বুধবার ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ৫ ফাল্গুন ১৪৩১

শিরোনাম: খুলনায় মুখোমুখি অবস্থানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও বিএনপি   শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে এনে বিচার করাই সরকারের মূল উদ্দেশ্য : প্রেসসচিব   রাজধানীতে দুর্বৃত্তের গুলিতে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আহত   ষোলো বছরে ব্যানার ধরার ৬ জনও ছিল না: কুয়েটে সংঘর্ষের পর ছাত্রদলকে হাসনাত   কুয়েটে ছাত্রদলের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ, আহত ৫০   উত্তরায় দম্পতিকে প্রকাশ্যে কোপানো দুজন রিমান্ডে   শেয়ারবাজারের ৭শ কোটি টাকা লুট করে লাপাত্তা হাসান তাহের ইমাম   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে কারখানা দখল করা আ.লীগ নেতারা আত্মগোপনে!
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: বুধবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২৫, ২:২০ পিএম আপডেট: ১৫.০১.২০২৫ ২:২৩ PM

ঢাকার সাভারে দিনে-দুপুরে একটি কারখানায় ঢুকে পড়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ কয়েকশ সন্ত্রাসী। কারখানা চত্বরে ঢুকে তারা নিরাপত্তারক্ষী, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের বের করে দিয়ে কারখানাটি অবৈধভাবে দখলে নেয়৷ 

তৎকালীন কয়েকজন প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতার প্রত্যক্ষ মদদে এই দখলের ঘটনাটি ঘটেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। 

আদালতের দুটি নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও ‘বেঙ্গল ফাইন সিরামিক লিমিটেড’ নামের ওই প্রতিষ্ঠানটি দখলে নেয় তারা। দখলের সময় ভুক্তভোগীরা পুলিশের সহযোগিতা চেয়েও পাননি। ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত থাকলেও তারা ছিল নিশ্চুপ।

পুলিশের সামনেই সিসি ক্যামেরা ভাঙচুর এবং লুটপাট চালায় দখলকারীরা। এ সময় তথ্য সংগ্রহ করতে যাওয়া সাংবাদিকদেরও মারধর করে দখলকারীরা।

গত বছরের ২৬ মে (রোববার) সাভার পৌর এলাকার ভাগলপুরে বেঙ্গল ফাইন সিরামিক লিমিটেড কারখানায় এমন ঘটনা ঘটে। 

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, দুর্ধর্ষ ঘটনাটি ঘটিয়েছেন ময়মনসিংহের আওয়ামী লীগ নেতা সি পার্ল গ্রুপের মালিক আমিনুল হক শামীম। এসময় তাকে সহায়তা করেছেন আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য মির্জা আজম ও সাভারের সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ সাইফুল ইসলামসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।

ওই ঘটনার পরে বেঙ্গল ফাইন সিরামিক লিমিটেডের তৎকালীন নির্বাহী পরিচালক অভিজিৎ কুমার রায় ও বিশ্বজিৎ কুমার রায় বাদী হয়ে আদালতে দুইটি মামলা দায়ের করেছেন।

মামলা দুটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন কে নির্দেশ দেয়। পিবিআই দুটি মামলার তদন্ত করছেন।

অভিজিৎ কুমার রায় জানান, ২০২৪ সালের ২৬ মে সকালে সি পার্ল গ্রুপের কর্মকর্তারা স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা-কর্মীসহ কয়েক শ সন্ত্রাসী নিয়ে জোর করে কারখানাটি অবৈধভাবে দখলে নেয়।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি জানান, ২০০৭ সালে বেঙ্গল ফাইন সিরামিক লিমিটেড মোটা অঙ্কের দায় মাথায় নিয়ে বন্ধ হওয়ার পর একটি চুক্তির মাধ্যমে কোম্পানির ২৪ দশমিক ২৯ শতাংশ স্পনসর শেয়ার কিনে এজিএমের মাধ্যমে কোম্পানি পরিচালনার দায়িত্ব নেয় তাঁর পরিবার। পরবর্তী সময়ে জমিজমা সংক্রান্ত কিছু জটিলতা তৈরি হয়। তবে ২০১৯ সালে কারখানাটি সচল করে কার্যক্রম শুরু করা হয়।

