প্রকাশ: শনিবার, ১৪ মে, ২০২২, ১২:৩০ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
বাংলাদেশের একমাত্র রেফারি হিসেবে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল পরিচালনা করেছিলেন তৈয়ব হাসান। ২০১৩ সালের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ভারত বনাম আফগানিস্তান ম্যাচে নিজের পরা সেই জার্সিটি নিলামে বিক্রি করেছিলেন ২০২০ সালে। করোনাকালে জার্সিটি বিক্রি হয় ৫ লাখ ৫৫ হাজার টাকায়। সেই অর্থ তিনি বিতরণ করেণ করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত খেলোয়াড়, সংগঠক, রেফারিসহ অনেকের মধ্যেই। খোদ ফিফা সভাপতি ইনফান্তিনো তাকে বিশেষ প্রশংসাপত্র পাঠিয়েছেন এ উদ্যোগের জন্য।
এবার জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কারের এক লাখ টাকাও তৈয়ব হাসান বিলিয়ে দিবেন সাতক্ষীরার আশাশুনি ও শ্যামনগরের উপকূলীয় এলাকায় অনূর্ধ্ব পাঁচ বছরের পুষ্টিহীন শিশুদের মাঝে।
১৯৭৬ সালে প্রবর্তিত জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার অতীতে কখনোই রেফারিদের দেয়া হয়নি। পুরস্কারটা সীমাবদ্ধ ছিল মূলত খেলোয়াড়, সংগঠক, কোচদের মধ্যে। কিন্তু এবার ২০১৩-২০২০ পর্যন্ত একসঙ্গে যে ৮৫ জনকে পুরস্কার দেয়া হলো, তাদের মধ্যে দুজন রেফারি। তৈয়ব হাসান ছাড়া অন্যজন হলেন বাংলাদেশের রেফারিং জগতের গুরু জেড আলম, যাকে দেশের রেফারিংয়ের অগ্রপথিক বলেন তৈয়ব। জেড আলমকে পুরস্কার দেয়া হয়েছে ২০১৩ সালের ফুটবল সংগঠক হিসেব।
তবে তৈয়ব পুরস্কার পেয়েছেন ২০১৮ সালের, তাকে বিবেচনা করা হয়েছে রেফারি হিসেবেই। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তৈয়ব হাসান সমাদৃত হয়েছিলেন দক্ষ হাতে খেলা চালিয়ে। বাংলাদেশের রেফারিদের মধ্যে তিনিই সবচেয়ে বেশি সময় (১০ বছর) এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন বা এএফসির এলিট প্যানেলে ছিলেন। ফিফা রেফারি ছিলেন সর্বোচ্চ ১৮ বছর। বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আন্তর্জাতিক ম্যাচ পরিচালনা করা রেফারিও তিনি। ম্যাচের সংখ্যা প্রায় এক শ। প্রথম দক্ষিণ এশিয়ান হিসেবে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে রেফারি ছিলেন তৈয়ব হাসান। একমাত্র বাংলাদেশি হিসেবে পেয়েছেন এএফসি ‘রেফারিজ মোমেন্টো অ্যাওয়ার্ড।’ এসবেরই স্বীকৃতি হিসেবে জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার এনে দিয়েছে তাকে।
এ নিয়ে তৈয়ব হাসান বলেন, এটা যে কারো জীবনের অনেক বড় স্বীকৃতি। স্বাভাবিকভাবেই এই স্বীকৃতি পেয়ে নিজেকে অনেক সম্মানিত বোধ করছি।’
পুরস্কারের অর্থ বিলিয়ে দেয়া নিয়ে সাবেক এই ফিফা রেফারি বলেন, এই এক লাখ টাকা কিন্তু আমি খরচ করব না। পুরো টাকাটা দিয়ে দেব সাতক্ষীরার সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের। বিশেষ করে জলবায়ুর প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার শিশুদের আমি এ সহায়তা দেব। আমার এই এক লাখ টাকায় হয়তো কিছুই হবে না। তবে একটা প্রতীকী উদ্যোগ তো হতে পারে। আমার প্রত্যাশা থাকবে আমার মতো অনেকেই এই কাজে এগিয়ে আসবে।’