জানা গেছে, ২০১৬ সালের ২৬ জুন থেকে ২০২০ সালের ২১ মার্চ পর্যন্ত আরবী বিভাগের চেয়ারম্যান ছিলেন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইউসুফ। পরে নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে অধ্যাপক ড. মো. আবদুল কাদির দায়িত্বগ্রহণের বেশ কিছুদিন পর বিভাগের সোনালী ব্যাংকে থাকা অ্যাকাউন্টের স্টেটমেন্ট সংগ্রহ করা হয়। সেখানে বিভিন্ন আর্থিক অসঙ্গতি ধরা পড়ে। বিষয়টি চেয়ারম্যান একাডেমিক কমিটির সভায় উত্থাপন করলে বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. যুবাইর মুহাম্মদ এহসানুল হক, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম, ড. মুহাম্মদ বেলাল হোসাইন ও বর্তমান চেয়ারম্যান ড. আবদুল কাদিরকে সমন্বয়ক করে চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি পুরো বিষয়টি যাছাই-বাছাই করে বিভাগের একাডেমিক কমিটিতে প্রতিবেদন জমা দেয় এবং সর্বসম্মতিক্রমে সেটি অনুমোদন পায়।
তদন্ত কমিটির শিক্ষকরা প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন, ২০১৬ সালের ২৬ জুন থেকে ২০২০ সালের ২১ মার্চ পর্যন্ত ড. ইউসুফের চেয়ারম্যান থাকাকালীন বিশ্ববিদ্যালয়ের সোনালী ব্যাংক শাখায় থাকা বিভাগের অ্যাকাউন্ট থেকে খরচের চেয়ে ২৬ লাখ ৪১ হাজার ৯১২ টাকা বেশি উত্তোলন করেছেন। সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউসুফ বিভাগের ফান্ড থেকে ২৬ লাখ ৪১ হাজার ৯১২ টাকা ‘তছরুপ’ করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং বিধি পরিপূর্ণভাবে অনুসরণ করে যাচাই-বাছাই করা হলে পাওনাদির পরিমাণ আরও বহুগুণে বাড়বে বলে মত দেন তাঁরা।
ড. ইউসুফের বিরুদ্ধে গুরুতর যে অভিযোগটি আনা হয়েছে সেটি হলো চেক ব্যবহারের মাধ্যমে টাকা তুলে তা বিভাগের হিসাব বইয়ে কোনো ধরনের রেকর্ড না রাখা। কমিটি ব্যাংক স্টেটমেন্ট থেকে ২১টি চেক নম্বর বের করেছে। এর কোন ধরনের রেকর্ড বিভাগে নেই। এর টাকার হিসেবে ১৭ লাখ ৮৮ হাজার টাকা। এর মধ্যে চেয়ারম্যান থাকার সময় ৪ লাখ ২০ হাজার টাকা পুনরায় বিভাগের অ্যাকাউন্টে জমা করেন। যদিও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী, বিভাগের অ্যাকাউন্টের অর্থ এ রকমভাবে স্থানান্তর করা যায় না বা নিজের প্রয়োজনে ব্যবহার করে পুনরায় জমা করা যায় না। সে টাকাটা বাদ দিলেও আরও ১৩ লাখ ৬৮ হাজার টাকা অবৈধভাবে নিজের কাছে রেখেছেন। ২৬ লাখ টাকার মধ্যে বাকি অর্থগুলো অনুমোদনহীনভাবে যোগাযোগ ভাতা, অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের বহন করা ব্যাগের অর্থ বিভাগের খরচে অন্তর্ভুক্ত করা, একাডেমিক কমিটির সভা না করে ব্যয় দেখানো, জেনারেটরের নামে ভুয়া বিলসহ বিভিন্নখাতে রয়েছে।
বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, অনিয়ম করার বিষয়টি জানাজানি হলে ড. ইউসুফ এক ধাপে ৪ লাখ ৪০ হাজার, আরেক ধাপে এক লাখ ৭১ হাজার, ১ লাখ ৬০ হাজার ও ৬৭ হাজার টাকা বিভাগের অ্যাকাউন্টে জমা দেন। সব মিলিয়ে ৮ লাখ ৩৮ হাজার টাকা ফেরত দেন।
ভোরের পাতা/কে