বুধবার ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ৩ আশ্বিন ১৪৩১

শিরোনাম: কর্মোপযোগী শিক্ষার মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত উন্নতি সম্ভব    নববর্ষের আনন্দ যেন বিষাদের কারণ না হয়: রাষ্ট্রপতি    নির্বাচনে ২১ সদস্যের মনিটরিং সেল গঠন ইসির    দেশজুড়ে যে তিনদিন মোটরসাইকেল চলাচলে নিষেধাজ্ঞা!    মির্জা ফখরুলের জামিন শুনানি ৯ জানুয়ারি    প্রাথমিকের ছুটি বাড়ল ১৬ দিন (তালিকা)    নির্বাচনের বিরুদ্ধে বিএনপির প্রচারণা রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
তিন দশকে লালনের ১ টাকার চা-পান
বাগাতিপাড়া (নাটোর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১১ এপ্রিল, ২০২৩, ৯:৫২ পিএম | অনলাইন সংস্করণ

১ টাকা কাপ চা ও ১ টাকায় এক খিলি পান। বর্তমান দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে অবিশ্বাস্য মনে হলেও সত্যি। ৩০ বছর ধরে এভাবেই এক টাকায় চা-পান বিক্রি করছেন নাটোরের বাগাতিপাড়ার রজব আলী ব্যাপারী লালন (৪৫)। বর্তমান বাজারে এক কাপ চা অথবা একটা পানের সর্বনিম্ন মূল্য ৫ টাকা। কিন্তু লালন তা বিক্রি করছেন মাত্র ১ টাকা। উপজেলার ফাগুয়াড়দিয়াড় ইউনিয়নের নওপাড়ার এলাকায় তার একটি দোকান রয়েছে। আর সেই দোকানকে কেন্দ্র করে ওই এলাকার নাম পাল্টে রাখা হয়েছে এক টাকার মোড়। তাই মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে চা-পানের দাম বাড়াননি লালন। 



এত কম দামে চা ও পান বিক্রি করে এরই মধ্যে সাড়া ফেলেছেন তিনি। কৌতূহল থেকেই ছুটির দিনগুলোতে বিকালে লালনের দোকানে ভিড় জমান বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা মানুষ। তবে রমজানে ইফতারের পর বেশি ভিড় হয় তার দোকানে। অন্য সময় বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত প্রতিদিন প্রায় পাঁচশ থেকে দেড় হাজার লোক চা খেতে আসেন। রজব আলী ব্যাপারী লালন জানান, ১৯৯১ সালে তিনি চা-পান বিক্রির ব্যবসা শুরু করেন। সে সময় তিনি ৫০ পয়সায় এক কাপ চা ও একই দামে একটি পান বিক্রি করতেন। তখন এ মোড়ের নাম ছিল ‘নওপাড়া মোড়’। ১৯৯৪ সালে তা বাড়িয়ে প্রতি কাপ চা ও পানের দাম এক টাকা করেন। তার এ এক টাকায় চা-পান বিক্রির সুবাদে মোড়টির নাম এখন ‘১ টাকার মোড়’ নামে পরিচিতি পেয়েছে। তার দোকানের এ চা ও পান খেতে বাংলাদেশের প্রায় সব জেলা থেকেই মানুষ এসেছে। এমনকি সুইজারল্যান্ডের পর্যটকরাও এ চা ও পান খেয়ে গেছেন। তিনি প্রতিদিন ১২শ থেকে ১৩শ কাপ চা এবং ৮শ-৯শ পান বিক্রি করেন। 

তিনি বলেন, যদিও বর্তমান বাজারে চিনি, চা পাতার দাম বেড়েছে তবু মানুষের যে ভালোবাসা পেয়েছি, এখনো পাচ্ছি তাতে বেঁচে থাকা পর্যন্ত দাম বাড়ানোর আর ইচ্ছা নেই। পৈতৃক সূত্রে পাওয়া পাঁচ বিঘা জমি আর এ ব্যবসা দিয়ে দুই সন্তানের পরিবার খেয়ে-পরে চলে যায়। ক্রেতারা জানান, লালনের দোকানের চা অন্য দোকানের চেয়ে স্বাদে-গুণে কোনো অংশেই কম নয়। তার এই এক টাকার চায়ের খবর অনেক দূর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকে দূর-দূরান্ত থেকে তার দোকানে চা-পান খেতে আসেন। চা খেতে আসা পেড়াবাড়িয়া দাখিল মাদরাসার সুপারিনটেনডেন্ট শামসুল আরেফিন জানান, তিনি প্রায় প্রতিদিনই এ দোকানে বসে এক টাকার চা খান। লালন সকালের দিকে মাঠে শ্রম দেন আর বিকাল থেকে শুরু হয় তার চা বিক্রি। তবে এত কম দামে আর কোথাও চা বিক্রি করতে দেখেননি তিনি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নীলুফা সরকার বলেন, সম্প্রতি তিনি এ উপজেলায় যোগদান করলেও ইতোমধ্যে এক টাকায় চা বিক্রির খবর শুনেছেন। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে লালনের প্রতি তিনি শুভকামনা জানান। 

স্থানীয় সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুল বলেন, ওই রাস্তা দিয়ে যাতায়াতের সময় তিনি নিজেও লালনের তৈরি চা খান। লালনের সংসারের উন্নতির জন্য পূর্বের ন্যায় সহযোগীতা করা হবে। 

কনজুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম তপু বলেন, এই দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে লালনের এক টাকার চা-পান অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। তিন দশক পূর্তিতে সরকারের দাবি জানাচ্ছি তাকে যেনো সরকারী ভাবে ‘মানবিক চা বিক্রেতা’ স্বীকৃতি দেয়া হয়।

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Screenshot_1.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]