ফারইস্ট স্টকস্ এন্ড বন্ডস্ লি.-এর চেয়ারম্যান এম এ খালেক ও তার আত্মীয় স্বজনসহ যোগসাজসে প্রতারণা ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে ফারইস্ট স্টকস্ এন্ড বন্ডস্ লিঃ এর প্রায় ১১৬ কোটি টাকা আত্মসাৎ পূর্বক সম্পদে রূপান্তর ও বিভিন্ন সময় বিদেশে পাচার করে। গত ০৬/০৯/২০০৯ খ্রিঃ হতে ২৫/০২/২০১৯ খ্রিঃ তারিখ পর্যন্ত সিআইডি ফারইস্ট কোম্পানীর কাগজপত্র যাচাই বাছাই করে এর প্রমাণ পায়।
মানি লন্ডারিংয়ের অপরাধে ফারইস্ট স্টকস্ এন্ড বন্ডস্ লিঃ এর চেয়ারম্যান এম এ খালেকসহ মোট ১৭ জনের বিরুদ্ধে সিআইডি কর্তৃক মামলা দায়ের।
সিআইডি দীর্ঘ অনুসন্ধান শেষে গত ০৪/০৪/২০২৩ তারিখে এম এ খালেকসহ মোট ১৭ জন আসামীর বিরুদ্ধে ডিএমপি ঢাকার মতিঝিল থানায় মামলা দায়ের করে। মামলা নং- ০৩, তারিখঃ- ০৪/০৪/২০২৩ খ্রিঃ, ধারাঃ মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪ (২)। আসামীরা হল ০১। এম এ খালেক(৭৫) সাবেক চেয়ারম্যান ০২। তরফদার জাহাঙ্গীর আলম (৫০), সাবেক সিইও ০৩। মোঃ জাহিদুল হক (৪৪), সাবেক সিএফও (৪) সাবিহা খালেক (৬২) (এম এ খালেকের স্ত্রী), ৫। শাহরিয়ার খালেদ রুশো (৩৯) (এম এ খালেকের ছেলে), ৬। মিস. শারওয়াত খালেদ (৩৬) (এম এ খালেকের মেয়ে), ৭। তানভিরুল হক (এম এ খালেকের মেয়ের জামাতা), ৮। মোঃ ফজলুল হক (৬৬) (এম এ খালেকের মেয়ের শশুর), ৯। আবুল কাশেম মোল্লা (৭৫),১০। রাশেদ মোহাম্মদ মাজহারল (৩৭), ১১। খশরুবা সুলতানা শিল্পি (৪৫), ১২। শেখ ইউসুফ আলী (৬১), ১৩। মাহবুবা সুলতানা (৪৯),১৪। মিসেস দিলরুবা সুলতানা, ১৫। মোঃ নজরুল ইসলাম (৫৭), ১৬। মিজানুর রহমান মোস্তফা, ১৭। কাজী শাহরিয়ার ।
ফারইষ্ট স্টকস্ এন্ড বন্ডস্ লিঃ একটি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানী যাহা জয়েন্ট স্টক এন্ড ফার্ম এর অধিনে নিবন্ধনকৃত রেজিঃ নং- ঈ-৭৯৫৩০ তারিখ ০৩/০৯/২০০৯। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ট্রেক নং-২২৬ এবং চট্রগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ ট্রেক নং- ১৩৮ এর সদস্য। প্রাপ্ত তথ্যাদি বিশ্লেষণে আসামী এম এ খালেক, ফারইষ্ট স্টকস্ এন্ড বন্ডস লিঃ এর চেয়ারম্যান থাকাকালীন সময়ে ক্ষমতার অপব্যবহার, নিজ প্রভাব বিস্তার করে প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের টাকা অপরাপর আসামীদের সহায়তায় লেয়ারিং করে অবৈধ সম্পদ অর্জন করত মানিলন্ডারিং করেছে। নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান হোদাভাসী চৌধুরী এন্ড কোম্পানী এর বিশেষ প্রতিবেদন দেখা যায়, ঘটনার সময়কালে প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন বিনিয়োগকারী ৮৯,০৪,৫৬,৩৯৭ টাকার চেক বা নগদ টাকা জমা করেন। যাহা বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাবে দেখানো হলেও কোম্পানীর ব্যাংক হিসাবে উক্ত টাকা জমা না দিয়ে