#শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে: বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুল মাবুদ। #বাংলাদেশ রূপান্তরের রোল মডেল শেখ হাসিনা: আফছার খান সাদেক। #শেখ হাসিনার আমলেই ঈর্ষণীয় সাফল্য এসেছে: আয়শা জাহান নূপুর।

আজকে শুধু বাংলাদেশ নয় পৃথিবীর সবাইকে জানানো দরকার আমরা আজ কোথায় এসেছি, কিভাবে এসেছি এবং কার নেতৃত্বে এসেছি। বাংলাদেশের যত উন্নয়ন তা শেখ হাসিনার অবদান। শেখ হাসিনা তাঁর পিতার মত অন্তর দিয়ে এ দেশের মানুষকে ভালোবাসে তাই যে কোনে অর্জন শেখ হাসিনা বাংলার মানুষকে উৎসর্গ করেন।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ৫৬২তম পর্বে বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) এসব কথা বলেন আলোচকরা। ভোরের পাতা সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের নির্দেশনা ও পরিকল্পনায় অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- সেক্টর কমান্ডার ফোরামের যুগ্ম মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুল মাবুদ, বহির্বিশ্বে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য প্রতিষ্ঠাতা, লন্ডন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আফছার খান সাদেক, কবি ও শিক্ষক আয়শা জাহান নূপুর। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সাবেক তথ্য সচিব নাসির উদ্দিন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুল মাবুদ বলেন, আজকে শুধু বাংলাদেশ নয় পৃথিবীর সবাইকে জানানো দরকার আজ আমরা কোথায় এসেছি, কিভাবে এসেছি এবং কার নেতৃত্বে এসেছি। আমরা যে দেশটা পেলাম সেই দেশটার আজ পঞ্চাশ বছর হলো। আমরা যদি সেই ১৯৪৭ সালের আগে যায় তখন এই ভূ-খণ্ডটি ব্রিটিশের অধিনে ছিল। ১৯৪৭ সালের দেশ ভাগের পরে দুটি ভূ-খণ্ডে ভাগ হলো একটি ছিল পাকিস্তান আরেকটি ভারত। পাকিস্তান আবার দুটি খণ্ডে বিভিক্ত ছিল। পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তান। তখন পূর্ব পাকিস্তানের বাসিন্দারা সব দিক থেকেই দলিত-পিড়িত ছিল। তখন সেন্ট্রালে যে অর্থ ভাগ হতো তার ২০% পেত পূর্ব পাকিস্তান আর ৮০% পেত পশ্চিম পাকিস্তান। এই বিষয়গুলো তখন আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান উপলদ্ধি করতে পারলেন এবং সেই তখন থেকেই পাকিস্তান থেকে বাঙলার মানুষকে তার ন্যায্য অধিকার দেওয়ার লক্ষে লড়াই সংগ্রাম চালিয়ে গেলেন। স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে শুরু করে দেশের রাজনীতির অনেক উত্থান-পতন ও বিবর্তনের সাক্ষী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে চলা এবং ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে নেতৃত্ব দেওয়া দল আওয়ামী লীগ; কিন্তু স্বাধীনতা এনে দেওয়ার পর বেশিদিন দেশের মাটিতে নিঃশ্বাস নিতে পারেননি স্বাধীনতার মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। স্বাধীন দেশের বুকেই ঘাতকের হাতে নির্মমভাবে নিহত হতে হয়েছে তাকে। এতেই ক্ষান্ত হয়নি ঘাতকরা। এরপরও অনেকবার অপশক্তির ছোবলে রক্তাক্ত হতে হয়েছে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশকে। বিভিন্ন সময় ধর্মীয় অপব্যাখ্যা দিয়ে সন্ত্রাসী হামলা ছাড়াও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডে বেঁচে যাওয়া বঙ্গবন্ধু কন্যা ও ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বহুবার হত্যাচেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু আল্লাহ্র রহমতে সব জায়গায় তিনি ঘাতকের হাত থেকে বেঁচে যান যার জন্য আজকের এই বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তীতে আমরা বঙ্গবন্ধুর কাক্সিক্ষত সোনার বাঙলার সুবিধা ভোগ করতে পারছি। অবকাঠামোখাতে বাংলাদেশের উন্নয়ন যেন রূপকথাকে হার মানায়। পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, এলিভেটেড এক্সপ্রেস, কর্ণফুলী টানেল আজ কল্পনা নয় বাস্তব। গ্রামীণ বাংলার মেঠো পথে আজ কংক্রিটের ছোঁয়া লেগেছে। শহরের সকল সুবিধা ধীরে ধীরে পৌঁছে যাচ্ছে গ্রামে। ভারত-মিয়ানমারের সাথে সমুদ্রসীমা জয় শেখ হাসিনার বুদ্ধিদীপ্ত কূটনীতির সুফল। শেখ হাসিনার জন্য লাল-সবুজের পতাকা আজ মহাকাশের অবস্থান পেয়েছে বঙ্গবন্ধু- ১ স্যাটেলাইটের মাধ্যমে। বাংলাদেশের বেকার সমস্যা সমাধানে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের অনুমোদন দিয়েছে শেখ হাসিনার সরকার। বাংলাদেশের যত উন্নয়ন তা শেখ হাসিনার অবদান। শেখ হাসিনা তাঁর পিতার মত অন্তর দিয়ে এ দেশের মানুষকে ভালবাসে তাই যে কোনে অর্জন শেখ হাসিনা বাংলার মানুষকে উৎসর্গ করেন।
