
দশম, একাদশ ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করা সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এবং নির্বাচন কমিশনারদের (ইসি) বিরুদ্ধে অনিয়ম ও পক্ষপাতমূলক আচরণের অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে বিএনপি। ওই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মোট ১৯ জনের নাম রয়েছে।
রবিবার (২২ জুন) সকালে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন খানের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় এই মামলা করে।
বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এবং মামলা, গুম, খুন ও তথ্য সংরক্ষণ সমন্বয়ক সালাহ উদ্দিন খান এ মামলার বাদী, যিনি একজন সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা।
এর আগে, আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দিনের কাছে অভিযোগপত্রের একটি অনুলিপি জমা দেন তারা। এছাড়া, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সই করা একটি চিঠিও সে সময় হস্তান্তর করা হয়।
মামলায় মোট ১৯ জনকে আসামি করা হয়েছে, যাদের মধ্যে রয়েছেন- সাবেক সিইসি কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ, কে এম নূরুল হুদা এবং কাজী হাবিবুল আউয়ালসহ আরও কয়েকজন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি।
২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনগুলো ত্রুটিপূর্ণভাবে ও দলীয় পক্ষপাতমূলক আচরণের মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। নির্বাচনগুলোতে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও সেনা মোতায়েনের আহ্বান বারবার উপেক্ষিত হয়েছে বলে দাবি করেছেন দলটির নেতারা।
আজ সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে সালাহউদ্দিন খান বলেন, “ওই নির্বাচনগুলোর সময় দেশে ও আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও তৎকালীন সিইসিরা কোনো সংশোধনী ব্যবস্থা নেননি। আমরা আশা করি বর্তমান নির্বাচন কমিশন বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।”
২০১৪ সালের ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি ও অন্যান্য বিরোধী দলগুলো ভোট বর্জন করায় আওয়ামী লীগের ১৫৩ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। ওই নির্বাচন পরিচালনা করেন তৎকালীন সিইসি কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ।
এরপর ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনটি হয় তৎকালীন সিইসি কে এম নূরুল হুদার অধীনে। সে সময় ভোটের আগের রাতেই ব্যালট বাক্স ভর্তি করে রাখা হয়েছিল বলে অভিযোগ করে বিএনপি।
সর্বশেষ গত বছরের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালের অধীনে। সবশেষ এই নির্বাচনকে ‘ডামি নির্বাচন’ হিসেবে আখ্যায়িত করে বিএনপি। সেবারও নির্বাচনেও অংশ নেয়নি দলটি।
এদিকে চলতি মাসের শুরুতেই ওই তিনটি নির্বাচনের সঙ্গে জড়িতদের ভূমিকা তদন্ত করতে একটি কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুস।