শনিবার ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫ ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

শিরোনাম: কর্মোপযোগী শিক্ষার মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত উন্নতি সম্ভব   নববর্ষের আনন্দ যেন বিষাদের কারণ না হয়: রাষ্ট্রপতি   নির্বাচনে ২১ সদস্যের মনিটরিং সেল গঠন ইসির   দেশজুড়ে যে তিনদিন মোটরসাইকেল চলাচলে নিষেধাজ্ঞা!   মির্জা ফখরুলের জামিন শুনানি ৯ জানুয়ারি   প্রাথমিকের ছুটি বাড়ল ১৬ দিন (তালিকা)   নির্বাচনের বিরুদ্ধে বিএনপির প্রচারণা রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
এমপির অনুষ্ঠানে যোগ না দেওয়ায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা!
রংপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২২ জুন, ২০২৩, ১০:১৪ পিএম

রংপুরের বদরগঞ্জে এমপির অনুষ্ঠানে যোগ না দেওয়ায় দুই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর, লুটপাট ও ব্যবসায়ীকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। ওই হামলায় বোরহান (২৮) নামের এক যুবক গুরুতর আহত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছেন। তার মাথায় চারটি সেলাই পড়েছে।

গতমঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে পৌর শহরের বালুয়াভাটা মন্ত্রীর বাজার এলাকার ক্যাফে অ্যান্ড রেস্টুরেন্টে ও আম্বিয়ার মোড় এলাকার আকতার মেটাল ওয়ার্কশপ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এ হামলা চালানো হয়।

ভুক্তভোগীরা হামলার নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন, উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ও বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফিন্দিউল হাসান চৌধুরী শান্তু, উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা আলভী ও লালনের বিরুদ্ধে। এ সময় তাঁরা দুই ব্যবসায়ীকে মারপিট করে গলায় ছুরি লাগিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। ফিন্দিউল হাসান চৌধুরী শান্তু এমপি ডিউক চৌধুরীর চাচাতো ভাই।

গতকাল সন্ধ্যায় ছাত্রলীগের আয়োজনে পৌর শহরে বিক্ষোভ মিছিল শেষে জিতেনদত্ব বিজয়মঞ্চে শান্তি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় এমপি আবুল কালাম মো. আহসানুল হক চৌধুরী ডিউক।

আকতার মেটাল ওয়ার্কশপের স্বত্বাধিকারী আকতারুজ্জামান বলেন, ‘আমার দোকানের ছেলেদের আওয়ামী লীগের মিটিংয়ে ডাকা হয়েছিল। তাঁরা না যাওয়ায় আওয়ামী লীগের ৪০-৫০ জন নেতা-কর্মী রাতে এসে আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অতর্কিত হামলা চালিয়ে ছেলেদের খুঁজতে থাকেন। তাঁদের না পেয়ে আমাকে রড দিয়ে বেধড়ক মারপিট করে গলায় ছুরি ধরে ভয়ভীতি দেখান।’ 

আকতারুজ্জামানের ছেলে আরমান হোসেন বলেন, ‘প্রায় ছাত্রলীগের অনুষ্ঠানে আমাকে যেতে বলা হয়। কিন্তু তাঁদের কথা না শোনায় তারা আমার বাবাকে বেধড়ক মারধর করেছেন।’

আজ বুধবার দুপুরে হাসপাতালে রোবহান বলেন, ‘গতকাল রাত ১০টার দিকে দোকানে বসেছিলাম। হঠাৎ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা হাতে লাঠি সোঁটা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে দোকানের ভেতরে ঢুকেই এলোপাতাড়ি হামলা চালান। চেয়ার, টেবিল ও কাচের গ্লাস ভাঙচুর করে ক্যাশের টাকা লুট করেন। এ সময় ওই ছেলেদের সঙ্গে এমপির চাচাতো ভাই ইউপি চেয়ারম্যান শান্তু চৌধরীও উপস্থিত ছিলেন।’ 

রোবহান আরও বলেন, ‘ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা আমাকে মারপিট করে ছুরি দিয়ে মাথায় আঘাত করেন। এতে চার-পাঁচটি সেলাই পড়েছে।’

কেন আপনার দোকানে হামলা চালিয়েছেন তাঁরা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার ছোট ভাইকে নাকি ছাত্রলীগের মিটিংয়ে ডাকা হয়েছিল। সে মিটিংয়ে না যাওয়ায় তারা দোকানে হামলা চালায়।’ 

বোরহানের বাবা মাহাবুব বলেন, ‘আমার দোকানে হামলা চালিয়ে তিন-চার লাখ টাকার ক্ষতি করা হয়েছে। ক্যাশ থেকে একলাখ ৭৬ হাজার টাকা লুট করে ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা। ঘটনাস্থল গিয়ে সব দেখেছেন ওসি। সকালে ১২ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় অভিযোগ দিয়েছি।’ 

তবে তিনি ওই অভিযোগে শান্তু চৌধুরীর নাম উল্লেখ করেননি। হামলার ঘটনা অস্বীকার করেন ছাত্রলীগ নেতা আলভী ও লালন। 

অভিযোগ বিষয়ে উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ইউপি চেয়ারম্যান ফিন্দিউল হাসান চৌধুরী শান্তু বলেন, ‘দোকান ভাঙচুরের সময় ছিলাম না। মূলত মেয়েলি কেলেঙ্কারি নিয়ে কিশোর গ্যাংদের মধ্যে হামলার ঘটনা ঘটে। আমি পরে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম।’ 

‘ক্যাফে অ্যান্ড রেস্টুরেন্টে কালো গ্লাস দিয়ে ঘিরে সেখানে ব্যবসার নামে অসামাজিক কার্যকলাপ চলে। এসব প্রমাণ আমার হাতে রয়েছে। মূলত এ নিয়ে কিশোর গ্যাংদের মধ্যে মারামারি হয়েছে।’

উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক হাসান তবিকুর রহমান চৌধুরী পলিন বলেন, ‘আমি ঢাকায় অবস্থান করায় ওই শান্তি সমাবেশে ছিলাম না। শুনেছি সমাবেশের পরে নাকি ওই দুই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালানো হয়েছে। সেখানে যুবলীগের কেউ ছিলেন না।’ 

 ‘যদি যুবলীগের কেউ গিয়ে থাকেন, তাহলে তিনি ব্যক্তিগতভাবে গেছেন। এর দায় যুবলীগ নেবে না।’ বলেন হাসান তবিকুর রহমান চৌধুরী পলিন। 

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা (আরএমও) শাকির মুবাশ্বির বলেন, ‘বোরহানের মাথায় চারটি সেলাই পড়েছে। তাঁর সুস্থ হতে একটু সময় লাগবে।’ 

বদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুর রহমান বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। দুই পক্ষের মধ্যে একটু সমস্যা ছিল। তবে এখন পর্যন্ত (আজ বিকেল) আমি হাতে লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

এ বিষয়ে জানতে আজ বিকেলে রংপুর-২ (বদরগঞ্জ-তারাগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য আবুল কালাম মো. আহসানুল হক চৌধুরী ডিউককে কল দেওয়া হয়। তিনি বলেন, ‘আমি ওই ঘটনা সম্পর্কে কিছুই জানি না। কেউ আমাকে অভিযোগও করেননি। এখন ঢাকায় একটি মিটিংয়ে আছি, খোঁজ নিয়ে দেখব।’



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Screenshot_1.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: vorerpata24@gmail.com বার্তা ইমেইল:news@dailyvorerpata.com বিজ্ঞাপন ইমেইল:vpgmad@gmail.com