
কক্সবাজারের টেকনাফের নাফ নদীতে দীর্ঘ ৭ বছর ৯ মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষে অবশেষে মাছ ধরার অনুমতি পেলেন জেলেরা। মহামান্য হাইকোর্টের আদেশে শর্তসাপেক্ষে এই অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এই রায়ে জেলে সম্প্রদায়ের মধ্যে আনন্দ ও উদ্দীপনার সৃষ্টি হলেও পুরো নাফ নদীতে মাছ শিকারের অনুমতি না মেলায় হতাশ অধিকাংশ জেলেরা।
জেলে হাতেম উল্লাহ, নাছির উদ্দীন, "আবুল হোছেন কালুসহ অনেকেই জানান, টেকনাফ জেটিঘাট থেকে শাহ্ পরীর দ্বীপ পর্যন্ত চার ভাগ জেলে,কিন্তু তিনভাগ (অধিকাংশ) জেলে পুরো নাফনদী জুড়ে। সুতরাং আমারা কি করবো?। আমারাও-তো প্রায় দীর্ঘ আট বছর ধরে মাছ শিকার করতে না পেরে পরিবার পরিজন নিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছি। সরকারের কছে আমাদের আকুল আবেদন আমারাও যেন মাছ শিকার করতে পারি সেই সেই ব্যবস্থা করে"।
এদিকে, কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর প্রেরিত এক স্মারকে জানাযায়, পাঁচ শর্তের মাঝে ১ম শর্ত হলো পুরো নদীতে নয়, শুধুমাত্র সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত বাংলাদেশ সীমানার মধ্যে নাফ নদীর শাহপরীর দ্বীপ থেকে টেকনাফ জেটিঘাট পর্যন্ত মাছ ধরার অনুমতি থাকবে।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের সিভিল স্যুট শাখার সহকারী কমিশনার মো. কামরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত স্মারকে বলা হয়েছে, হাইকোর্টের রিট পিটিশনের রুলনিশির আলোকে কক্সবাজার জেলা প্রশাসককে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়।
বাকি শর্তগুলো হলো
২. জেলেদের বিজিবির পাঁচটি নির্ধারিত পোস্টে টোকেন বা পরিচয়পত্র দেখাতে হবে এবং ফেরার পর তল্লাশিতে সহায়তা করতে হবে। ৩. কোনোভাবেই বাংলাদেশের জলসীমা অতিক্রম করা যাবে না। ৪. মৎস্য অধিদপ্তরের হালনাগাদকৃত নিবন্ধিত জেলেদের তালিকা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সরবরাহ করা হবে, যাতে অনিবন্ধিত কেউ নদীতে মাছ ধরতে না পারে। ৫. এই অনুমতি সম্পূর্ণ সাময়িক, তিন মাস পর সীমান্ত পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে নবায়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন জানান, "আমরা এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছি, যাতে জেলেরা নির্ধারিত শর্ত মেনে মাছ ধরতে পারেন।"
টেকনাফ উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, "২০১৭ সালের এপ্রিল মাসে নাফ নদীতে মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল। দীর্ঘ প্রায় ৮ বছর পর আবারও জেলেরা নদীতে মাছ ধরার সুযোগ পাচ্ছেন।"
টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের জালিয়াপাড়া মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি আব্দুল গনি জানান, দীর্ঘদিন পর নাফ নদীতে মাছ ধরার অনুমতি পেয়ে জেলে সম্প্রদায়ের মধ্যে উল্লাস ও উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে।