
ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ওসমান হাদীকে গুলি করা সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ফয়সাল করিম মাসুদ অস্ত্র মামলায় দুই দফায় জামিন পেয়েছেন। দ্বিতীয় দফায় চলতি বছরের ১২ আগস্ট জামিন পান তিনি।
২০২৪ সালের ৮ নভেম্বর ডাকাতির সময় অস্ত্রসহ গ্রেফতার হলে তার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা হয়।
ফয়সাল করিমের জামিনের জন্য অ্যাডভোকেট কায়সার কামাল এবং অ্যাডভোকেট মাহফুজুর রহমান আবেদন করলে চলতি বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকার্টের বিচারপতি মোহাম্মদ আলী এবং বিচারপতি এসকে তাহসিন আলী ৬ মাসের জামিনের আদেশ দেন।
দ্য ডিসেন্টের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে এসব তথ্য। শনিবার দ্য ডিসেন্ট ফেসবুক পেজে ফয়সালের জামিন সংক্রান্ত দুটি ডকুমেন্ট যুক্ত করে এ তথ্য তুলে ধরা হয়।
দ্য ডিসেন্টের দাবি—চলতি বছরের ১২ আগস্ট জামিনের সময়সীমা বৃদ্ধির জন্য পুনরায় আবেদন করলে নতুন করে এক বছরের জামিন মঞ্জুর করে বিচারপতি মোহাম্মদ আলী ও বিচারপতি ইউসুফ আব্দুল্লাহ সুমনের বেঞ্চ।
আদালতের নথিতে দেখা যাচ্ছে, ১৬ ফেব্রুয়ারি জামিন আদেশ হওয়ার পর পরবর্তী নানান প্রক্রিয়া শেষে দ্রুততার সাথে ১৯ ফেব্রুয়ারি সেটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে। হাইকার্টের দুটি আদেশের কপি সুপ্রীম কোর্টের ওয়েবসাইটে পাওয়া গেছে।
এর আগে অনুসন্ধান প্রতিষ্ঠান দ্য ডিসেন্টের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিল, শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করা সন্দেহভাজন ব্যক্তি ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গিয়েছিলেন। গত ৯ ডিসেম্বর কালচারাল সেন্টারে গিয়ে হাদির পাশে বসে আলোচনাও শুনছিলেন।
ডিজিটাল ইনভেস্টিগেটিভ মিডিয়া দ্য ডিসেন্ট হাদিকে গুলি করা করা ব্যক্তি, হাদির নির্বাচনি প্রচারণায় অংশ নেওয়া ব্যক্তি ও ৯ ডিসেম্বর ইনকিবাল কালচারাল সেন্টারে যাওয়া ব্যক্তির একাধিক ছবি তুলনামূলকভাবে যাচাই-বাছাই করে এই দাবি করে প্রতিষ্ঠানটি।
দ্য ডিসেন্টের দাবি—তিন ঘটনায় যে ব্যক্তি সামনে আসছে, তার সঙ্গে ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান নামক এক ব্যক্তির চেহারা মিলে যাচ্ছে।
দ্য ডিসেন্টের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে জানানো হয়, ইনকিলাব কালাচারাল সেন্টার থেকে সংগৃহীত ৯ ডিসেম্বরের সিসিটিভি ফুটেজ, পুলিশের সংগৃহীত ১২ ডিসেম্বরের হামলার সিসিটিভি ফুটেজ, বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত এবং ফেসবুক-ইনস্টাগ্রামে ফয়সাল করিম মাসুদ নামক অ্যাকাউন্ট এবং আওয়ামীপন্থি বিভিন্ন পেজ ও ব্যক্তির প্রোফাইলে পোস্ট করা ৫০টিও বেশি ছবি বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, ওসমান হাদির ওপর বাইকের পেছন থেকে গুলি করা ব্যক্তিটির চেহারার সঙ্গে ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান নামের এক ব্যক্তির চেহারা মিলে যাচ্ছে। তিনি রাজধানীর আদাবর থানা ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন বলে সংবাদমাধ্যমে পুরোনো খবর থেকে জানা গেছে।
বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, গুলি করা ব্যক্তির বাম হাতে থাকা বিশেষ ডিজাইনের ঘড়িটির সঙ্গে একই ডিজাইনের ঘড়ি পরা একাধিক ছবি ফয়সাল করিম মাসুদের ইনস্টাগ্রাম এবং ফেসবুক প্রোফাইলে পাওয়া গেছে।
২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে একাধিক মূলধারার সংবাদমাধ্যমে ফয়সাল করিমের ছবিসহ খবর প্রকাশিত হয়েছিল। রাজধানীর মোহাম্মদপুরের আদাবর এলাকায় একটি অফিসে ঢুকে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুট ও ডাকাতির মামলায় প্রধান আসামি হিসেবে ফয়সাল করিম র্যাবের হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন। যদিও পরে কীভাবে তিনি ছাড়া পান, সে বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।