ভুয়া জমা দেখিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাৎ করে। এছাড়াও আসামীদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিনিযোগকারীগন বিভিন্ন সময়ে মোট ১৩,২৪,০০,০০০/- টাকার চেক জমা করে কিন্তু অপর্যাপ্ত জের, স্বাক্ষরে গড়মিল, টাকার অংক ভুল লেখার কারনে চেকগুলো ডিজঅনার হয়। কৌশলে সেই চেকগুলো বিভিন্ন কোডে রিভারসাল এন্ট্রি (জমা) দেখানো হয়েছে। অডিট প্রতিবেদনে হতে দেখা যায় অভিযুক্তগন পরষ্পর যোগসাজসে কোম্পানীর হিসাবে যোগফলে ২২,৮৬,৪১,১২৫/- স্থলে ৩৬,৩৬,৪১,১২৫/- বসিয়ে তথ্যের গড়মিল করে ১৩,৫০,০০,০০০/- টাকা আত্মসাৎ করে।
প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তন চেয়ারম্যান এম এ খালেক কর্তৃক তার স্বার্থ সংশ্লিস্টদের দিয়ে পরিচালিত বিও হিসাবে পর্যাপ্ত টাকা না থাকা সত্ত্বেও পরষ্পর যোগসাজসে ২টি চেক ইস্যু করে ৫০ লক্ষ টাকা লেয়ারিং করে আবুল কাসেম মোল্লা নামক প্রাইম ব্যাংক লিঃ এর একাউন্টে জমা করে । এম.এ.খালেক তার প্রাইম ব্যাংক লিঃ এর ব্যক্তিগত একাউন্টে হস্তান্তর করে নিজে আত্মসাৎ করেন। আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক থেকে ফারইষ্টের নামে গৃহীত ৪১ কোটি টাকার ঋনের মধ্যে ৩৬ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা আবুল কাশেম মোল্লা, কাজী শাহরিয়ার এবং জনাব মোঃ নজরুল ইসলামের মাধ্যমে লেয়ারিং করে পারস্পরিক যোগসাজসে ফারইষ্ট স্টকস্ এন্ড বন্ডস নামক প্রতিষ্ঠানের টাকা হস্তান্তর ও গ্রহন পূর্বক আত্মসাৎ করে। প্রতারণার টাকাকে সম্পদে রূপান্তরের জন্য স্থাবর সম্পত্তির বিক্রেতা শ্যামা করিমকে ফারইষ্ট স্টকস্ এন্ড বন্ডস এর ব্যাংক হিসাব হতে পে-অর্ডারের মাধ্যমে জমির মূল্য পরিশোধে অপরাধলব্ধ অর্থ লন্ডারিং করে স্থাবর সম্পদে রূপান্তর করেছে ।
এম এ খালেক কর্তৃক পরিচালিত ৮টি বিও হিসাবে ফারইস্ট স্টকস এন্ড বন্ডস লিঃ কোম্পানী কার্যক্রম শুরুতেই ২০১০ সালের জুন মাস হতে ২০১২ সালের জানুয়ারী মাস পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তন সিইও তরফদার জাহাঙ্গীর আলম ও জাকির হোসেন ভূইয়া’সহ পারস্পরিক যোগসাজশে ফারইষ্ট স্টকস্ এন্ড বন্ডস্ প্রতিষ্ঠানের হইতে মোট ৮,১৫,০০,০০০/- টাকা, ফারইস্ট ফাইনান্স এন্ড ইনভেস্টমেন্ট লিঃ হইতে ফারইষ্ট স্টকস এন্ড বন্ডস প্রতিষ্ঠানে আগত ষড়ধহ এর মোট ৯,৯৫,০০,০০০/- টাকা এবং ফেইক ডেপোজিট মোট ৭,১০,০০,০০০/- টাকাসহ সর্বমোট ২৫,২০,০০,০০০/- টাকা জমা দেখান যাহা কোম্পানীর ব্যাংক হিসাবে জমা হয়নি এবং উক্ত জমার বিপরীতে প্রতারণা পূর্বক সমপরিমান মার্জিন (ঋন) গ্রহন করত অর্থাৎ কোনরূপ বিনিয়োগ ছাড়াই ৫০,৪০,০০,০০০.০০ টাকার শেয়ার ক্রয়ের মাধ্যমে আর্থিকভাবে লাভবান হয়। যাহা কোম্পানীর হিসাব হতে সিকিউরিটি একচেঞ্চকে পরিশোধ করা হয়। খালেক গংদের কারনে বিনিয়োগকারীদের মাঝে উৎকন্ঠা বিরাজ করছে।