শুক্রবার ৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

শিরোনাম: বাংলাদেশে এলো তারেক রহমানের বুলেটপ্রুফ গাড়ি, দাম কত?   হেলিকপ্টারে বিমানবন্দর যাবেন খালেদা, মধ্যরাতে আসছে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স   নড়াইল-২ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন মনিরুল ইসলাম   লাবিব গ্রুপের চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন আলমগীরের সঙ্গে ইউএই রাষ্ট্রদূতের সৌজন্য সাক্ষাৎ    পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশ অনুমোদন   কেরাণীগঞ্জে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় বিশেষ দোয়া   খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় সেক্রেটারিয়েট জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন'র দোয়া মাহফিল    
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমবাগানগুলোতে মুকুল আসতে শুরু করেছে
মো. সাজেদুল হক সাজু, চাঁপাইনবাবগঞ্জ
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারি, ২০২৫, ৩:৩৪ পিএম

আমের রাজধানী ক্ষ্যাত চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমগাছগুলোতে মুকুল আসতে শুরু করেছে। মুকুলের মৌ মৌ গন্ধে বাগান গুলো  সুবাসিত হচ্ছে।   

ভালো ফলনের আশায় আম চাষিরা আগাম পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। আগামী এক দুই সপ্তাহের মধ্যে সূর্যের তাপমাত্রা বাড়বে। এতে করেই আমবাগানগুলেতে প্রচুর পরিমাণে আমের মুকুল ফুটতে থাকবে। তখন অন্য এক রূপে আবির্ভূত হবে আমবাগানগুলো।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এ বছর জেলাজুড়ে ৩৭ হাজার ৫০৪ হেক্টর বাগানে আমের ফলন হচ্ছে। এর মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলায় ৫ হাজার ১৮০ হেক্টর, শিবগঞ্জ উপজেলায় ২০ হাজার ১০০ হেক্টর, গোমস্তাপুরে ৪ হাজার ২৪০ হেক্টর, নাচোলে ৪ হাজার ৩৫০ হেক্টর এবং ভোলাহাটে ৩ হাজার ৬৩৪ হেক্টর বাগানে আমের ফলন হচ্ছে।

সরেজমিনে চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিভিন্ন আমবাগান ঘুরে দেখা যায়, আমের ভালো ফলন পাওয়ার জন্য আম গাছে আগাম পরিচর্যা হিসেবে বিষ ও কীটনাশক স্প্রে করছেন আম চাষিরা। গত বছর ছিল অপ এয়ার, চলতি বছর অন এয়ার হওয়ায় চাষিদের আশা এবার পর্যাপ্ত পরিমান৷  বাগান গুলোতে মুকুল আসবে।
তাদের আশা, এই বছর আমের ফলন ভালো হবে।

জেলা কৃষি অফিস থেকে জানা যায়, মাঠ পর্যায়ে বিভিন্ন প্রোগাম, লিফলেট বিতরণ, মাঠ দিবস ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আম চাষিদের বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছেন কর্মকর্তারা। এ বছর আমের ফলন ভালো হবে বলেও আশা জেলা কৃষি অফিসের।

শিবগঞ্জ উপজেলার আম চাষি আব্দুল কুদ্দুস  বলেন, তিনি  একজন আম ব্যবসায়ী। সামনে আমের ভালো ফলনের জন্য তারা এখন আম গাছের পরিচর্যা নিচ্ছেন এবং আগামীতে আমের মুকুল যেন নষ্ট না হয় সেজন্য আমের মুকুল সতেজ রাখার জন্য কীটনাশক ও ছত্রাকনাশক ব্যবহার করছেন।

তিনি আরও বলেন, কৃষি অফিস থেকে তাদের জানানো হয়েছে , আমের ফলন ভালো পেতে হলে আমের গাছে কোনো মহা (ছত্রাক জাতীয় এক ধরনের রোগ) লাগতে দেওয়া যাবে না। এজন্য কোম্পানি গুলো  ওষুধ দিচ্ছে এবং সেই ওষুধগুলো  ব্যবহার করছেন। তারা কৃষি অফিসের পরামর্শেই  কাজ করছেন বলে জানান।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের আম চাষি শাহাবুদ্দিন মিয়া বলেন, আমের মুকুল এখন দেখা দিতে শুরু করেছে তাই  এখন ভালো ফলনের জন্য কীটনাশক ব্যবহার করেছেন। তার আশা, এবার আল্লাহ চাইলে আমের ফলন ভালো হবে।