আফছার খান সাদেক বলেন, স্বাধীনতা-পরবর্তী বাংলাদেশের রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহ জনগণকে জানান দেয় শেখ হাসিনার জন্ম কেন বাংলার মানুষের জন্য অত্যন্ত জরুরি। স্বাধীনতাপূর্ব ও পরবর্তী বাংলাদেশকে নিয়ে বঙ্গবন্ধু যে স্বপ্ন লালন করতেন, ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের কালো অধ্যায়ের পর তা স্বল্প সময়ের জন্য স্তম্ভিত হয়ে পড়ে। নবগঠিত বাংলাদেশকে বঙ্গবন্ধু যে আদর্শ, পরিকল্পনা ও স্বপ্নের ওপর দাঁড় করাতে চেয়েছিলেন, তা স্বাধীনতাবিরোধী ও একাত্তরের পরাজিত শক্তির কারণে বঙ্গবন্ধু সমাপ্ত করে যেতে পারেননি। জাতির পিতার অবর্তমানে বাংলাদেশের মানুষের জীবনমান উন্নয়নের কাণ্ডারি হিসাবে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিশ্বের বুকে উন্নয়নের রোল মডেল আজ বাংলাদেশ। সদ্য যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিজ দূরদৃষ্টির মাধ্যমে মাত্র ২ বছরের মধ্যে প্রায় ১৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি এনে দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে হয়ত এই উন্নয়ন আরো আগেই সম্ভব হতো। কিন্তু বাংলাদেশের উন্নয়নে ভীত হয়ে আন্তর্জাতিক চক্রান্ত ও দেশের অভ্যন্তরে থাকা খন্দকার মোশতাক-জিয়াউর রহমানদের বিশ্বাসঘাতকতার শিকার হন বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবার। এদের লক্ষ্য ছিল বঙ্গবন্ধু পরিবারের সকলে। কেননা তারা জানতো, এই পরিবারের যে কোন একজন বেঁচে থাকলে বাংলাদেশকে ধ্বংসের পরিকল্পনা সফল হবে না। কোনোভাবেই বাংলাদেশকে মৌলবাদী ও সন্ত্রাসী রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব হবে না। আজ সেই পরিবারের বড় কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে দ্রুত বর্ধমান অর্থনীতির দেশ। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতিকে তুলনা করা হচ্ছে গত শতকের সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ার অর্থনীতির সঙ্গে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে এমন কোন ক্ষেত্র নেই যার উন্নয়নে কাজ করা হয়নি।
আয়শা জাহান নূপুর বলেন, আমাদের এই দেশ বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরে যতগুলো সেক্টরে উন্নয়নের বিপ্লব সাধিত হয়েছে তার একমাত্র কারণ হচ্ছে আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্ব। তিনি অত্যন্ত দূরদৃষ্টি সম্পন্ন। আমাদের কি ছিল সেটা আমরা সকলেই জানি কিন্তু আমরা কোথায় গিয়ে পৌঁছাবো সেটা কিন্তু জানিনা। আমাদের যে সফলতার গল্প আছে সেটা যিনি আমাদের জন্য রেখে যাওয়ার প্রত্যয়ে কাজ করছেন তিনি আসলেই একজন ম্যাজিশিয়ান। বর্তমান সরকারের সময়ে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ, যোগাযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি, ক্রীড়া, পরিবেশ, কৃষি, খাদ্য, টেলিযোগাযোগ, সংস্কৃতি, সামাজিক নিরাপত্তা, মানবসম্পদ উন্নয়ন এমন কোনো খাত নেই যে খাতে অগ্রগতি সাধিত হয়নি। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে গত কয়েক বছরে দেশে অবকাঠামো উন্নয়ন, দারিদ্র্য বিমোচন, পুষ্টি, মাতৃত্ব এবং শিশু স্বাস্থ্য, প্রাথমিক শিক্ষা, নারীর ক্ষমতায়ন ইত্যাদি ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। যা দেশের গণ্ডি পেরিয়ে প্রশংসিত হয়েছে আন্তর্জাতিক মহলেও। শেখ হাসিনার সরকার শিল্পায়নের পাশাপাশি কৃষিতে সাফল্য দেখিয়েছে। বাংলাদেশ খাদ্যশস্য, মাছ ও মাংস উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় উঠে আসে জন্মের ৫০ বছরেরও কম সময়ের মধ্যে কীভাবে বাংলাদেশ দ্রুতগতিসম্পন্ন বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের মতো সফলতা দেখিয়েছে। উঠে আসে জাতির পিতা কীভাবে সমগ্র জাতিকে স্বাধীনতার জন্য একতাবদ্ধ করেছিলেন, যুদ্ধবিধ্বস্ত একটি দেশ থেকে কীভাবে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলায় পরিণত হতে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্ব, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা, এমডিজি অর্জন, এসডিজি বাস্তবায়নসহ শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, দারিদ্র্যসীমা হ্রাস, গড় আয়ু বৃদ্ধি, রফতানিমুখী শিল্পায়ন, ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল, পোশাক শিল্প, ঔষধ শিল্প, রফতানি আয় বৃদ্ধিসহ নানা অর্থনৈতিক সূচক।