বৃহস্পতিবার ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ৪ আশ্বিন ১৪৩১

শিরোনাম: ভারতের বিপক্ষে টস জিতে বোলিংয়ে বাংলাদেশ    নিউইয়র্কে হচ্ছে না ইউনূস-মোদির বৈঠক    জাতিসংঘের ই-গভর্নমেন্টে ১১ ধাপ উন্নতি বাংলাদেশের    সালমান ও আনিসুল হক ফের ৫ দিনের রিমান্ডে    নভেম্বর থেকে পলিথিন ব্যাগের বিরুদ্ধে অভিযান    ডেঙ্গুতে আরও ৬ মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৮৬৫    ঋণখেলাপি স্বামী-স্ত্রীকে দুবাই থেকে ফিরিয়ে আনার নির্দেশ   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে গেছে সরকার
জ. ই মামুন
প্রকাশ: শনিবার, ৩ আগস্ট, ২০২৪, ১০:৩১ পিএম | অনলাইন সংস্করণ

এখনো ওবায়দুল কাদের সাহেবের মতো অনেকে মনে করেন যে এই আন্দোলন বিএনপি জামাতের আন্দোলন, স্বাধীনতা বিরোধীদের আন্দোলন। 

বিএনপির যদি এমন আন্দোলন করার ক্ষমতা থাকতো, তাহলে বেগম খালেদা জিয়াকে যেদিন সরকার ক্যান্টনমেন্টের বাসা থেকে বের করে দিয়েছিলো সেদিনই তারা সরকারের পতন ঘটিয়ে দিতো। কিন্তু বেগম জিযাকে কারাগারে নেবার পরেও বিএনপি কিছু করতে পারেনি। তিন তিনটি ভোটার বিহীন নির্বাচনের পরেও সরকারের কিছুই করতে পারেনি বিএনপি। অর্থাৎ এ কথা নিপাতনে সিদ্ধ যে বিএনপির আন্দোলনে গণমানুষের সমর্থন নেই, তাদের ওপরে মানুষের আস্থা নেই। 

আর স্বাধীনতা বিরোধী, একাত্তরের ঘাতক জামাত শিবির গোপনে চোরাগুপ্তা হামলা করে কিছু সন্ত্রাস করার ক্ষমতা রাখলেও গণআন্দোলন করে সরকার হটানোর ক্ষমতা তাদের নেই,এই বাংলায় কোনোদিন তাদের সেই ক্ষমতা হবেও না। তাদের সেই ক্ষমতা থাকলে যুদ্ধাপরাধের মামলায তাদের শীর্ষ নেতাদের ফাঁসি হতো না। তার মানে হচ্ছে এবারের কোটা বিরোধী বা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনটি কোনোক্রমেই বিএনপি জামাতের আন্দোলন নয়। তারা এই আন্দেলনের সুফল ঘরে তোলার দুরভিসন্ধি থেকে এতে সমর্থন দিয়েছে। তারা মনে মনে ভাবছে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হলেই তারা বাংলার মসনদে আসীন হবে। কিন্তু শিক্ষার্থীরা পরিস্কার বলে দিয়েছে যে খালেদা জিয়া বা বিএনপি জামাত তাদের কাছে শেখ হাসিনার বিকল্প নয়। ইতিমধ্যে তারা সবার কাছে গ্রহনযোগ্য জাতীয় সরকার গঠনের আহ্বান জানিয়েছে।

কিন্তু আন্দোলনটি এক দফার পরিণতিতে এসে ঠেকলো কেন- সরকার বা আওয়ামী লীগ কি সেই আত্মজিজ্ঞাসা করবে নাকি এখনো বিএনপি জামাত নামের তসবি জপতে থাকবে? আমি তো মনে কি সরকারের অদূরদর্শিতা, অবিমৃশ্যকারিতা, দম্ভ- একগুয়েমি এবং অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস আজকে তাদেরকে এই পরিণতির দিকে নিয়ে এসেছে। যখন যে কথা বলার দরকার ছিলো সেই কথা না বলে, যখন যে কাজ করার দরকার ছিলো সেই কাজ না করে একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে গেছে সরকার। 

