
নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মোহাম্মদ চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন দর্শন ও স্বপ্নের এক মাইলফলক পায়রা সমুদ্র বন্দর। এটি দেশের তৃতীয় অর্থনৈতিক গেইটওয়ে। ইতিমধ্যে এই বন্দর প্রাকৃতিক নাব্যতা ও চ্যানেল সুবিধা কাজে লাগিয়ে ২০১৩ সাল থেকে অদ্যবধি ২৫৬ টি বাণিজ্যিক জাহাজ ও ৬৫৫ টি দেশীয় লাইটারের জাহাজের পণ্য নিরাপদে খালাসের কাজ করে ৬১৮ কোটি টাকা রাজস্ব আয় করেছে ।'
সোমবার বেলা ১১টায় পায়রা বন্দরের সভা কক্ষে আগামী ২৭ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক পায়রা বন্দরের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতিমূলক সভা শেষে গণমাধ্যম কর্মীদের তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় নৌ প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, 'মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি পায়রা বন্দরের ক্যাপিটাল ড্রেজিং কাজ ও আটটি জাহাজের উদ্বোধনসহ বন্দরের ফার্স্ট টার্মিনাল, ছয় লেন সংযোগ সড়ক এবং ফোরলেন সেতু নির্মাণ কাজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করবেন। বন্দরের এসব উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন হলে দক্ষিণা লের মানুষের জীবন মান উন্নয়ন ও অর্থনীতির চাকা সচল হবে।'
প্রস্তুতিমূলক এ সভায় অন্যানের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য ও পটুয়াখালী-৪ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ মো. মুহিব্বুর রহমান, বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম সোহায়েল, বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রকৌশল ও উন্নয়ন সদস্য কমডোর রাজীব ত্রিপুরা, হারবার ও মেরিন সদস্য কমোডর মামুনুর রশিদ, পরিচালক (প্রশাসন) কাজী ফারুক আহমেদ প্রমূখ।
পায়রা বন্দর সূত্র থেকে জানা যায়, ফাস্ট টার্মিনালের কাজ শেষ হলে বন্দরে ৪০,০০০ টন ৩,০০০ কন্টেইনারবাহী জাহাজ ভিড়ানোর সক্ষমতা তৈরী হবে। ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের জন্য ব্যয় হবে ৪,৯৫০ কোটি টাকা। বিশ্বখ্যাত বেলজিয়ামভিত্তিক ড্রেজিং কোম্পানি জান ডি নুল ড্রেজিং কাজটি করবে।
পায়রা বন্দরের জন্য নির্মিত আটটি জাহাজ দ্বারা পায়রা বন্দর দেশী-বিদেশী বাণিজ্যিক জাহাজের আগমন-বহির্গমন ও চ্যানেলের সংরক্ষণ কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন করতে পারবে। আটটি জাহাজের মধ্যে দু’টি পাইলট ভেসেল, দুটি হেভি ডিউটি স্পীডবোট, একটি বয়া লেইং ভেসেল, একটি সার্ভে বোট এবং দু’টি টাগবোট। পায়রা বন্দরের প্রথম টার্মিনাল, ৬-লেন সংযোগ সড়ক এবং সেতু নির্মাণ সম্পন্ন হলে টার্মিনালটির তিনটি জেটিতে একত্রে তিনটি বিদেশী কন্টেইনার বা বাল্ক কার্গোবাহী জাহাজ এসে ভিড়তে সক্ষম হবে। বন্দরের প্রথম টার্মিনাল নির্মাণে ব্যয় হবে ৪৫১৬.৭৫ কোটি টাকা। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ করে অপারেশনাল কাজ শুরু করা হবে। ৬.৩৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ৬-লেনের সংযোগ সড়কটি ডিপিপি এর সংস্থান অনুযায়ী ডিপোজিটরি ওয়ার্ক এর আওতায় সড়ক ও জনপথ বিভাগ কর্তৃক নির্মাণ করা হচ্ছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগ কর্তৃক স্থানীয় দরপত্র আহবানের মাধ্যমে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান স্পেক্ট্রা ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেডকে নিয়োগ করা হয়েছে এবং কাজের চুক্তি মূল্য ৬৫৫.৫০ কোটি টাকা। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে কাজটি শেষ হবে। পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ এর মালামাল পরিবহনের জন্য আন্দারমানিক নদীর উপর ১,১৮০ মিটার দীর্ঘ ব্রীজ নির্মাণ করা হবে। কাজের প্রাক্কলিত ব্যয় ৭৪০ কোটি টাকা। কাজটি নির্মাণ করতে আনুমানিক ৩০ মাস সময় লাগবে।
উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৩ সালের ১৯ নভেম্বর পায়রা সমুদ্র বন্দর উদ্বোধন করেন।