প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারি, ২০২৫, ৩:০৫ পিএম

মহাকাশ যেন বিস্ময়ের এক আধার। হাজার বছর ধরে বিজ্ঞানী আর জ্যোতির্বিদদের চমক দেওয়ার পরও শেষ হচ্ছে না মহাকাশের বিস্ময়। তেমনই এক বিস্ময় হিসেবে মহাকাশে অজানা রহস্য বস্তুর দেখা পেয়েছেন জাপানের বিজ্ঞানীরা। তাদের দাবি, এমন মহাকর্ষীয় বস্তুর এর আগে দেখা মেলেনি।
আমাদের গ্যালাক্সির মিল্কিওয়ের দূরবর্তী এক অঞ্চলে খোঁজ পাওয়া এক জোড়া বস্তুকে অদ্ভূত বস্তু হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন বিজ্ঞানীরা।
বিজ্ঞানীদের মতে, বরফ বলের আদলে তৈরি বস্তুগুলো আগে দেখা কোনো বস্তুর মতো নয়। এগুলো সম্পূর্ণ নতুন ধরনের কোনো তারা হতে পারে। এ বিষয়ে জাপানের নিগাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান গবেষক তাকাশি শিমোনিশি বলেন, ‘আমরা বস্তু দুটির বৈশিষ্ট্য নিয়ে যথাসাধ্য জানার চেষ্টা করেছি। বর্ণালির বৈশিষ্ট্যের মাধ্যমে আমরা আসলে ব্যাখ্যা করার কোনো তত্ত্ব খুঁজে পাচ্ছি না।’
জাপানি গবেষকেরা ২০২১ সালে প্রথম বরফ বলের আদলে তৈরি বস্তুগুলোর দেখা পান। নতুন এক গবেষণা অনুসারে, সেই দূরবর্তী বস্তু থেকে আসা আলো আসলে কোনো কিছুর সঙ্গে মিলছে না। যদিও তাদের গ্যাসের ঘন মেঘ বা সদ্য গঠিত নক্ষত্রের মতো মনে হচ্ছে। দুই বস্তুর অবস্থান এমন অঞ্চলে, যেখানে আসলে তারা সাধারণত গঠিত হয় না। যদিও বস্তু থেকে তারার মতো ইনফ্রারেড আলো দেখা যায়, তারপরও তাদের চারপাশে থাকা প্রচুর পরিমাণে বরফের সঙ্গে বিষয়টি মিলছে না। দুই বস্তু একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত।
প্রথম যখন দুটি বরফের বল চোখে পড়ে, তখন তা ব্যতিক্রমধর্মী ও অদ্ভুত রকমের ছিল। দুটি বস্তু জাপানি আকারি স্পেস টেলিস্কোপ ব্যবহার করে পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। বিজ্ঞানীদের ধারণা, একটি বস্তু সূর্য থেকে প্রায় ৩০ হাজার আলোকবর্ষ দূরে আকাশগঙ্গার অনেক গভীরে অবস্থিত। ক্রাক্স-স্কুটাম আর্ম নামের এলাকায় এদের অবস্থান। আর অন্য বস্তু ক্যারিনা-স্যাগিটেরিয়াস আর্মে অবস্থিত। সূর্য থেকে এর অবস্থায় বেশি নয়, প্রায় ৪৩ হাজার আলোকবর্ষ দূরে!
বর্তমানে গবেষকেরা চিলির আতাকামা লার্জ মিলিমিটার/সাবমিলিমিটার অ্যারে টেলিস্কোপ ব্যবহার করেছেন বস্তু দুটির রহস্যের সমাধানের আশায়। দুটি বস্তুই আমাদের সৌরজগতের আকারের কয়েক গুণ বড় বলা যায়। বস্তু দুটি থেকে বেরিয়ে আসা আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য বলছে বস্তুগুলো কার্বন মনোক্সাইড ও সিলিকন ডাই–অক্সাইড দ্বারা গঠিত।
এ বিষয়ে যুক্তরাজ্যের কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী জেন গ্রিভস বলেন, দুটি বস্তুর মধ্যে পরস্পরবিরোধী বৈশিষ্ট্য রয়েছে বলে মনে হচ্ছে। যথেষ্ট ঠান্ডা হওয়ার কারণে সেখানে প্রচুর বরফ রয়েছে। যদিও বস্তু থেকে তারার মতো ইনফ্রারেড রশ্মির নির্গমন ঘটছে। সূত্র: ডেইলি মেইল