প্রকাশ: সোমবার, ৪ জুলাই, ২০২২, ৯:০৪ পিএম

"স্যার প্লিজ প্রয়োজনে আমার হাতে হ্যান্ডকাফ পড়িয়ে এখান থেকে নিয়ে যান,লিডার আমাকে আপনাদের গাড়িতে করে কক্সবাজার পর্যন্ত নিয়ে যান, না হয় সন্ত্রসীরা আমাকে মেরে ফেলবে! পুলিশ বলে তুমি তো আসামি না, তুমাকে কেন পুলিশের গাড়িতে করে নিয়ে যাবো?? প্রায় দু'ঘন্টা নিহত ফায়সাল বাঁচার আকুতি জানিয়েছিলো তাদের। কিন্তু তাদের দায়সারাভাব ও অসহযোগীতা কারনে সন্ত্রাসীরা নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করলো ফয়সালকে। এসময় আরও দু'জন গুরুতর আহত হয়েছে। ৩ জুলাই রোববার সন্ধ্যার দিকে খুরুশকুলের ডেইলপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। ফয়সাল উদ্দিন ওই ইউনিয়নের কাউয়ারপাড়া এলাকা মৃত লাল মোহাম্মদের ছেলে।
নিহতের স্বজনরা অভিযোগ করেন, "রোববার বিকেলে খুরুশকুল ইউনিয়নের ১ ও ২ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সম্মেলন ছিলো। সম্মেলনের সময় ফায়সাল মঞ্চে উপস্থিত আওয়ামীলীগ নেতাদের তার প্রাণ নাশের আশঙ্কার কথা বার বার জানান। পরে সম্মেলন চলাকালে দূর্বৃত্তরা কয়েক বার ফায়সালকে হুমকি দিয়ে চলে যায়। ওই সময় ফায়সাল আওয়ামী লীগ নেতাদের বলেন, লিডার এখান থেকে আপনাদের গাড়িতে আমাকে একটু নিয়ে যান। একদল সন্ত্রাসী আমাকে মারার জন্য উৎপেতে আছে। কিন্তু নেতারা তাকে গাড়িতে না তুলে পুলিশকে খবর দেন। পুলিশের একটি টহল টীম এসে একটি সিএনজিতে করে ফায়সালকে নিয়ে পুলিশ নিরাপদ স্থানে রওনা দেয়। সিএনজির পিছনে ছিলো টহল টিম। ওই সময় দূর্বৃত্তরা এসে পুলিশের সামনেই ফয়সালের হামলা শুরু করে। তার শরীর দাসহ নানা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে শরীরে কোপায়। পরে হাসপাতালে আনা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে।"
এ ঘটনার প্রতিবাদে ছাত্র লীগ নেতাকর্মীরা রাতে তাৎক্ষণিক সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল বের করে। রাস্তায় পুলিশের গাড়ি আটকিয়ে দেয় এবং ঘটনায় দায়িত্বহীন পুলিশ সদস্যদের বিক্ষুব্ধরা হসপিটালে অবরুদ্ধ করে রাখে।
এদিকে বিভিন্ন সুত্রে জানাগেছে, ফায়সাল কে নির্মমভাবে হত্যা করার নেপথ্যে রয়েছে নারীঘটিত ইস্যু।
এ বিষয়ট নিশ্চিত করে কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি মুনীর উল গীয়াস বলেছেন-‘ পুলিশের উপস্থিতিতে হত্যাকাণ্ড ঘটেছে কিনা জানিনা। তবে পুলিশ যথাসাধ্য চেষ্টা করেছে ছাত্রলীগ নেতাকে বাঁচাতে। এমনকি পুলিশ ১৬ রাউন্ড রাবার বুলেট ছুঁড়েও হত্যাকারীদের নিবৃত্ত করতে পারেনি। এছাড়া এ ঘটনায় রাতে পুলিশ ৬জনকে আটক করছে এবং অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতার করতে পুলিশের কঠোর তৎপরতা চলছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মর্গে রাখা হয়েছে।
এদিকে চার পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহারসহ ফয়সালের খুনীদের গ্রেফতারের ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক মারুফ আদনান।