
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ পৌরসভার বাসিন্দা রমজান আলী, একসময় সাইকেল মেকারের কাজ করতেন, এখন দিন মজুর। তবে তাঁকে কেউই রমজান আলী নামে ডাকেন না, এলাকায় তার নাম জয় বাংলা। অতি সাধারন হলেও দিনমজুর রমজান আলী দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে বঙ্গবন্ধু ও তার কন্যা প্রধানমন্ত্রীর নামে কোরবানী ঈদে পশু কোরবানী দিয়ে আসছেন। তার চেষ্টায় পৌরসভার প্রধান ফটকের পাশেই গড়ে তোলা হয়েছে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি ও ঘোষনা করা হয়েছে জয়বাংলা চত্বর নামে। স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতারাও রমজান আলীর প্রশংসা করে বলেন, রমজান আলী দলের একজন নিবেদিত প্রাণ কর্মী।
এবিষয়ে শিবগন্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র কারিবুল হক রাজিন বলেন, তাঁর দায়িত্বের শেষ সময় পৌরসভার মুল ফটকের বাম পাশে রমজান আলির দোকান ও ৫ নং ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের অস্থায়ী অফিস ছিল। তাকে উঠানোর কথা বললে সর্ত জুড়ে দেয়। তাঁর দাবি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ভাষ্কর্য নির্মাণ করে দিতে হবে এবং বঙ্গবন্ধু চত্ত্বর ঘোষণা করে দিতে হবে। তিনি (মেয়র) বঙ্গবন্ধু চত্ত্বর নির্মাণ করে দেন। শিবগঞ্জ পৌরসভার সামনে আজও শোভা বর্ধন করছে।
প্রতিবছরের মত এবারও প্রধানমন্ত্রীর নামে পশু কোরবানী দিবেন রমজান আলী, সবার কাছেই যিনি জয় বাংলা নামেই বেশি পরিচিত। এ লক্ষ্যে তিনি স্থানীয়দের সাথে গরুর সাত ভাগের একটি ভাগ নিয়েছেন। এবার তিনি ২১ বারের মত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে পশু কোরবানী দিবেন।
নিজেকে বঙ্গবন্ধুর ভক্ত পরিচয় দিয়ে রমজান আলী জানান, আমার কাছে দুনিয়াতে সবচেয়ে প্রিয় বঙ্গবন্ধু, তাকে ভালোবেশেই আজ থেকে ৩১ বছর আগে প্রথম তার নামে কোরবানী দিয়েছিলাম। এরপর পর পর ১১ বার বঙ্গবন্ধুর নামেই কোরবানী দিয়েছি। তারপর মনে হইল আমাদের তো বাবা-মা আছে, ভাই বোন আছে, শেখ হাসিনার তো কেউ নাই, তাই প্রধানমন্ত্রীর নামেই কোরবানী দিয়ে আসছি।
বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের প্রতি রমজান আলীর এমন ভালোবাসার কথা স্থানীয়দের মুখে মুখে, পাড়ার চা দোকানী থেকে সবাই এখন তাই রমজান আলীকে জয়বাংলা বলেই ডাকেন। পাড়ার মোড়ের চা দোকানী বলেন, গতবার রমজান আলী নিজের বাড়িতে পোষা খাসি প্রধানমন্ত্রীর নামে কোরবানী দিয়েছিলো, এবার শুনেছি একটা গরুতে ভাগ দিবে।
দিনমজুর রমজান আলীকে দলের নিবেদিত প্রাণ কর্মী উল্লেখ করে, কিছুটা আক্ষেপের সুরেই উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক সাজেদুল হক সাজু বলেন, বঙ্গবন্ধুর একনিষ্ঠ ভক্ত, দলের প্রতি নিবেদিত প্রাণ এমন কর্মী দিনে দিনে হারিয়ে যাচ্ছে। নিভৃতে থাকা এমন কর্মীদের দলের কেউ খুব বেশি খোঁজ রাখে না, বঙ্গবন্ধুর প্রতি তাদের ভালোবাসায় স্বার্থহীন ভালোবাসা। দিন মজুর হয়েও রমজান আলী দীর্ঘ ৩১ বছর থেকে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী নামে কোরবানী দিয়ে আসছেন, এটা একটা ইতিহাসই। আওয়ামীলীগের অনেক নেতার কাছেই এ খবর হয়ত নাই।