পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা অনুষদ হতে পাশের সনদ আছে, কিন্তু নেই পেশাগত স্বীকৃতি। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়াধীন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক পরিচালিত এবং ঢাকা, রাজশাহী ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা অনুষদের অধিভুক্ত ৪ বছর মেয়াদী বিএসসি ইন হেলথ/মেডিকেল টেকনোলজী (ডেন্টাল) কোর্সের পাশকৃত প্রায় ২০০০ গ্রাজুয়েটদের আত্নকর্মসংস্থানের সুযোগ কিংবা প্রাইভেট প্র্যাকটিসের সুযোগ কোনটাই নেই। সনদ থেকেও কর্মের সুযোগ না থাকায় দিশহারা তারা। শুধু একটি ছোট্ট নীতিই যথেষ্ট ছিল এই গ্র্যাজুয়েটদেরকে স্বাস্থ্যখাতে কাজে লাগানোর জন্য। এ সমস্যা নিয়ে একমত অনেকেই কিন্তু সমাধানের দায়িত্বভার নেয়নি কেউই। ফলশ্রুতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদ আদৌতেই কোন কাজে আসছে না। একদিকে নেই দেশে কর্ম-সংস্থানের সুযোগ অপরদিকে বর্হিবিশ্বে যেতে গেলেও পোহাতে হচ্ছে নানাবিধ বাঁধা। সরকার একদিকে কর্মমুখী শিক্ষার প্রচার ও প্রসার ঘটাচ্ছেন কিন্তু পেশাগত দক্ষতা থাকার পরও এই জনগোষ্ঠীকে স্বীকৃতির কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। ডেন্টাল গ্রাজুয়েটদের প্রতি অন্যায় করা হচ্ছে বলেও দাবি করেছেন তারা। ফলশ্রুতিতে বিষয়টি নিয়ে তারা আদালতেও গিয়েছেন। ডেন্টাল গ্রাজুয়েটদের অমানবিক জীবন, কাজের স্বীকৃতি না পাওয়ার হতাশা এবং কর্মক্ষম একটি শ্রেণীকে পিছিয়ে রাখতে বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি)’র কতিপয় নেতারা বাধা হিসাবে কাজ করছে। ডেন্টাল গ্রাজুয়েটদের নিয়ে ভোরের পাতার ধারাবাহিক প্রতিবেদনের আজ থাকছে প্রথম পর্ব।
বিএসসি-ডেন্টাল কোর্সটির কারিকুলাম বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, কারিকুলামের বিষয় বস্তু ক্লিনিক্যাল ও সম্পূর্ণ প্র্যাকটিস নির্ভর যার অনেকাংশে বিডিএস কোর্স কারিকুলামের সাথে সাদৃশ কিন্তু তারপরও সনদধারীদের দেওয়া হয়না প্র্যাকটিসের অনুমোদন। ৪ বছর মেয়াদী ডেন্টাল কোর্সটির ৩ বছর একাডেমিক এবং শেষ ১ বছর ইন কোর্স ট্রেনিং (ইন্টার্নি) এর মাধ্যমে শেষ হয়। ১ বছরের ইনকোর্স ট্রেনিং দেশের সরকারী ডেন্টাল কলেজ হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগে/মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডেন্টাল ইউনিটের বিভাগসমূহে সম্পন্ন হয়। কোর্সটিতে ভর্তির যোগ্যতা বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এইচএসসি পাস অথবা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ৩/৪ বছরের ডিপ্লোমা। এ কোর্সের একজন শিক্ষার্থীকে দন্তচিকিৎসা বিষয়ক হিউম্যান এনাটমি, ফিজিওলজি, মাইক্রোবায়োলজি, প্যাথলজি, ওরাল