
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক (ডিজি) হিসেবে পদায়ন পাওয়া অধ্যাপক ড. এহতেসাম উল হক ও জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমির (নায়েম) মহাপরিচালক পদে ড. জুলফিকার হায়দারকে প্রত্যাহারের দাবিতে শিক্ষা ভবন ঘেরাও কর্মসূচি পালন করছে শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোট।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টার পর রাজধানীর আব্দুল গনি রোডে মাধ্যমিক উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মূল ভবনের সামনে শতাধিক শিক্ষক-কর্মচারী বিক্ষোভ শুরু করেন।
এরপর শিক্ষকরা মূল ভবনের সামনে এসে ঘেরাও করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। তাদের কর্মসূচি ঘিরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
শিক্ষকদের দাবি, মহাপরিচালককে সরিয়ে দেয়ার জন্য মঙ্গলবার পর্যন্ত আলটিমেটাম দেয়া ছিল। কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয় তাকে এখনো সপদে বল রেখেছে। অবিলম্বে তাকে ডিজি পদ থেকে প্রত্যাহার না করলে সামনে কঠোর কর্মসূচি দেয়ার হুঁশিয়ারি দেন তারা। একইসঙ্গে জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমির (নায়েম) মহাপরিচালক পদে ড. জুলফিকার হায়দারকে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোট।
শিক্ষক-কর্মচারীরা অভিযোগ করে বলেন, মাউশি মহাপরিচালক পদে আওয়ামী লীগপন্থি অধ্যাপক ড. এহতেসাম উল হককে পদায়ন করা হয়েছে। বর্তমান শিক্ষা সচিব আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন শুরু করেছেন। অবিলম্বে আওয়ামীপন্থি মাউশির মহাপরিচালকের পদত্যাগ করতে হবে।
তারা আরও বলেন, মাউশির ডিজি অধ্যাপক এহতেসাম উল হক বরিশাল সিটির সাবেক মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর ঘনিষ্ঠ অনুচর হিসাবে সর্বমহলে পরিচিত। তার হাত ধরেই বরিশাল বিএম কলেজের রসায়ন বিভাগ থেকে বরিশাল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ পদে পদায়ন পান অধ্যাপক এহতেসাম উল হক।
শিক্ষক-কর্মচারীরা আরও বলেন, আওয়ামী ঘনিষ্ঠ অনুচর ও বিতর্কিত শিক্ষা ক্যাডারের এই কর্মকর্তা কিভাবে মাউশির ডিজি পদে আসীন হন তা শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটসহ শিক্ষার্থী এবং সুশীল সমাজের কাছে বোধ্যগম্য নয়। শিক্ষা প্রশাসনে পদায়নের ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগীদের দাপট এখনো কমেনি। বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজগুলোতে শিক্ষার্থীদের ক্রমাগত চাপের মুখে আওয়ামী ভিসি এবং সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ পরিবর্তন হলেও তাদের আবারও ডেকে এনে পুনর্বহাল করা হচ্ছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি সিন্ডিকেটের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় আওয়ামী সুবিধাভোগী এসব কর্মকর্তাকে পুনর্বহাল এবং গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে পদায়ন করা হচ্ছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এখনো আওয়ামীবলয় মুক্ত হয়নি। যার প্রমাণ মাউশির ডিজি পদে আওয়ামীকরণ।
শিক্ষকদের এই আন্দোলনের নেতৃত্বে রয়েছেন-শিক্ষক কর্মচারী ঐক্য জোটের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ সেলিম ভুঁইয়া, মহাসচিব জাকির হোসেন, সহকারী মহাসচিব অধ্যাপক বদরুল ইসলাম, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যক্ষ কাজী মোহাম্মদ মাইনুদ্দিন, অধ্যক্ষ মোশারফ হোসেন লিটন, অধ্যাপক আব্দুল আউয়াল, যুগ্মমহাসচিব অধ্যাপক আব্দুল হাকিমসহ বিভিন্ন জেলা থেকে আসা শিক্ষক কর্মচারীরা।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) মাধ্যমিক উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর ঘেরাও করে ১০ ফেব্রুয়ারি মধ্যে থাকে প্রত্যাহারের আলটিমেটাম দেয় শিক্ষক কর্মচারী ঐক্য জোট।