
আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমানকে কুষ্টিয়ার আদালত চত্বরে হত্যাচেষ্টা মামলার এজাহার নামীয় আসামি জীবন মাহমুদ ডাবলুকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তিনি ওই মামলার এজাহারভুক্ত ২৭ নম্বর আসামি।
শনিবার (৮ মার্চ) রাত ৯টার দিকে কুষ্টিয়া শহরের পূর্ব মজমপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
ডাবলু মোল্লা ওরফে জীবন মাহমুদ ডাবলু কুষ্টিয়া শহরের কোটপাড়া এলাকার কাওসার মোল্লার ছেলে।
এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ওই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই সাইমুম হাসান।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ২২ জুলাই আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও কুমারখালী উপজেলার বানিয়াপাড়া গ্রামের মৃত জামিল হোসেন বাচ্চুর ছেলে ইয়াসির আরাফাত তুষারের দায়ের করা একটি মানহানি মামলার বিবাদী হিসেবে কুষ্টিয়ার আদালতে হাজিরা দিতে আসেন।
এ সময় এজাহার নামীয়দের নির্দেশে বাদীকে দিনভর আদালত ভবনে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। পরে বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে আদালত চত্বরেই তার (আমার দেশ সম্পাদক) ওপর সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা হামলা করে এবং ধারালো অস্ত্রের আঘাতে রক্তাক্ত জখম করে গুরুতর আহত করে।
এ ঘটনার ছয় বছর পর (ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর) গত বছর ১০ অক্টোবর মজলুম সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান বাদী হয়ে ভারতে পলাতক প্রধানমন্ত্রী ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, আওয়ামী লীগ নেতা মাহবুবুল আলম হানিফ, ফাসিস্টের সহযোগী সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, তৎকালীন পুলিশের মহাপরিদর্শক জাবেদ পাটোয়ারী, কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার মেহেদী হাসান ও কুষ্টিয়া মডেল থানার (ওসি) নাসির উদ্দিনসহ ৪৭ জনের নামোল্লেখ এবং অজ্ঞাত আরও ২০-৩০ জনের বিরুদ্ধে কুষ্টিয়া মডেল থানায় একটি হত্যা চেষ্টার অভিযোগ দেন।
এজাহারে আরো বলা হয়েছে, কুষ্টিয়া আদালতের দায়িত্বরত কোর্ট ইন্সপেক্টর মনিরুজ্জামান বাদীকে পুলিশি প্রটেকশন দেওয়ার আশ্বাস দেন এবং যশোর বিমান-বন্দরে পৌছাইয়া দেওয়ার জন্য একটি প্রাইভেট কার ভাড়া করার কথা জানান।
তার আশ্বাসের প্রেক্ষিতে বাদী (আমার দেশ সম্পাদক) আদালত এজলাস কক্ষ হতে বের হয়ে, তার দুই সফর সঙ্গীসহ একটি সাদা রঙের প্রাইভেট কারে বসেন। গাড়ীতে বসার ২/১ মিনিটের মধ্যেই ১১ হইতে ৪৭নং আসামিগণসহ আরও ১৫/২০ জন অজ্ঞাতনামা আসামি মারাত্মক অস্ত্র, রড, লাঠিসোঁটা ও ইট-পাথর দিয়া উক্ত গাড়ির সকল কাঁচ ভেঙে ফেলে এবং লাঠি ও পাথর দিয়া আমারদেশ সম্পদককে উপর্যুপরি আঘাত করে। রক্তাক্ত জখম করে। হত্যাচেষ্টার অভিযোগে দেয়া এজাহারটি কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়। শুরুতে মামলাটির তদন্তভার দেয়া হয় কুষ্টিয়া মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবু তাহেরকে। পরে কুষ্টিয়া মডেল থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক সাইমুম হাসানকে।
জীবন মাহমুদ ডাবলু কুষ্টিয়া শহরে চিটার ডাবলু নামে পরিচিত। শহরের আবাসিক এলাকায় ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে এবং আবাসিক হোটেলে নারী ব্যবসা থেকে শুরু করে নানারকম অপকর্ম তার নিত্যদিনের সঙ্গী। সে এর আগে অস্ত্রসহ গ্রেফতারও হয়েছিল। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ক্লিনিক থেকে মাসোহারা, বিভিন্ন অফিসে চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মাসোহারা নেওয়ার ভুরি ভুরি অভিযোগ রয়েছে।