অ্যান্ড ডেন্টাল এনাটমি, অর্থডোন্টিক্স, ডেন্টাল প্রস্থেটিক্স, ওরাল প্যাথলজি এন্ড ওরাল মেডিসিন, কেমিস্ট্রি অব ডেন্টাল ম্যাটারিয়ালস, চিলড্রেন এন্ড প্রিভেনটিভ ডেন্টিস্ট্রি, ডেন্টাল সার্জারি অ্যাসিস্টেন্স এন্ড এনেসথেটিকস, জেনারেল অ্যান্ড ডেন্টাল ফার্মাকোলজি, কনজারভেটিভ ডেন্টিস্ট্রি এবং ডেন্টাল রেডিওলজি প্রভৃতি ক্লিনিক্যাল বিষয়ে (১৯৭০ ঘন্টা তত্ত্বীয় ও ১২০৬ ঘন্টা) ব্যবহারিক পড়ানো হয় যা বিডিএস কোর্সের বিষয়সমূহের সাথে প্রায় সদৃশ। এমনকি শিক্ষার্থীদের ক্লাস, পরীক্ষা ও হাতে-কলমে প্রশিক্ষণও দেন এমবিবিএস ও বিডিএস ডিগ্রীধারী চিকিৎসকগন।এ ছাড়া এক বছর ইনকোর্স ট্রেনিংয়ের মাধ্যমে এই কোর্সের শিক্ষার্থীরা বিডিএস কোর্সের শিক্ষার্থীদের ন্যায় ডায়াগনসিস, কনজারভেটিভ, সার্জারি, প্রস্থডোন্টিক, অর্থডোন্টিক ও চিলড্রেন ডেন্টিস্ট্রিসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে সরাসরি প্রশিক্ষণের সুযোগ পান।
তারপরও কোর্স টাইটেলের সাথে অযাচিতভাবে জুড়ে দেয়া হয়েছে ‘টেকনোলজি’ শব্দটি। অথচ এ কোর্সের সিলেবাসে টেকনোলজির বিষয়বস্তুর ছিটাফোঁটাও নেই। বাস্তবিক অর্থে বিশ্বে ডেন্টাল টেকনোলজি ডিগ্রীর জন্য যে কারিকুলাম, ল্যাব ভিত্তিক প্রশিক্ষণ ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাপনা রয়েছে সে ধরনের স্বতন্ত্র ব্যবস্থাপনা অদ্যবধি বাংলাদেশে নেই। একজন ডেন্টাল ল্যাবরেটরী টেকনিশিয়ানের পঠিত বিষয় ও কাজ হলো কৃত্রিম দাঁত বানানো (আর্টিফিসিয়াল ডেনচার, ক্রাউন, ব্রীজ), দাঁতের ছাপ নেয়া, মডেল বানানো প্রভৃতি। এ দেশের প্রেক্ষিতে এ সকল কাজ করার জন্য বা শেখার জন্য শর্টকোর্স/সার্টিফিকেট কোর্স সম্পন্ন করলেই হয়। বাংলাদেশে ডেন্টাল ল্যাবরেটরী টেকনিশিয়ান হিসেবে যারা কাজ করছেন তাদের কোন পেশাদার ডিগ্রী নেই, এমনকি একাডেমিক ডিগ্রীও নেই। টেকনোলোজি শব্দটিকে অপব্যাখা করে ক্লিনিক্যাল কারিকুলামকে টেকনোলজিস্টের তকমা লাগিয়ে দেয়ার নিবিড় ষড়যন্ত্র।
বিশ্ববিদ্যালয় হতে দন্তচিকিৎসা বিজ্ঞানে ব্যাচেলর ডিগ্রীধারী হয়েও শুধুমাত্র বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) তফসিলে কোর্সটি অন্তর্ভূক্ত না করায় যোগ্যতা থাকা সত্বেও পেশাগত চর্চার সুযোগ না পেয়ে সকলেই হতাশায় দিনযাপন করছেন। আশ্চর্যজনকভাবে এতবছর পার হলেও সরকারী চাকুরীর ক্ষেত্রেও এ সকল গ্রাজুয়েটদের ডেন্টাল পেশায় এখন পর্যন্ত কোন সুযোগ সৃষ্টি করা হয়নি। বর্হিবিশ্বে এ সকল প্রশিক্ষিত জনবলের প্রচুর চাহিদা থাকা সত্বেও শুধুমাত্র পেশাগত অনুমোদন অর্থাৎ বিএমডিসির স্বীকৃতি না থাকায় সম্পূর্ণভাবে বঞ্চিত হচ্ছে ।
