শনিবার ৬ ডিসেম্বর ২০২৫ ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

শিরোনাম: তফশিল ঘোষণার তারিখ এখনো ঠিক হয়নি: ইসি সচিব   প্রশাসনিক ক্যু করে ক্ষমতায় যাওয়া আর হয়ে উঠবে না: জামায়াত আমির   মোংলা পৌর জিয়া মঞ্চের সভাপতি সালাম, সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর; সাংগঠনিক পদে সমালোচনার ঝড়   ১৫ দল নিয়ে ‘মানবতার জোট’র আত্মপ্রকাশ   বাণিজ্যিক আদালত দেশের অর্থনীতিতে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে: প্রধান বিচারপতি   টাঙ্গাইলে ইসলামী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত   নির্বাচনে জনগণই তাদের ভোট পাহারা দেবে: সালাহউদ্দিন আহমদ   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
বাণিজ্যিক আদালত দেশের অর্থনীতিতে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে: প্রধান বিচারপতি
ভোরের পাতা ডেস্ক
প্রকাশ: শনিবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৭:৫৬ পিএম

বাণিজ্যিক আদালত প্রতিষ্ঠা বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য নতুন দিগন্তের উন্মোচন করবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ।

তিনি বলেছেন, সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় অধ্যাদেশ, ২০২৫ প্রণয়নের মাধ্যমে বহুদিনের দ্বৈত প্রশাসনিক সীমাবদ্ধতা দূর হয়েছে এবং সুপ্রিম কোর্ট প্রথমবারের মতো পূর্ণ প্রশাসনিক ও আর্থিক স্বায়ত্তশাসন লাভ করেছে। এর ফলে বিচার বিভাগ এখন নিজস্বভাবে পদসৃজন, বাজেট বরাদ্দ, প্রশিক্ষণ, উন্নয়ন, নীতিমালা প্রণয়নসহ বিচার সংস্কারকে দীর্ঘমেয়াদি ও টেকসই ধারা হিসেবে এগিয়ে নেওয়ার সক্ষমতা অর্জন করেছে।

শনিবার (৬ ডিসেম্বর) চট্টগ্রামে সুপ্রিম কোর্ট ও ইউএনডিপি আয়োজিত বাণিজ্যিক আদালত নিয়ে এক সেমিনারে প্রধান বিচারপতি এসব কথা বলেন।

বাণিজ্যিক আদালত প্রতিষ্ঠা বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য নতুন দিগন্তের উন্মোচন করবে উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, ব্যবসায়িক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে দ্রুত ও আধুনিক বাণিজ্যিক বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য একটি ডেডিকেটেড বা বিশেষায়িত বাণিজ্যিক আদালত প্রতিষ্ঠার আহ্বান করে এসেছিল, যা শিগগির বাস্তবে রূপ নিতে চলেছে। 

তিনি উল্লেখ করেন, সুপ্রিম কোর্টের একটি গবেষক দল বাণিজ্যিক আদালত সংক্রান্ত আইনের প্রাথমিক খসড়া তৈরি করে, যা পরে দেশব্যাপী রোড শো, বিডা’র সঙ্গে নিবিড় পরামর্শ, ব্যবসায়িক আইন বিশেষজ্ঞ এবং বাণিজ্যিক অংশীজনদের মতামতের মধ্য দিয়ে সমৃদ্ধ হয়। এক্ষেত্রে ইউরোপীয় ইউনিয়নও গুরুত্বপূর্ণ কারিগরি সহায়তা দেয়। পরে আইন মন্ত্রণালয়ের আরও পরীক্ষণ ও পরিমার্জনের পর খসড়াটি এখন চূড়ান্ত আইনগত রূপ পেয়েছে এবং গত বৃহস্পতিবার মন্ত্রিসভায় নীতিগতভাবে অনুমোদিত হয়েছে।

তিনি জানান, খসড়া আইনটিতে বাণিজ্যিক বিরোধের সুস্পষ্ট সংজ্ঞা, পর্যাপ্তসংখ্যক বাণিজ্যিক আদালত প্রতিষ্ঠার বিধান, হাইকোর্ট বিভাগে পৃথক আপিল বেঞ্চ, বাধ্যতামূলক মধ্যস্থতা, সীমিত মুলতবি, সারসংক্ষেপ, বিচার, মামলার পরিসংখ্যানের স্বচ্ছ প্রকাশ এবং বিচারক–আইনজীবীদের বিশেষায়িত প্রশিক্ষণের মতো আধুনিক বিধান অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এসব বিধান দ্রুত, দক্ষ ও স্বচ্ছ বাণিজ্যিক বিচার নিশ্চিত করবে এবং বৈশ্বিক অর্থনীতিতে বাংলাদেশের প্রতিযোগিতা–ক্ষমতা বাড়াবে মর্মে তিনি উল্লেখ করেন।

প্রধান বিচারপতি বলেন, গত দেড় বছরে সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও সাংবিধানিক স্বচ্ছতার ভিত্তিতে বিচার ব্যবস্থায় যে মৌলিক রূপান্তর সাধিত হয়েছে, তা দেশের বিচারিক ইতিহাসে এক মাইলফলক। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের বিচার বিভাগ এক নতুন প্রাতিষ্ঠানিক যুগে প্রবেশ করেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, ২০২৪ সালের ২১ সেপ্টেম্বরে তার ঘোষিত বিচার বিভাগ সংস্কারের রোডম্যাপ বিচার বিভাগের পূর্ণ স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা এবং বিচার বিভাগের প্রতি জনগণের আস্থা সুদৃঢ় করার একটি দৃঢ় অঙ্গীকার হিসেবে পথপ্রদর্শকের ভূমিকা পালন করে আসছে।

তিনি আরও জানান, দেশব্যাপী বিভাগীয় সেমিনার ও জাতীয় প্লেনারি সেশন আয়োজনের মাধ্যমে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও দক্ষতা বিষয়ে বিস্তৃত আলোচনা হয়েছে। উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ইউএনডিপি, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ আন্তর্জাতিক অংশীদারদের কারিগরি সহায়তা এই প্রক্রিয়াকে সমৃদ্ধ করেছে।

প্রধান বিচারপতি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রশংসা করে বলেন, সুপ্রিম কোর্টের প্রস্তাবগুলো সরকার দ্রুততার সঙ্গে অনুমোদন করেছে, যা শক্তিশালী ও স্বাধীন বিচারব্যবস্থা নির্মাণে জাতীয় ঐকমত্যকে প্রতিফলিত করে।

প্রধান বিচারপতি বলেন, কোনো আইন কেবল তখনই কার্যকর হয় যখন তা যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হয়। এজন্য বাণিজ্যিক আদালতগুলোর সফল পরিচালনার জন্য অবকাঠামো উন্নয়ন, মানবসম্পদ বিকাশ, ডিজিটাল সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং সব পক্ষ–পেশাজীবীর সমন্বিত প্রচেষ্টা জরুরি। তিনি জানান, সুপ্রিম কোর্ট বাণিজ্যিক বিরোধের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় প্র্যাকটিস ডিরেকশন ও নির্দেশিকা জারি করতে প্রস্তুত। এছাড়া, তিনি আইনজীবী সমাজ ও বিচার–সম্পর্কিত সব অংশীজনকে সততা, শৃঙ্খলা ও দক্ষতার সঙ্গে বাণিজ্যিক আদালত আইন বাস্তবায়নে সক্রিয় ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন—ইউএনডিপির বাংলাদেশ প্রতিনিধি মি. স্টেফান লিলার। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব ও সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান সিদ্দিকী, চট্টগ্রাম বারের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও আইনজীবী, চট্টগ্রামের বিভিন্ন পর্যায়ের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া অনুষ্ঠানে চট্টগ্রামে কর্মরত বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির সদস্য, অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের ইন্টার্ন, চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্সের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। 



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://dailyvorerpata.com/ad/af.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: vorerpata24@gmail.com বার্তা ইমেইল:news@dailyvorerpata.com বিজ্ঞাপন ইমেইল:vpgmad@gmail.com