প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৮:২৬ পিএম

নাটোরের গুরুদাসপুরে শারদীয় দূর্গোৎসবকে সামনে রেখে প্রতিবছরের ন্যায় এবারেও প্রতিমা তৈরীতে ব্যস্ত সময় পার করছেন পৌরসদরের কর্মকার পাড়ার জয়দেব বাবু কর্মকারের পরিবার।
খোঁজ নিয়ে জানাযায়, গুরুদাসপুর উপজেলার সনাতন ধর্মীয় পাল বংশধরের কারিগররা প্রতিমা তৈরীর কাজে পারদর্শী হওয়ার কথা থাকলেও নাজিরপুরের দুধগাড়ি ও খুবজীপুরের তেলকুপি এলাকায় কিছু পাল বংশীয় সনাতন ধর্মী কারিগর শুধু মৃত শিল্প তৈরীতে পারদর্শী। তাই বাধ্য হয়ে প্রায় শতাধিক বছর ধরে প্রতিমা তৈরীর কাজে পারদর্শী হয়ে উঠেছেন পৌরসদরের কর্মকার পাড়ার সংগীত শিক্ষক জয়দেব বাবু কর্মকারের পরিবার।
শতবর্ষী জয়দেব বাবু জানান, তিন পুরুষ ধরে শিল্পির আদলে প্রতিমা তৈরীর কাজ করছেন তারা। বর্তমানে জয়দেব বাবু ও স্ত্রী কমলা রানী বার্ধক্যের ভাড়ে ন্যুয়ে পড়ায় তার বড় ছেলে জীবন কৃষ্ণ কর্মকার (৫৫) ও পুত্রবধু বুলবুলি রানী কর্মকার (৪৮) প্রতিমা তৈরীর কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। পাঁচ সদস্যের সংসার তাদের। এরমধ্যে জয়দেব বাবুর নাতি জীবন কৃষ্ণের একামাত্র ছেলে জয়ন্ত কর্মকার (২৩) প্রতিমা তৈরীতে দক্ষ হলেও সংসারের হাল ধরতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে বর্তমানে ঢাকায় সিআইডিতে কর্মরত রয়েছেন।
প্রতিমা শিল্পি জীবন কৃষ্ণ ও বুলবুলি রানী জানান, তারা সারা বছর ধরে দূর্গা প্রতিমা ছাড়াও বিশ্ব কর্মা, লক্ষী, স্বরস্বতী, মনোষা দেবী, লোকনাথ ও কালী প্রতিমা, গোপাল, রাধা গোবিন্দ ও পঞ্জচত্ত্ব প্রতিমা তৈরী করে থাকেন। আর এই প্রতিমা তৈরীর উপার্জন থেকেই চলে তাদের জীবিকা।
জয়বেদ বাবু বলেন, গুরুদাসপুর উপজেলায় প্রতিমা তৈরীর কোন কারিগর না থাকায় তাদেরকেই কর্মকারবৃত্তি ছেড়ে প্রতিমা তৈরী কারিগরের কাজ চালিয়ে যেতে হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, বাইরের দূর্গা প্রতিমার মূল্য বেশি হলেও আমাদের প্রতি দূর্গা প্রতিমা ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা এবং কালি, লক্ষী ও স্বরস্বতী মডেলের ছোট প্রতিমাগুলো দেড় থেকে ২ হাজার টাকায় বিক্রি হয়ে থাকে। প্রতিমা তৈরীতে বাঁশ, দড়ি, খড়, মাটি, পাট, শুতলী, রং, তুলি ও ধানের তুষ উপকরণ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। যার মূল্য বর্তমানে অনেক বেশি। তাই লাভ লোকসানের চিন্তা না করে প্রতিমা তৈরী করেই আমাদের জীবন জীবিকা পরিচালনা করে থাকি।