প্রকাশ: রবিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৯:০১ পিএম আপডেট: ১৪.১২.২০২৫ ৯:০৫ PM

বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার দুদিন আগে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শত্রুমুক্ত করতে গিয়ে ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর শাহাদত বরণ করেন বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর। তাঁর ৫৪তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে আজ গভীর শ্রদ্ধা ও সম্মানের সঙ্গে জাতির এই শ্রেষ্ঠ সন্তানকে স্মরণ করছে জেলা বাসি।
রবিবার সকাল ৯টায় মহানন্দা নদীর তীরে সড়ক ভবন প্রাঙ্গণে অবস্থিত ক্যাপ্টেন জাহাঙ্গীরের শাহাদতস্থলে নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। এ সময় ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেলা প্রশাসক শাহাদাত হোসেন মাসুদ ও পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস।
এছাড়া মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন এবং সাধারণ মানুষের পক্ষ থেকেও স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
একই দিনে ঐতিহাসিক ছোট সোনামসজিদ প্রাঙ্গণে অবস্থিত বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীরের সমাধিস্থলেও জেলা প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
ইতিহাস অনুযায়ী, ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর ভোরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরকে শত্রুমুক্ত করতে ক্যাপ্টেন জাহাঙ্গীর তাঁর বাহিনীকে তিন ভাগে ভাগ করে আক্রমণ শুরু করেন। মহানন্দা নদীর দক্ষিণ তীরে রেহাইচর এলাকায় সম্মুখযুদ্ধে একপর্যায়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর গুলিতে তিনি শহীদ হন।
সেদিনের যুদ্ধে ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর শত্রুবাহিনীর ১৮টি ট্রেঞ্চ ও ২০ থেকে ২২টি বাংকার ধ্বংস করে সামনে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় শত্রুর একটি গুলি তাঁর কপালে আঘাত করলে তিনি শাহাদত বরণ করেন। তাঁর শাহাদতের পর চাঁপাইনবাবগঞ্জে আর কোনো যুদ্ধ সংঘটিত হয়নি।
পরদিন ১৫ ডিসেম্বর ১৯৭১ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীরের ইচ্ছা অনুযায়ী তাঁর মরদেহ ঐতিহাসিক ছোট সোনামসজিদ প্রাঙ্গণে সমাহিত করা হয়।
উল্লেখ্য, বীরশ্রেষ্ঠ মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর (জন্ম: ৭ মার্চ ১৯৪৯, বরিশাল; মৃত্যু: ১৪ ডিসেম্বর ১৯৭১) ছিলেন বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের একজন অকুতোভয় সেক্টর কমান্ডার। অসীম সাহসিকতা ও আত্মত্যাগের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি দেশের সর্বোচ্চ সামরিক সম্মান ‘বীরশ্রেষ্ঠ’ উপাধিতে ভূষিত হন।