এদিকে, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সরকারিভাবে কোর্সটি অনুমোদনের সময় কোর্সটিকে বিএমডিসি’র অধিভূক্তি ও শর্তসমূহ প্রতিপালনের জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন। কোর্সটিকে বিএমডিসি’র তফসিলভুক্ত করার সিদ্ধান্ত থাকলেও বিএমডিসি কর্তৃপক্ষ কোনরূপ পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় সমস্যার শুরু হয়। সমস্যা নিরসনে আন্দেলনে নামেন শিক্ষার্থীরা, শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবির আলোকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ৯ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করেন। কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক ৩০.০১.২০১৩ খ্রি: তারিখে দুটি সুপরিশ প্রদান করেন। একটি সুপারিশ পত্র বিএমডিসি বরাবর এবং অন্য একটি ঢাকা, রাজশাহী ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরারবর প্রেরণ করেন। বিএমডিসি বরাবর প্রেরিত পত্রটিতে বি.এসসি বিএসসি ইন হেলথ/মেডিকেল টেকনোলজী ডেন্টাল কোর্সটিকে বিএমডিসি কর্তৃক অনুমোদিত করে প্রাইভেট প্র্যাকটিস রেজিস্ট্রেশন প্রদানের সুপারিশ করেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রেরিত পত্রে কোর্সটির বিদ্যমান ‘কোর্স টাইটেল’ পরিবর্তন করে “ব্যাচেলর অব ডেন্টিস্ট্রি ” অথবা “বি.এসসি ইন ডেন্টিস্ট্রি” করার সুপারিশ করেন।
পরবর্তীতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক প্রেরিত সুপারিশ সমূহ বাংলাদেশ ডেন্টাল সোসাইটির চাপে অকারণে ও ব্যাখ্যাহীনভাবে প্রত্যাহার করে নিলে বি.এসসি-ডেন্টাল এসোসিয়েশন মহামান্য উচ্চ আদালতের দারস্থ হয়ে একটি রীট পিটিশন মামলা দায়ের করেন। উক্ত মামলার রায়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক সুপারিশদ্বয়কে প্রত্যাহার করাকে অবৈধ ঘোষণা করেন এবং প্রেরিত সুপারিশ দুটিকে বাস্তবায়নের জন্য রাষ্ট্রপক্ষ ও বিএমডিসিকে নির্দেশ প্রদান করেন। বিএমডিসি আইন ২০১০ এর ১৪ ধারা অনুযায়ী ডেন্টাল চিকিৎসা শিক্ষার স্বীকৃতি এবং ৪র্থ তফসিলে তফসিলভুক্ত করা হয়েছে। বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল আইন-২০১০ এর ধারা ১৪(২) অনুযায়ী বাংলাদেশে অবস্থিত বা বাংলাদেশের বাহিরে অবস্থিত ডেন্টাল চিকিৎসা শিক্ষা যোগ্যতার ডিগ্রী বা ডিপ্লোমা প্রদানকারী কোন প্রতিষ্ঠানের নাম তফসিলে অন্তর্ভূক্ত না থাকলে উক্ত প্রতিষ্ঠানকে বা উক্ত ডিগ্রী বা ডিপ্লোমাধারী ব্যক্তিকে এ আইনের অধীনে উক্ত যোগ্যতার স্বীকৃতি অর্জনের লক্ষ্যে কাউন্সিলের নিকট আবেদন করতে হবে।
স্বীকৃতি অর্জনের লক্ষ্যে কাউন্সিলের নিকট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ধারা ১৪ এর উপধারা ৪ অনুসারে কাউন্সিল আবেদনকারীদের কারিকুলাম পর্যালোচনা, নির্ধারিত মানদণ্ড যাচাই বাছাই করবে। বিএমডিসি আইনের এসকল নিয়মনীতি অনুসরণ করে বারংবার আবেদনও করা হয় । কিন্তুু বাস্তবিক পক্ষে দেখা যাচ্ছে, কাউন্সিলের নিকট বার বার আবেদন করলেও তারা বিষয়টি আমলে নেয়নি। এমনকি তাদের বিধি মোতাবেক মানদণ্ড যাচাই বাছাই এর কথা থাকলেও তারা কোন ভাবেই সেটির বাস্তবায়নে পদক্ষেপ গ্রহন করেনি।
সর্বশেষ তারা আবেদনকারীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে মূল বিষয়বস্তুকে পাশ কাটিয়ে অস্পষ্টভাবে ব্যখা প্রদান করে আবেদন প্রত্যাখ্যান করে। আবেদনে বিএসসি ডেন্টাল কোর্সটিকে তফসিল ভুক্ত করার জন্য প্রাতিষ্ঠানিক ও সাংগঠনিক পদক্ষেপ গ্রহন করলেও প্রতিত্তোরে তারা বিএসসি ডেন্টাল কোর্স টাইটেলে সংযুক্ত টেকনোলোজি শব্দটিকে অপব্যাখা করে ক্লিনিক্যাল কারিকুলামকে টেকনোলজিস্টের তকমা লাগিয়ে নিজেদের দায়িত্ব এড়িয়ে যায়।
যেখানে বিদ্যমান আইন আইনের ধারা ১৫ অনুযায়ী বাংলাদেশে অবস্থিত বা বাংলাদেশের বাহিরে অবস্থিত কোন মেডিকেল প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রদত্ত তিন বছরের কম নয় এমন সময়ব্যাপী মেডিকেল চিকিৎসা প্রশিক্ষন সমাপ্তির পর উক্ত মেডিকেল চিকিৎসা ডিপ্লোমাধারী এ আইনের অধীন কাউন্সিল কর্তৃক নিবন্ধিত হওয়ার যোগ্য হয়ে থাকে ।
এবং শুধুমাত্র এসএসসি পাসের পর বাংলাদেশ রাষ্ট্রীয় চিকিৎসা অনুষদ থেকে মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট বিষয়ে ৩/৪বছর কোর্স সম্পন্ন করে বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল থেকে প্রাইভেট প্র্যাক্টিস রেজিষ্ট্রেশন সনদ প্রাপ্তির মাধ্যমে বৈধভাবে মেডিসিন ও মিডওয়াইফারী প্র্যাকটিস করতে পারেন।
আরও আশ্চর্যের বিষয় হলো, বিএমডিসি আইন ১৯৮০ এর ধারা ১৫ উপধারা ৩ অনুযায়ী ডেন্টাল চিকিৎসা শিক্ষার কোন সনদ বা শিক্ষা যোগ্যতার ডিগ্রী না থাকলেও কোন একজন ডেন্টিস্টের অধীনে ৫ বছর কাজ করলেও তাদের ৫ম তফসিলে তফসিলভুক্ত করা হয়েছিল এবং তাদের লাইসেন্সও দেয়া হয়েছিল।
বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল সেখানে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ বছর মেয়াদী পেশাগত ডেন্টাল ডিগ্রী অর্জনের পরও বিএমডিসি কর্তৃপক্ষ ডিগ্রীটিকে তফসিলভূক্ত করে নিবন্ধন প্রদান না করে কেবল স্বার্থান্বেষী মহলের প্রভাবে বা প্ররোচনায় নানা অজুহাত ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এ ডিগ্রীধারী গ্রাজুয়েটগণকে প্রাপ্ত অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে বলে মনে করে বিএসসি ডেন্টাল ডিগ্রীধারীরা। এটি বিএমডিসির দ্বিচারিতা, অবজ্ঞা এবং গোষ্ঠীস্বার্থে তাদের পক্ষপাতী আচরণ বলে মনে করে বিএসসি ডেন্টাল অ্যাসোসিয়েশন।
