছে, সোনারগাঁও’র কুখ্যাত রাজাকার ছাদেক হোসেন মৌলভীর নাতি পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। এলাকার প্রবীণরা জানিয়েছেন, পিরোজপুরের ঝাউচড়ে একাত্তরে পাকবাহিনীর বুলেটে যখন ঝাজরা হয় শহীদের প্রশস্থ বুক, রাজাকার ছাদেক মৌলভী, কাদির মোল্লা, আছু বেপারীরা তখন অট্টহাসি দিচ্ছিল দাঁড়িয়ে। শহীদ মুল্লুক চাঁন, জোহর আলী ফকির, শাহাবুদ্দিন দেহ যখন লুটিয়ে পরল মাটিতে, ছাদেক মৌলভী তখন তার হাতে থাকা বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে শহীদদের মৃত্যু নিশ্চিত করে। লাশ দেখে চিৎকার দেয়ায় বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে ও গুলি করে আহত করে আম্বিয়া বেগম আর রেকমত আলী বেপারীকে, হিংস্র রাজাকার ছাদেক মৌলভী। নৃশংস হত্যাকারী পাকবাহিনী ও রাজাকারদের বিচার হয়নি। তাদের বংশধরেরা এখন খামছে ধরেছে সোনারগাঁওকে। 

এলাকাবাসীর দাবি, সেই রাজাকার ছাদেক মৌলভীর নাতি মাসুদূর রহমান  মাসুম এখন অনেক ক্ষমতাবান। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান।  সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি। উনি বলে বেড়ান, ‘‘দাম দিয়ে কিনেছি পদ, কারোর দানে পাওয়া নয়। আড়াই কোটিতে নাকি কিনেছেন এই পদ।’’এককালের ফকির, আজ হাজার কোটি টাকার মালিক। গরীবের জমি দখল, অবৈধ নদী ভরাট, মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ, হোটেলে নারী ব্যবসা, মহাসড়ক  এ ডাকাতি, ছিনতাই, বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানে শ্রমিক নিয়োগ ও শ্রমিকদের নায্য অধিকার ও পাওনা বঞ্চিত করে গত পনেরো বছর এ আঙুল ফুলে ফেঁপে কলাগাছে পরিণত হয়েছেন এই রাজাকারের নাতি।



ইউনিয়ন চেয়ারম্যান থাকার সুবাদে ইউনিয়ন এর কয়েকটি স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিও এই রাজাকারের নাতি। স্কুলের মেয়েদের মিথ্যে প্রলোভন দেখিয়ে ও টাকার বিনিময়ে ধর্ষণ করাই তার নেশা। পিরোজপুর ইউনিয়য়ের আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতাকর্মীরা তার অত্যাচার এ অতিষ্ঠ, ভয়ে কেউ প্রতিবাদ তো দূরের কথা, গোপনেও মুখ খুলতে নারাজ। বিএনপি জামাত এর নেতাকর্মীদের নিয়ে তার রয়েছে বিশাল সন্ত্রাসী বাহিনী।  তার রয়েছে অনলাইন সাংবাদিক বাহিনী, উনার পৃষ্ঠপোষকতায় গড়ে উঠেছে সোনারগাঁওয়ে বেশ কয়েকটি প্রেসক্লাব। 
 
উল্লেখ্য, ৯ জানুয়ারি ২০২১ তারিখে মাসুম চেয়ারম্যানের আপন ছোট ভাই জাহিদ হাসান বাবু, মাসুম চেয়ারম্যানের ড্রাইভার সহ ৪ জন মারা যান মদপান ও বিষক্রিয়ায়। কথিত আছে ছোট ভাই বাবুর স্ত্রীর সাথে মাসুম চেয়ারম্যান এর অবৈধ সম্পর্কের কথা বাবু জেনে গেলে, বাবু ইউনিয়ন পরিষদেই তাকে মারতে যায়। এমন পরিস্থিতিতে মাসুম তার ড্রাইভার সহ অন্যান্যদের দায়িত্ব দেয়, বাবুকে শান্ত করার জন্য। 
বাবুকে শান্ত করতে মাসুম চেয়ারম্যান এর ড্রাইভার সহ আরও কয়েকজন মেতে উঠে মদের আডডায়। সেখানে মাসুম চেয়ারম্যান তার একান্ত বাধ্যগত রাসেল নামক একজন এর মাধ্যমে তাদের মদের মধ্যে  বিষ মিশিয়ে তার আপন ছোট ভাই বাবু সহ ৪ জনকে খুন করে। 



কোটি টাকা খরচ করে এই খুনের ঘটনা ধামাচাপা দেওয়া হয়, এতগুলো লোক মারা গেলেও কোন মামলা পর্যন্ত হয়নি।

খোঁজ নিয়ে আরো জানা গেছে, এই মাসুম চেয়ারম্যান অর্ধ কোটি টাকা খরচ করে সোনারগাঁও উপজেলা ডেপুটি মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ওসমান গনিকে একটি বাড়ি করে দেন। কারণ হিসেবে জানা যায় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ এ ২০১০ সালে ডাকাতির নাটক সাজিয়ে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ এ রক্ষিত সকল কাগজপত্র, তার দাদা ছাদেক মৌলভীকে যুদ্ধাপরাধী কর্মকাণ্ডের সকল দলিলপত্র, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ থেকে উধাও করতে তাকে সহযোগিতা করে মুক্তিযোদ্ধা ডেপুটি কমান্ডার ওসমান গনি।  উল্লেখ যে ওসমান গনি মাসুম চেয়ারম্যান এর কিনে দেওয়া গাড়িতে চলে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ এর স্টিকার মেরে দেশের বিভিন্ন স্থানে মাসুম চেয়ারম্যানের মাদক সরবরাহ করে। 

সোনারগাঁও এ এই মাসুম চেয়ারম্যান বিভিন্ন অপ্রাপ্ত মেয়েদের সাথে ন্যাক্কারজনক অডিও ও ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর সমালোচনার ঝড় উঠেছে। তাকে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে দাবি জানিয়েছেন সোনারগাঁওবাসী।
অনেকই বলছেন, রাজাকারের নাতির রক্ত বলে কথা!! রক্ত আসলেই কথা বলে।

এসব বিষয়ে পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সোনারগাাঁও উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি মাসুদুর রহমান মাসুমকে ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। এ বিষয়ে জানতে পরিচয় ও বিষয়বস্তু উল্লেখ করে ক্ষুদেবার্তা পাঠালেও তিনি তার প্রতিউত্তর করেননি।

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Screenshot_1.jpg
http://dailyvorerpata.com/ad/apon.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]