মো. সাজেদুল হক সাজু, চাঁপাইনবাবগঞ্জ

চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলায় চলতি বছর মিষ্টি কুমড়ার চাষ করে লোকসানের মুখে পরেছে কৃষকরা। তাদের দাবি উৎপাদিত মিষ্টি কুমড়া কিনতে বাহির থেকে পাইকার না আসায়, কম দামে লোকাল মার্কেটে বিক্রি করতে হচ্ছে। এতে করে তাদের লস গুনতে হচ্ছে।
গত বছর মিষ্টি কুমড়া চাষ করে কৃষকেরা আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ায় চলতি বছর ভোলাহাট উপজেলায় মিষ্টি কুমড়ার আবাদ বেশি হয়েছে।
ভোলাহাট কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে চলতি বছর , উপজেলায় মিষ্টি কুমড়ার চাষ হয়েছে ১ হাজার ৬শত হেক্টর জমিতে। গত বছর কৃষকেরা মিষ্টি কুমড়া আবাদ করে বেশি লাভবান হওয়ায় এ বছর ৭শত হেক্টর জমি বেশি চাষ করেছিলেন।
ভোলাহাট উপজেলার তালপল্লী থেকে ফলিমারি বিল পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশে মিষ্টিকুমড়ার স্তূপ করে সাজিয়ে রেখেছেন কৃষকেরা। গত বছর জমি থেকেই মিষ্টি কুমড়া বিক্রি হয়ে গেলেও এবার ব্যাপারিরা আসছেনা, পাশাপাশি দাম কম বলছেন। জমিতে বিক্রি না হওয়ার জন্য তুলে নিয়ে এসে রাস্তার পাশে অস্থায়ী বাজার করে বিক্রি করতে দেখা গেছে।
এদিকে স্থানীয় বেপারীরা ক্রয় করে ঢাকা শহরসহ বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে বিক্রি করে থাকে। প্রথমে মিষ্টি কুমড়া ১২-১৪ শত টাকা মন করে বিক্রি করতে পারলেও এখন ৮---৯ শত করে বিক্রি করতে বেগ পেতে হচ্ছে।
কৃষক শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘এক বিঘা জমিতে প্রায় ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। মিষ্টি কুমড়া বিক্রি করে ২০ থেকে ২২ হাজার অতিরিক্ত ২৫ হাজার টাকা পাওয়া যাচ্ছে। সময় মত বীজ না পাওয়ার কারণে চাষ আবাদ করতে দেরি হওয়ায় ফলন দেরিতে হয়েছে, সাথে সাথে শীতকালীন সবজি বাজারে আসার কারণে মিষ্টি কুমড়ার দাম কমে গেছে।’
কৃষক আব্দুস সামাদ বলেন, ‘তিনি ৪৫ বিঘা জমিতে মিষ্টি কুমড়া চাষ করেছিলেন। প্রথম দিকে ১৪শত টাকা মন ছিল, এখন ৮/৯শ টাকা মণ করতে হচ্ছে।
কৃষক আলী হোসেন জানান, তিনি ২৫ বিঘা জমিতে মিষ্টি কুমড়ার চাষ করেছিলেন। পাইকারে তাকে ১ হাজার টাকা মণ করে বলেছিল। পরবর্তীতে ৭শত টাকা মন করে বলেছিল। বর্তমানে বাধ্যহয়ে লোকাল বাজারে কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।’
ঢাকার পাইকার আল মামুন বলেন, ‘আগে ছিল ১৫শত টাকা মন, এখন ৭/৮শ টাকা মণ। বেচা কেনা হয় না, চাহিদা খুব কম। আরেক পাইকার সাইফুল ইসলাম বলেন প্রথম দিকে মিষ্টি কুমড়া ক্রয় করেছি ১৪শ টাকার উপরে। এক বিঘা জমির মিষ্টি কুমড়া ক্রয় করতাম ৪০/৫০ হাজার টাকায়, সেটা এখন ২০-২৫ হাজার টাকা।’
ভোলাহাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. সুলতান আলী বলেন, ‘বাজারে সবজির যোগান বেশি হওয়াতে স্বাভাবিক ভাবে সকল কৃষি পণ্যের দাম কমে গেছে। ভোলাহাটে মিষ্টি কুমড়ার উৎপাদন ভালো হওয়াতে তুলনামূলক দাম কমেছে। আগামী ছয় মাস পর্যন্ত পরিপক্ব মিষ্টি কুমড়া ভালো থাকবে। মিষ্টি কুমড়া সংরক্ষণ রেখে কয়েকমাস পরে বিক্রি করলে ভালো দাম পাবে।’