এদিকে, বাংলাদেশে বিডিএস ডিগ্রীধারীদের সংগঠন “বাংলাদেশ ডেন্টাল সোসাইটি”র মহাসচিব এবং ঢাকা ডেন্টাল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডাঃ হুমায়ুন কবির বুলবুল বিএসসি ডেন্টাল ডিগ্রিধারী বিরুদ্ধে সবচেয়ে সরব ব্যক্তি। তিনি একেক সময় একেকভাবে মনগড়া তথ্য বিভিন্ন বক্তৃতা, বিবৃতি টকশোতে দিয়ে থাকেন। তিনি প্রায়শই বিএসসি ডেন্টাল ডিগ্রি সম্পন্নকারীদের কোয়াক বা মোটা দাগে কোয়াক বলে অভিহিত করেন। উনি প্রজাতন্ত্রের একজন কর্মচারী হয়ে দিনের পর দিন এ ধরনের বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে এবং তার সত্যতাও পাওয়া গেছে। ডাঃ হুমায়ুন কবির ঢাকা ডেন্টাল কলেজের অধ্যক্ষ হওয়ার পূর্বে তিনি সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডেন্টাল ইউনিটের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং সে সময় তিনি স্টেট কলেজ অব হেলথ সায়েন্স এর বিএসসি ডেন্টাল চূড়ান্ত পরীক্ষায় এক্সটার্নালের দায়িত্ব পালন করেছেন।
শুধু তাই নয়, তিনি তাঁর অধীনে ইনকোর্স ট্রেনিং সম্পন্নকারী শত শত বিএসসি ডেন্টাল ডিগ্রিপ্রাপ্তদের প্রশিক্ষণ ( ইন্টার্ণী) সমাপ্তির সনদ প্রদান করেছেন। অথচ তিনিই আজ মোটা দাগে কোয়াক বলছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা অনুষদ থেকে ডেন্টাল শিক্ষায় ৪ বছর মেয়াদি কোর্স সম্পন্নকারীরা কিভাবে কোয়াক হয়ে গেল তা ভাবার বিষয়। এ যেন সর্ষের মধ্যে ভূত।
অপরদিকে, বাংলাদেশ ডেন্টাল সোসাইটির সভাপতি, ঢাকা ডেন্টাল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডাঃ আবুল কাশেম তার কয়েকটি সাক্ষাৎকারে বলছেন বিডিএস কোর্সের সিলেবাস এবং বিএসসি ডেন্টাল এর সিলেবাস একই। এ সিলেবাসের কারনেই তাদের আটকানো যাচ্ছে না। তিনি তাঁর বক্তব্যে বিএসসি ডিগ্রিধারী স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এর মাধ্যমে প্র্যাকটিস রেজিষ্ট্রশন প্রদানের জন্য যে সুপারিশের কথা বলা হয়েছিল সেটিরও সত্যতা স্বীকার করেন।
এ বিষয়ে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এম এ আজিজ ভোরের পাতাকে বলেন, পৃথিবীর কোনো প্রান্তেই টেকনোলজি কোর্স পাস করা কারো প্যাকটিসের অনুমোদন নেই। আমাদের নার্সরাও তো চার বছরের কোর্স করেন, তারা তো চিকিৎসকের মতো ব্যবস্থাপনাপত্র দিতে পারেন না। তাই বিএসসি ইন হেলথ/মেডিকেল টেকনোলজী (ডেন্টাল) কোর্সের পাসকৃতদেরও সেই সুযোগ নেই।
একই বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। দীর্ঘদিন ধরে এটি নিয়ে একটু ঝামেলা রয়েছে স্বীকৃতির জন্য। তবে বিষয়টি যেহেতু আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে, তাই এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাই না। মহামান্য আদালত থেকে যে নির্দেশনা আসবে, সেটাই মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে পালন করা হবে।