শনিবার ৯ ডিসেম্বর ২০২৩ ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩০

শিরোনাম: বিএনপির পরবর্তী পরিকল্পনা দেশে দুর্ভিক্ষ ঘটানো: প্রধানমন্ত্রী    ওসমানী বিমানবন্দরে ৩৪ কেজি সোনাসহ আটক ৪    পতাকাবিহীন গাড়িতে কোটালীপাড়ায় প্রধানমন্ত্রী    যোগদানের ২৫ দিনের মাথায় বদলি ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা থানার ওসি হাবিল    স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে ৪৮ নৌকার মাঝি ধরাশায়ী!    নিষেধাজ্ঞায় পড়লে পণ্য না নেওয়ার শর্ত প্রসঙ্গে যা বলল বিজিএমইএ    রাষ্ট্রপতির কাছে ৪ দেশের রাষ্ট্রদূতের পরিচয়পত্র পেশ   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
আলোচিত জামাল হত্যা: গুলি করে চেয়ারম্যান কালামের ফ্যাক্টরিতে আশ্রয় নেয় ঘাতকরা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: শনিবার, ২৪ জুন, ২০২৩, ৬:২৩ পিএম আপডেট: ২৪.০৬.২০২৩ ৭:০৮ পিএম | অনলাইন সংস্করণ

কুমিল্লার দাউদকান্দির গৌরপুর বাজারে আলোচিত যুবলীগ নেতা জামাল হোসেন হত্যার রোমহর্ষক বর্ণনা দিয়েছেন দেলোয়ার হোসেন দেলু। সে বোরকা পড়ে গুলি করে যুবলীগ নেতাকে হত্যা করা তিন ব্যক্তির একজন। দেলু আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দিতে বর্ণনা দিয়েছে সেই হত্যাকাণ্ডের। হত্যাকাণ্ডের দিন সন্ধ্যায় দেবিদ্বার উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদের ছোট ভাই মাসুদের কাছ থেকে অস্ত্র সংগ্রহ করে তারা। কালো হাইস গাড়ি যুগে পরিকল্পনা মতো গৌরীপুর বাজারে বোরকা পড়ে যায় আরিফ, কালা মনির ও দেলু। বাজারে জামালকে পাওয়া মাত্র মনির ও আরিফ দুইটা করে গুলি করে। শেষে একটা গুলি করে দেলু। তখন পরিকল্পনা মতো দৌড়ে প্রথমে সিএনজিতে করে, পরে হাইসে উঠে চান্দিনার কাঠেরপুল এলাকায় চলে যায় হত্যাকারীরা। সেখান থেকে দেবিদ্বার উপজেলা চেয়ারম্যানের ছোট ভাই মাসুদ অন্য একটি হাইসে করে তাদের নিয়ে যান নোয়খালীর সূবর্ণচরে। নোয়খালীতে দেবিদ্বার উপজেলা চেয়ারম্যান ও কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদের মুরগীর ফ্যাক্টরিতে আত্মগোপন করে তারা।

দেলোয়ার হোসেন দেলু আদালতে তার জবানবন্দিতে বলেন, ‘দাউদকান্দিতে জমি বিক্রি ও দালান উঠানোর চাঁদা ভাগাভাগি নিয়ে দ্বন্দ্ব হয় জামাল-কামাল ও সুজন-শাকিল দুই গ্রুপের মধ্যে। এগুলো নিয়ে মারামারিও হয় কয়েক দফা। পরে দশ লাখ টাকা চুক্তিতে জামালকে হত্যার পরিকল্পণা করে প্রতিপক্ষ। এই বিষয়ে সোহেল সিকদারসহ আরো কয়েকজন সহায়তার কথা বলেন। ৩০ এপ্রিল বিকেলে জিয়াকান্দি পাওয়ার হাউস থেকে একটি হাইসে উঠে আরিফ, মনির ও আমি বোরকা পড়ি। গাড়িটি আমাদের নিয়ে ঘন্টা খানেক ঘুরাঘুরি করে আবার পাওয়ার হাউসে চলে আসে। সেখানে আরিফ আমাকে একটি ও মনিরকে একটি বন্দুক দেয়। তার কাছে রাখে আরো একটি। সেখান থেকে সিএনজিতে করে গৌরীপুর বাজারে চলে যাই। গৌরীপুর বাজারে আমাদের লোক জামালের অবস্থান সম্পর্কে জানিয়ে দেয়। সন্ধ্যা নাগাদ তথ্য দেওয়া জায়গায় জামালকে দেখা মাত্র আরিফ ও কালা মনির দু’টি করে গুলি করে। শেষে আমি একটি গুলি করি। লোক জড়ো হতে থাকলে আমরা দৌড়ে ভুলির রাস্তা মাথায় চলে যাই। সেখান থেকে জঙ্গল দিয়ে মোক্তারের গ্যারেজের কাছে গেলে শাহ আলী হাইস গাড়ি নিয়ে আসে। আমরা চান্দিনা কাঠেরপুল এলাকায় গিয়ে দেখি দেবিদ্বার উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদের ছোট ভাই মাসুদ আমাদের জন্য অপেক্ষা করতেছে। সে গাড়িতে উঠলে আরিফ বলে ‘জামাল শেষ’। তখন মাসুদ বলে ঠিক আছে। আমরা গাড়িতে করে আশ্রমের পাশে গেলে মাসুদ সৈকতকে দিয়ে ৫টা ফেন্সিডিল আনে। আমরা সবাই মিলে খাই। মাসুদ অস্ত্রের ব্যাগ সৈকতের কাছে দিয়ে বলে তার বাড়িতে রেখে আসতে। আমাদের মোবাইল গুলো পলিথিনে করে ফখরুলের কাছে রেখে যাই। সেখান থেকে মাসুদসহ আমরা নিমসার বাজার এলাকায় চলে যাই। ওখানে মাসুদ ফোন করে অন্য একটি হাইস নিয়ে আসে। সেই হাইস করে মাসুদসহ আমরা নোয়াখালীর সূবর্ণচরে দেবিদ্বার উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদের মুরগীর ফ্যাক্টরিতে চলে যাই। ফ্যাক্টরিতে গোসল করে খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ি। পরে আমি শনিরআখড়া আমার খালার বাড়িতে চলে যাই। সেখান থেকে র‌্যাব আমাকে গ্রেফতার করে’।

