পূর্ব শত্রুতার জের ধরে বিষ প্রয়োগে ছোট ভাইয়ের ২ বিঘা জমির ফসল নষ্ট করার অভিযোগ উঠেছে আপন ভাইয়ের বিরুদ্ধে।
স্থানীয়রা জানায়, ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার নড়াইল ইউনিয়নের কুমুরিয়া গ্রামের আব্দুল হামিদের পুত্র সিরাজুল ইসলামের সঙ্গে তার আপন বড় ভাই সাইফুল ইসলামের সঙ্গে জমি নিয়ে দীর্ঘদিন বিরোধ চলছিল। এক পর্যায়ে গত শনিবার দিবাগত রাতের কোন এক সময় সাইফুল ইসলাম দুস্কৃতিকারী নিয়ে রোপনকৃত আমন ধানের ফসলে বিষ প্রয়োগ করে নিধনের চেষ্টা চালায়।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ঐ কৃষকের ২ একর জমির আমন ধান বিষ প্রয়োগের কারণে হলুদ বর্ণ হয়ে মরে গেছে। এতে লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানান কৃষক সিরাজুল ইসলাম।
এ বিষয়ে স্থানীয় বৃদ্ধ আব্দুল জব্বার বলেন, এই পর্যন্ত সাইফুল ২৮ থেকে ২৯ টি বিয়ে করেছে। বিভিন্ন জায়গায় বছরে বছরে বিয়ে করে গ্রামে নিয়ে আসে। বর্তমানেও সে ১ছেলে ও ৩ মেয়েসহ গাইবান্দা জেলার এক মহিলাকে নিয়ে এসেছে। বর্তমানে ঐ মহিলার সাথে সে সংসার করছে। ফসলি জমির মধ্যে তার বাড়ি হওয়ায় আশেপাশের মানুষের আসা যাওয়া তার এখানে কম। প্রতিদিন তার বাড়িতে গাজার আসর বসে। কেউ কিছু বললেই তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করে দেয়। ফলে স্থানীয়রা তাকে কিছু বলার সাহস পায়না।
স্থানীয় আজিজুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম, রুকুনুজ্জামান সহ অনেকেই সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে বলেন, মেয়ে, জুয়া ও নেশা সহ বিভিন্ন অপকর্মের সাথে সে জড়িত। পৈত্রিক সম্পত্তিতে তার অংশ সে আগেই বিক্রি করে ফেলেছে। তার ভাই সিরাজুল ইসলামের অংশ থেকেও ২৮ শতাংশ বেশী বিক্রি করে এখন আরো জমির দাবী করছে। এ নিয়ে বিভিন্ন সময় অভিযুক্ত সাইফুল ইসলাম চেয়ারম্যান, উপজেলা চেয়ারম্যান সহ বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ দিয়ে নিজেই আসেনা। তাকে কেউ কিছু বললে থানায় মামলা করে দেয়। এখন পর্যন্ত একাধিক মানুষের নামে মিথ্যা মামলা করেছে সে। এলাকায় সে কোন দোকানেও বসে না। মাঝে মাঝে বিভিন্ন বিবাহিত মেয়েকে স্ত্রী পরিচয় দিয়ে বাড়িতে নিয়ে আসে। কিছুদিন রেখে আবার মারধর করে তাড়িয়ে দেয়। আমরা এর কঠিন শাস্তির দাবী জানাই।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে চাকরীর কারণে ঢাকায় থাকি। আমার বড় ভাই সাইফুল ইসলাম সে সুযোগে তার জমি বিক্রি করে এখন আমার জমি দখলের পায়তারা করছে। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জায়গা থেকে স্ত্রী পরিচয়ে মেয়ে নিয়ে আসে। ভুক্তভোগী ঐ মেয়েদের টাকা শেষ হলে সে তাদেরকে মেরে তাড়িয়ে দেয়। আমি বাড়িতে এলে প্রায়ই আমাকে হুমকি দিতো জমির ফসল নষ্ট করে ফেলবে। আমি বিষয়টি গুরুত্ব দেইনি। কিন্তু এখন তো আমার সব জমির ফসল শেষ করে দিয়েছে। আমার বিরুদ্ধে একাধিক মিথ্যা মামলাও করেছে। মামলার তদন্তে পুলিশ এলেও সে সামনে আসে না। আমি এর উপযুক্ত বিচার দাবী করছি।
এ বিষয়ে জানতে সাইফুল ইসলামের বাড়ি গেলে, সে সাংবাদিক দেখে ফসলি জমির ভেতর দিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায়। তার স্ত্রীকে বিষয়টি নিয়ে জিজ্ঞাসা করলে সে কোন কথা বলেননি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো, মাসুদুর রহমান বলেন, ফসল নষ্ট হওয়ার বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। তারা আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারেন। তিনি যদি আবেদন করেন, আমরা উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে তাকে প্রণোদনা দেওয়ার ব্যবস্থা করবো।
হালুয়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহিনুজ্জামান খান বলেন, তাদের ভাইয়ের সাথে বিরোধের কথা শুনেছি। অভিযোগ পেলে এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।