১৬ জুলাই রংপুরে পুলিশের গুলিতে আবু সাঈদ নিহত হবার পরপরই যদি খুনি পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হতো, ১৭ জুলাই জাতির উদ্দেশ্যে দেযা ভাষণে প্রধানমন্ত্রী যদি ৭ আগস্টে হাইকোর্টের শুনানির কথা না বলে দ্রুততম সময়ে কোটা মামলার শুনানি করার ঘোষণা দিতেন, যদি তখনই ১৬ তারিখের ৬ খুনের বিচারের ঘোষণা দিতেন, যদি তখন ছাত্রদেরকে আলোচনার জন্য ডাকতেন তাহলে ১৮-১৯ তারিখের তান্ডব, গণহত্যা এবং সম্পদহানির ঘটনা ঘটতো না।

এতকিছুর পরেও সবার আগে প্রধানমন্ত্রী ভাঙা মেট্রোরেল স্টেশনে গিয়ে কান্নাকাটি না করে যদি খুন হওযা কোনো শিক্ষার্থীর বাড়িতে যেতেন, তার মাকে জড়িয়ে ধরে সান্ত্বনা দিনে, হাসপাতালে গিয়ে গুলিবিদ্ধ ছাত্রদের মাথায় হাত রাখতেন- আন্দোলনের এই পরিণতি হতো না। কাদের সাহেব যদি ছাত্রলীগকে আন্দোলনকারীদের মুখোমুখি দাঁড না করাতেন, যদি তাদেরকে রাস্তায় না নামাতেন, যদি তারা পুলিশের সঙ্গে মিলে গণহত্যা ও নির্যাতনে যোগ না দিতো তাহলেও পরিস্থিতি এমন হতো না। 

আর হারুণ সাহেবের কথাও বলা দরকার, যার নির্দেশেই হোক, তিনি যদি আন্দোলনের সমন্বয়কারী ৬ নেতাকে ধরে এনে চাওমিন খাওযানোর নাটক করে চাপের মুখে তাদের কাছ থেকে মিথ্যা বিবৃতি আদায় না করতেন তাহলেও মানুষ এত ক্ষেপতো না।



এই প্রজন্মের ছেলে মেয়েদের আপনি ফার্মের মুরগী বলেন আর মোবাইল টেপা জেনারেশনই বলেন, তারা যে সবকিছু আপনার আমার চেয়ে ভালো বোঝে এটা আবারও প্রমাণিত হলো। কিন্তু দুর্ভাগ্য, আমরা আগের প্রজন্মের মানুষেরা তাদেরকে বুঝতে পারলাম না বরং স্বাধীনতা বিরোধী জামাত শিবির আর রাজাকারের বাচ্চা বলে বলে তাদরকে রোজ অসম্মান করে যাচ্ছি। 

অথচ তথাকথিত ভন্ড রাজনীতিবিদ, ব্যাংকের বা শেয়ার বাজারের টাকা মেরে দেয়া গাঁড়ল ব্যবসায়ী বা বিটিভির ভাঙ্গা রুমের সামনে দাঁড়িয়ে নাকি কান্না করা কপট অভিনেতাদের চেয়ে এই বাচ্চাদের দেশপ্রেম অনেক বেশি। তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং ইতিহাস নিয়ে ব্যবসা করে না, ধান্ধাবাজি করে না। বঙ্গবন্ধু আর স্বাধীনতার চেতনা ওদের বরং আমাদের চেয়ে বেশি, তাই ওরা বন্দুকের সামনে বুক চিতিয়ে দাঁড়াতে পারে, বঙ্গবন্ধুর বাণীকে আত্মস্থ করে বলতে পারে, "আমরা যখন মরতে শিখেছি, তখন কেউ আমাদের দমাতে পারবে না”


(লেখাটি এটিএন বাংলা'র প্রধান নির্বাহী সম্পাদক জ. ই মামুন এর ফেসবুক প্রোফাইল থেকে নেওয়া)

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/ADDDDDD.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]