জামাল হত্যা মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী  এড. মাসুদ সালাউদ্দিন বলেন, 'আদালতে দেলু, সৈকত ও গাড়ি চালক সুমন স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দিয়েছে। এতে মাসুদসহ পেছনের সকল মাস্টার মাইন্ডের কথা বেড়িয়ে এসেছে৷ আমরা আশা করবো মহামান্য আদালত মাস্টার মাইন্ডসহ সকলের সর্বোচ্চ শাস্তি দিবেন '।



দাউন্দকান্দি যুবলীগ নেতা জামাল হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শ্যুটার দেলুসহ আরো দুইজন আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দিয়েছে। অপর দুইজন হলো হাইস গাড়ি চালক সুমন হোসেন ও একই ঘটনায় অস্ত্র মামলায় গ্রেফতার ছাত্রলীগ নেতা মাজহারুল ইসলাম সৈকত। গাড়ি চালক সুমন হোসেন গাড়িতে করে আসামীদের বহন করার কথা আদালতে স্বীকার করেন। অপর দিকে ছাত্রলীগ নেতা মাজহারুল ইসলাম সৈকত মাসুদের বাড়িতে অস্ত্রের ব্যাগ হত্যা শেষে পৌছে দেওয়া ও পরবর্তীতে মহাসড়কের পাশে লোকিয়ে রাখার বিষয়টি স্বীকার করেন। এখন পর্যন্ত জামাল হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় র‌্যাব ও গোয়েন্দা পুলিশের হাতে ১০ জন গ্রেফতার হয়েছে।

কুমিল্লা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি রাজেস বড়ুয়া জানান, ‘আমরা গভীর ভাবে এই ঘটনার তদন্ত করছি। আসামীরা আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক বক্তব্য দিয়েছে। আশা করি জামাল হোসেন হত্যাকাণ্ডের সংশ্লিষ্ট সকল তথ্য বেড়িয়ে আসবে’।

প্রসঙ্গত, কুমিল্লা দাউদকান্দির গৌরিপুর বাজারে গত ৩০ এপ্রিল রাত ৮টার দিকে তিতাস উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক জামাল হোসেন খুন হন। তিনজন বোরকা পরে এসে তাকে গুলি করে হত্যা করেন।

নিহত জামাল হোসেন তিতাস উপজেলার জিয়ারকান্দি ইউনিয়নের নোয়াগাঁও গ্রামের ফজলুল হকের ছেলে। তিতাস উপজেলায় বাড়ি হলেও তিনি ব্যবসায়িক সূত্রে পাশের দাউদকান্দি উপজেলার গৌরিপুর বাজারের পাশে ভাড়া বাসায় থাকতেন।মাজহারুল ইসলাম সৈকত বরকামতা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও দেবিদ্বার উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদের অনুসারী। চেয়ারম্যানের ছোট ভাই মাসুদ যুবলীগ নেতা জামাল হোসেন হত্যা মামলার ১০ নাম্বার আসামী।

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Screenshot_1.jpg
http://dailyvorerpata.com/ad/apon.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]