আম চাষি গোলাপ  হোসেন বলেন, এখন মহাকাটার জন্য তারা বিষ ব্যবহার করছেন। সালফা, মেনকোজ ও তরল বিষ একসঙ্গে মিশিয়ে তার গাছে দিচ্ছেন। এতে আমের মুকুল ভালো ফুটবে এবং মুকুল পরিষ্কার থাকবে। 

ভোলাহাট উপজেলার আম চাষি দুরুল হোদা বলেন, গাছে বিষ (কীটনাশক) দিচ্ছি আমের ফলন হওয়ার জন্য। আশা করছি, গতবারের চেয়ে এবার দ্বিগুণ আম ধরবে,কারন বাগানের আম গাছ গুলো দারুণ  সিচুয়েশনে রয়েছে। একটু গরম পড়লে সকল আম গাছে জোরে সোরে আমের মুকুল আসতে শুরু করবে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণাকেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. মুখলেসুর রহমান ভোরের পাতাকে বলেন, এ বছর চাঁপাইনবাবগঞ্জে আমের মুকুল খুব বেশি হবে বলে আমরা আশা করছি। শীতের তীব্রতা কম হওয়ায় ইতোমধ্যে মুকুল বের হওয়া শুরু হয়ে গেছে। তাই এই মুহূর্তে জরুরি যে কাজগুলো করতে হবে তার মধ্যে গাছে যদি কোনো পরগাছা থাকে তাহলে তা কেটে ফেলতে হবে এবং যেহেতু মুকুল বের হয়ে গেছে তাই সেচ দেওয়া যেতে পারে। সেচের পাশাপাশি স্প্রেও করতে হবে। আর স্প্রে করার সময় সাইফোমেট্রিক গ্রুপের সালফার ছত্রাকনাশক স্প্রে ব্যবহার করতে হবে। এ সময় গাছে মহা লাগার বিষয়টি থাকে তাই একটি ছত্রাকনাশক ও একটি কীটনাশক স্প্রে করা খুবই জরুরি।

তিনি আরও বলেন, আমরা আশা করছি, এ বছর মুকুল অনেক হবে। মুকুল আশার পর যদি প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না আসে তাহলে এবার নিঃসন্দেহে ফলন অনেক বেশি হবে। আর মুকুল সম্পূর্ণ বের হওয়ার পরে আমরা বলতে পারবো ফলন কী পরিমাণ হবে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. পলাশ সরকার ভোরের পাতাকে বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জকে আমের রাজধানী বলা হয়। এখানে আমের চাষ সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে। এই সময় আমের যে পরিচর্যাগুলো আছে সেইগুলো মাঠ পর্যায়ে বিভিন্ন প্রোগামের মাধ্যমে, লিফলেট বিতরণ, মাঠ দিবস ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আমরা কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে থাকছি। তার মধ্যে  যে গাছগুলোতে এখনো মুকুল আসেনি এবং যে গাছগুলোতে মুকুল আসছে কিন্তু ফুল ফোটেনি সেই গাছগুলোতে একটি ছত্রাকনাশক ও কীটনাশক অর্থাৎ ম্যাগোজাত গ্রুপের যে কোনো ছত্রাকনাশক প্রতি লিটার পানিতে দুই গ্রাম করে এবং কীটনাশক একসঙ্গে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। এ ছাড়া ফুল সম্পূর্ণরূপে ফুটে যাওয়ার পর নিয়মিতভাবে পানি সেচ দিতে হবে এবং যখন আমের আকারটা মারবেলের মতো হবে তখন আবার ছত্রাকনাশক ও কীটনাশক স্প্রে দিতে হবে, শুধু গ্রুপগুলো চেঞ্জ করতে হবে। প্রতিবছর আমরা এই ধরনের ব্যবস্থাপনা কৃষক ভাইদের বলে থাকি এবং এবারো সেটি অব্যাহত আছে যাতে রোগ ও পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা পায়। আর সুন্দরভাবে আম উৎপাদন মৌসুমটা পার করতে পারি।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://dailyvorerpata.com/ad/af.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: vorerpata24@gmail.com বার্তা ইমেইল:news@dailyvorerpata.com বিজ্ঞাপন ইমেইল:vpgmad@gmail.com