প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২৪ জুন, ২০২৫, ৮:০৫ পিএম

ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ ও আশপাশের অঞ্চলে রাশিয়ার ভয়াবহ ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে একজন শিশু রয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছেন ৩৪ জনের বেশি, যাদের মধ্যে চারজন শিশু রয়েছে। সোমবার (২৩ জুন) ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ ও ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
রোববার (২২ জুন) গভীর রাতে এই হামলা চালানো হয়। এতে কিয়েভের বেশ কিছু আবাসিক এলাকায় আগুন লেগে যায় এবং ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো। রাজধানীর শেভচেনকিভস্কি জেলার একটি অ্যাপার্টমেন্ট ভবনের ধ্বংসাবশেষ থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এই এলাকা মার্কিন দূতাবাস থেকে খুবই কাছাকাছি অবস্থিত।
ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শুধু ওই এলাকাতেই ৯ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া দক্ষিণ ইউক্রেনের কৃষ্ণসাগর তীরবর্তী ওডেসা অঞ্চলে পৃথক ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় আরও ৩ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় গভর্নর ওলেহ কিপার।
হামলার সময় শহরের আকাশে টানা বিস্ফোরণ আর বিমান প্রতিরক্ষা ইউনিটের গুলির শব্দে কম্পিত হয়ে ওঠে কিয়েভ। ইউক্রেনীয় বিমান বাহিনী জানায়, রাশিয়া মোট ৩৫২টি ড্রোন ও ১৬টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়ে হামলা চালায়, যার মধ্যে তারা ৩৩৯টি ড্রোন এবং ১৫টি ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করতে সক্ষম হয়।
স্থানীয় সময় রাতভর চলে এই হামলা। জাতীয় প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কিয়েভ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট) এলাকায় অগ্নিকাণ্ড নেভাতে কাজ করে ফায়ার সার্ভিস। বিশ্ববিদ্যালয়ের মহাকাশ প্রকৌশল বিভাগসহ একাধিক অ্যাকাডেমিক ভবন ও চারটি ডরমিটরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানানো হয়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইহোর ক্লাইমেঙ্কো জানিয়েছেন, রাজধানীর ১০টি জেলায় হামলা চালানো হয়েছে, যার মধ্যে ছয়টি জেলায় বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে। এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে কেউ আটকে থাকতে পারেন বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি।
শহরের স্ভিয়াতোশিনস্কি জেলায় একটি মেট্রো স্টেশনের প্রবেশপথও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব স্টেশন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে বোমা আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে, তাই এই ক্ষতি জননিরাপত্তার ওপর বড় প্রভাব ফেলতে পারে।
শান্তি আলোচনায় অগ্রগতির অনুপস্থিতির প্রেক্ষাপটে রাশিয়া সম্প্রতি ইউক্রেনজুড়ে আক্রমণ জোরদার করেছে। এ হামলা এমন এক সময়ে চালানো হলো, যখন হেগে শুরু হতে যাচ্ছে ন্যাটোর বার্ষিক সম্মেলন, যেখানে যোগ দিতে যুক্তরাজ্যে সফর করছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।