অভিজিতের অভিযোগ, ২০১৬ সালে আগের মালিকপক্ষ চুক্তিভঙ্গের অভিযোগ তুলে কোম্পানির মালিকানা দাবি করে আদালতে একটি মামলা করে। তবে উচ্চ আদালত তার (অভিজিৎ) বাবা বিশ্বজিৎ কুমারকেই কারখানা পরিচালনার নির্দেশ দেন। কিন্তু আগের মালিকপক্ষ বিক্রীত শেয়ার আবার সি পার্ল গ্রুপের মালিকপক্ষের কাছে বিক্রি করে দেয়। 

এরপর ছাড়া সি পার্ল গ্রুপের লোকজন কয়েক দফায় কারখানাটি দখলের চেষ্টা করেন। অপ্রীতিকর ঘটনা রোধে আদালত থেকে এ বিষয়ে ১৪৫ ধারার আদেশ আনা হয়। কিন্তু তারা আদালতের আদেশ উপেক্ষা করে অবৈধভাবে কারখানাটি দখল করেছেন।

ভুক্তভোগী অভিজিৎ রায়ের ভাইয়ের ছেলে প্রমিত রায় জানান, তাদের পরিবার এই ঘটনার পরে প্রায় বিধস্ত হয়ে পড়েছে। তার বাবা এবং চাচার এই কারাখানায় বহু টাকা বিনিয়োগ করেছে। সাবেক আওয়ামী লীগের নেতাদের প্রভাবে সব হারিয়েছে তারা। 

ভুক্তভোগী পরিবার ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০২৪ সালের ৫ মে কারখানাটির মালিকানার জটিলতা নিয়ে আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য মির্জা আজমের কার্যালয়ে একটি মিটিং হয়েছিল। সেখানে সাভারের সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ সাইফুল ইসলামসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু সেই বৈঠক কোনো সমাধান হয়নি। তার কিছু দিন পরেই এই দখলের ঘটনা ঘটেছে। 

দখলের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে অভিজিৎ রায় বাদী হয়ে বিগত ২০২৪ সালের ২৮ মে ঢাকার চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি ফৌজদারী মামলা (নং- ৬৫৪/২০২৪) দায়ের করেন।

এছাড়াও, ২০২৪ সালের ৩০ মে  আরও একটি ফৌজদারি মামলা (নং- ৬৬৮/২০২৪) দায়ের করেন অভিজিৎ রায়। মামলাগুলো তদন্ত করছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পিবিআই ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মো. কুদরত-ই-খুদা ভোরের পাতাকে বলেন, ‘মামলা দুটির তদন্ত কাজ চলছে। দুজন তদন্তকারী কর্মকর্তা মামলা দুটি নিয়ে তদন্ত কাজ করছেন। অনেক আসামি রয়েছে, সবার বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। ঘটনার সময়ের সিসিটিভি ফুটেজ ও ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।   

কারখানা দখলের অভিযোগের বিষয়ে জানতে আওয়ামী লীগ নেতা ও সি পার্ল গ্রুপের মালিক আমিনুল হক শামীম ও সাবেক সংসদ সদস্য মির্জা আজমের অফিসে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে ফোন করলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়। মেসেজ পাঠালেও কোনো উত্তর মেলেনি। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ৫ আগস্টের পট পরিবর্তনের পর অন্যান্য আওয়ামী লীগের নেতাদের মতো আত্মগোপনে চলে গেছেন তারাও। তবে এখনো তাদের ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না অনেক ভুক্তভোগী।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://dailyvorerpata.com/ad/af.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: vorerpata24@gmail.com বার্তা ইমেইল:news@dailyvorerpata.com বিজ্ঞাপন ইমেইল:vpgmad@gmail.com