
উপকূলীয় জনপদ বরগুনার বেতাগীতে লঘু ও জেয়ারের চাপ এবং অতি বর্ষণে উপজেলার কেওড়াবুনিয়া এলাকায় ভেঙ্গে যাওয়া বেড়িবাঁধটি ৫ দিন পর মেরামতের উদ্যোগ নিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।
এ এলাকায় পুনরায় শুক্রবার (১৯ আগষ্ট) সকাল থেকে বিরূপ আবহাওয়া বিরাজ করায় পাউবো কর্তৃপক্ষ ভাঙা বাঁধে নতুনভাবে ভাঙন ঠেকাতে তড়িঘড়ি সংস্কার শুরু করেছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসী।
এতে লোকালয়ে বিষখালী নদীর তীব্র জোয়ারের পানি ঢোকা বন্ধ হলেও গ্রামবাসীর দুর্ভোগ এখনো কমেনি। বসতবাড়ির উঠান, আঙ্গিনা ও খাল-বিলে এখনও জোয়ারের পানি জমে আছে।
জোয়ারের পানিতে ডুবে যাওয়া শাক সবজির ক্ষেত, ফসল ও গাছ-গাছালি মরে পঁচা দূর্গন্ধযুক্ত নোংড়া পানিতে চর্মবাহিত রোগসহ ডায়রিয়া, ম্যালেরিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে।
জানা যায়, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে অতি বর্ষণের ফলে বিষখালী নদীতে জোয়ারের পানি বেড়ে গেলে গত রোববার (১৪ আগস্ট) রাতে উপজেলার সদর ইউনিয়নের কেওড়াবুনিয়া এলাকায় একটি পয়েন্টে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বেড়িবাঁধটি ভেঙে যায়। এতে কেওড়াবুনিয়াসহ পার্শ্ববর্তী গাবুয়া ও ছোট মোকামিয়া গ্রাম প্লাবিত হয়। বাঁধ ভেঙ্গে নদীর জোয়ারের পানি ধানক্ষেতে প্রবেশ করে আমনের বীজতলার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ভেসে গেছে মাছের ঘের।
শনিবার (২০ আগষ্ট) দুপুরে সরেজমিনে ভাঙ্গা বাঁধ এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ৫ জন শ্রমিক মাটি কেটে বাঁধ ভরাট করছে। তবে বাঁধের ভাঙ্গা অংশে বড় গাছের গুড়ি কিংবা পাইল দেওয়া হয়নি। রাস্তার উপরে মাটি ভর্তি ব্যাগ রাখা হলেও তার ব্যবহার দেখা যায়নি। কাজের ধীরগতির কারণে বাঁধের ভাঙ্গা অংশে পুরোপুরি মাটিভরাট করতে আরও একদিন লাগবে। এর ভিতরে নতুনভাবে জোয়ারের পানির চাপ বাড়লে মাটি সরে দিয়ে ভাঙ্গা অংশ দিয়ে লোকালয়ে আবারো পানি প্রবেশের সম্ভাবনা রয়েছে এমনই আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
কেওড়াবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা মো. রাজিব খান বলেন, জোয়ারের পানির চাপে গত রোববার বেড়িবাঁধটি ভেঙ্গে যায়। ৫ দিনেও ভাঙা বেড়িবাঁধটি মেরামতের কোন উদ্যোগ দেখা যায়নি। তবে গত রাত থেকে আবহাওয়া প্রতিকূলে থাকায় শুক্রবার সকালে পাউবোর লোকজন এসে তড়িঘড়ি করে বাঁধ মেরামত করে শুরু করে। বাঁধটি ভালোভাবে মেরামত করা না হলে পুনরায় জোয়ারের পানিতে ভেঙ্গে যাবে।
কৃষক মো: সানু মিয়া অভিযোগ করেন, তাৎক্ষণিকভাবে বাঁধটি মেরামত করা গেলে কৃষি জমিতে নতুনভাবে জোয়ারের পানি প্রবেশ করতো না। ৫ দিন আগে বেড়িবাঁধটি ভেঙ্গে যায়। বাঁধের একপাশ মেরামত হলেও ঘর-বাড়ীর উঠানে এখনো নদীর লোনা পানি জমে আছে। বিষখালী নদীর জোয়ারের পানি কৃষি জমিতে ঢুকে ধানেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়।
বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশল মো: নূরুল ইসলাম জানান, ভারী বৃষ্টি, নিম্নচাপের প্রভাবে বেতাগীর সদর ইউনিয়নে বাঁধ ভেঙ্গে গিয়েছিলো। এখন ঐ ভাঙা বাঁধ মেরামতের কাজু করেছেন।