এরপর ভাজা মাছকে চানাচুরের সাথে মেশানো হয়। চানাচুরের মধ্যে এমনিতেই অনেক কিছুর মিশ্রণ থাকে। যেমন বেসনের তৈরি বুন্দিয়া, লম্বা ঝুরি, বাদাম, বুট, মটরশুঁটি, বিভিন্ন রকম ডাল ভাজা ইত্যাদি।
ডা. হায়দার বলেন, "চানাচুরের পুষ্টিগুণ এমনিতেই ভাল। এতে কাচকি মাছ মেশানোর ফলে এর পুষ্টিগুণ আরও বাড়ল। মুচমুচে মাছ যুক্ত হওয়ায় খাবারটির স্বাদেও মজা হল।"
তিনি বলেন, মাছ মেশানোর পর ল্যাবে পরীক্ষা করে দেখা গেছে এর পুষ্টিগুণ অনেক বেড়েছে।
বাদাম এবং তিল কটকটি
যে পিনাট বার ও সেসেমি বার মৎস্য প্রযুক্তি বিভাগের এই গবেষকরা তৈরি করেছেন সেগুলো দেখতে ছোটবেলার সেই বাদাম এবং তিল কটকটির মতোই।
তবে এক্ষেত্রে পার্থক্য হচ্ছে এর সাথে মেশানো হয়েছে ভাজা কাচকি মাছের গুড়ো।
যা চোখে দেখা যাবে না কিন্তু খাওয়ার সময় স্বাদ পাওয়া যাবে।
এগুলো বানাতে ব্যবহার করা হয়েছে বাদাম, মাছ, তিল এবং গুড়। মাছ, তিল ও বাদাম ভেজে নেয়ার পর এর সাথে আখের গুড় মেশানো হয়।
মিশ্রণটি ঘন হয়ে এলে রুটি বানানোর বেলুন দিয়ে সমান করার পর কিছুটা গরম থাকতেই লম্বা করে কেটে ফেলা হয়েছে।
কিছুক্ষণ রেখে দিলে এগুলো ধীরে ধীরে শক্ত হয়ে উঠবে।
কেন কাচকি মাছ?
অধ্যাপক হায়দার বলেন, "আমি জাপানে পিএইচডি করেছি। সেখানে দেখেছি ছোট ছোট যেসব মাছ আছে, সেগুলোকে তারা অনেকটা চানাচুরের মতোই স্ন্যাক হিসেবে খায়। সেগুলো চিপসের মতো প্যাকেট করে দোকানে বিক্রি হয়। বাংলাদেশেও মলা, ঢ্যালা, কাচকি এরকম অনেক ছোট মাছ রয়েছে।"
তিনি বলেন, কাচকি মাছ খুব ছোট হলেও এর পুষ্টি কিন্তু অনেক। এটি প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, মিনারেল, আয়রনের খুব ভাল উৎস।
এই মাছ কাটার ঝামেলা নেই। নুড়ি, পাথর, ছোট শামুক বেছে নিলেই হল।
"আমাদের দেশের মানুষ বিশেষ করে ছোট শিশুরা ছোট মাছ খেতে পছন্দ করে না। শিশুদের কিন্তু এই ছোট মাছ খাওয়ানো খুব প্রয়োজন। মাছে যে আমিষ পাওয়া যায় সেটি সবচেয়ে ভাল। কাচকি মাছ আমরা মাথা, চোখ থেকে শুরু করে পুরোটা চিবিয়ে খেয়ে ফেলি। এটাকে মেশানোর ফলে প্রচলিত একটি খাবারের পুষ্টিগুণ আরও অনেক বেড়ে গেল।"
এখন এগুলো বাজারজাত করার জন্য খাদ্য প্রস্তুতকারী কোম্পানির কাছে নমুনা পাঠানোর চিন্তা করা হচ্ছে। সূত্র: বিবিসি বাংলা