প্রকাশ: শনিবার, ২০ আগস্ট, ২০২২, ৩:৪৪ পিএম

চা-শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি নূন্যতম ৩০০ টাকা করার দাবিতে সংহতি সমাবেশের আয়োজন করেছে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন গৌরব ’৭১।
শনিবার (২০ আগস্ট) সকাল ১১টায় শাহবাগ প্রজন্ম চত্বরে এই সংহতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সংহতি সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের সাবেক ডিন ড. সাদেকা হালিম বলেন, গত ৯ আগস্ট থেকে চা শ্রমিকরা তাদের মজুরি ১২০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা করার দাবিতে আন্দোলন করছেন। গতকাল আমরা দেখেছি, একটি নির্মম ঘটনাও ঘটেছে। শ্রীমঙ্গলে একটি উপজেলায় চারজন চা শ্রমিক মাটি কাটতে গিয়ে নিহত হয়েছেন। অর্থাৎ তাদের জীবন কতটা মর্মান্তিক- এই ঘটনা আমাদের মনের মধ্যে একটি গভীর ক্ষত তৈরি করেছে।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সবসময় অবহেলিতদের পক্ষে কথা বলেছেন। এমনকি তিনি পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে যেসব নীতিমালাগুলো করেছেন, সকলক্ষেত্রে তিনি জনগণের কথাই বলেছেন।
তিনি বলেন, এই যে আমরা প্রতিনিয়ত চা পর্যটন শিল্প দেখতে যাচ্ছি। এটার ইতিহাস আছে। ঔপনিবেশিক যুগ থেকে চা শ্রমিকরা বংশ পরম্পরায় এখানে কাজ করেন। ব্যক্তিগতভাবে তাদের সাথে আমার মেশার সুযোগ হয়েছে। আমি দেখেছি তারা ৮/১২ হাতের ছোট্ট কুঁড়ে ঘরের মধ্যে সন্তান-সন্ততি নিয়ে জীবন যাপন করছেন। তারপরও তারা কোনো অংশেই কম মেধাসম্পন্ন নয়। কিন্তু যারা চা শিল্পের মালিক তারা সেই মধ্যযুগীয় মনোভাব পোষণ করেন এখনও। ১২০ টাকা মজুরি, এটি একরকম স্লেভারি (দাসত্ব)। অথচ এই চা শিল্পে আমরা পৃথিবীতে দশম স্থানে আছি।
ড. সাদেকা হালিম বলেন, শ্রমিকরা বলেন- আমরা ভালো চা উৎপাদন করি, কিন্তু তা কালোবাজারিতে চলে যাচ্ছে। এখানে রাষ্ট্রের একটি দায়বদ্ধতা আছে। আজকে নারী শ্রমিকের সংখ্যা তুলনামূলক কমে গেছে। যখন নারী শ্রমিকদের আন্দোলন হয়েছিলো, আমরা তাদের পাশে দাঁড়িয়েছি। তখন প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, শ্রমিকরা আটঘন্টা কাজ করবে এবং তাদের ন্যূনতম মজুরি প্রধানমন্ত্রী নিজেই ঠিক করে দিয়েছেন। চা শ্রমিকরা উনার প্রতি আস্থা রেখেছেন। কিন্তু শ্রমিকরা আটঘণ্টার বেশি সময় ধরে কাজ করে যাচ্ছেন অতিরিক্ত মজুরি পাওয়ার জন্য। যার কারণে তারা বিভিন্ন রোগ-শোকে পড়ছেন, নানা শারীরিক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। অনেকে বলেছেন, মানবিকভাবে তাদের মজুরি বাড়ানো হোক। আমি এই কথার সাথে একমত নই। এটা তাদের ন্যায্য দাবি। চা শ্রমিকরা যে এখন একতাবদ্ধ হয়েছেন, সেটা ভাঙারও একটা অপপ্রচেষ্টা করে যাচ্ছেন অনেকে। বিভিন্ন কনসালটেন্ট মিটিংয়ে দেখা যাচ্ছে, চা বাগানের মালিকরা বসে সেটাতে আধিপত্য বিস্তার করছেন। আমি সর্বোপরি চা শ্রমিকদের দাবির সাথে সংহতি প্রকাশ করে অবিলম্বে এই দাবি বাস্তবায়ন চাচ্ছি।