চট্টগ্রামে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১১৫ জনের নামে মামলা করা হয়েছে।
সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলাটি করেন নুর মোহাম্মদ নামে এক ব্যবসায়ী।
সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক জহিরুল কবির চৌধুরী মামলাটি আমলে নিয়ে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে আদেশ দিয়েছেন।
মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী নওশাদ আলী এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, মামলা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে ও ১০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে এ মামলাটি করা হয়।
মামলার আসামিরা হলেন- সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সড়ক ও পরিবহন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি জুনাইদ আহমদ পলক, তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, সাবেক ডিএমপির ডিবি প্রধান হারুন অর রশিদ, ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার বিপ্লব কুমার, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সমাজকল্যাণমন্ত্রী দীপু মনি, সাবেক মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান, চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান রিয়াল অ্যাডমিরাল সোহায়েল,চট্টগ্রাম বন্দর কর্মচারী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নায়েবুল ইসলাম ফটিক ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক ফিরোজ আহমেদ জাবেদসহ আরো এক নেতা।
মামলার বাদী নুর মোহাম্মদ (২২) একজন ব্যবসায়ী। তিনি অনলাইন ও সফটওয়ারভিত্তিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দুরন্ত সাপ্লায়ার এবং দুরন্ত বাজার এর স্বত্বাধিকারী। সারা দেশে গত ১৮ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় বাদীর ব্যবসায় ক্ষতি হয়েছে ১০ কোটি টাকা। ইন্টারনেট বন্ধে জড়িতদের শাস্তি ও আসামিদের ব্যক্তিগত ও দলীয় সম্পত্তি থেকে ক্ষতি পূরণের টাকা চেয়ে এ মামলা করা হয়।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য বাদীর অনলাইন ভিত্তিক প্রায় ২০০ জন কর্মচারী ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। অনলাইনে পণ্য সাপ্লাইয়ের জন্য দুরন্ত সাপ্লায়ারের নিজস্ব মালিকানাধীন একাধিক পণ্য বহনকারী পরিবহন ও ভাড়া করা পরিবহন সাপ্লাইয়ের কাজে নিয়োজিত আছে। অনলাইনে বাদীর দৈনিক ব্যবসায়িক লেনদেন প্রায় ২০ লাখ টাকা। গত ১৮ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত পরিকল্পিতভাবে দেশে ইন্টারনেট ও ব্রডব্যান্ড সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর ফলে দেশের বাণিজ্য খাতে এক লাখ কোটি টাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং বাদীর ক্ষতি হয় ১০ কোটি টাকা। ক্ষতি হওয়া অর্থ আসামিদের ব্যক্তিগত ও দলীয় সম্পত্তি থেকে পূরণ করার কথাও এজাহারে উল্লেখ করেন বাদী।
উল্লেখ্য, ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন একাধিক সময়ে সরকার দলীয় প্রতিবাদ কর্মসূচিতে ছাত্রদের আন্দোলনে ভয়-ভীতি ও আন্দোলন কার্যক্রমে না যেতে প্রভাব বিস্তার করেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্মচারী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নায়েবুল ইসলাম ফটিক ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক ফিরোজ আহমেদ জাবেদসহ আরো অনেকে। গেল আগস্টের ৩ ও ৪ তারিখ বন্দর ভবন সংলগ্ন কাস্টমস মোড়ে নায়েবুল ইসলাম ফটিকের নেতৃত্বে লাঠিসোঠা নিয়ে অবস্থানসহ ছাত্রদের গাড়ি থেকে নামিয়ে নামিয়ে তাদেরকে মারধর সহ ভয়-ভীতি প্রদর্শন করা হয়।
এছাড়াও কাস্টম থেকে নয়া বাজার বিশ্বরোডসহ চট্টগ্রামের একাধিক জায়গায় উত্তপ্ত পরিবেশ সৃষ্টি করতে বন্দর কর্মচারী পরিষদ সিবিএ'র মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটির সাধারণ সম্পাদক নায়েবুল ইসলাম ফটিকের নেতৃত্বে কিশোর গ্যাংসহ আওয়ামী সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে অবস্থান করতে দেখা যায়। সেখানেও শিক্ষার্থীদের ওপর চড়াও হয়ে আশপাশের এলাকায় ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। তার সাথে সহযোগী হিসেবে ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের সক্রিয় কর্মী সিবিএ’র সমাজকল্যাণ সম্পাদক ফিরোজ আহমেদ জাবেদসহ তাদের একাধিক অনুসারীরা।এসব ঘটনার ভিডিও ও ছবি প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিত আছে।