প্রকাশ: বুধবার, ১৪ জুলাই, ২০২১, ৪:৩৭ পিএম

করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া এক নারীর গোসলের জন্য যখন কাউকে পাওয়া যাচ্ছিল না, তখন তার গোসলের কাজে এগিয়ে গেলেন বগুড়া সোনাতলা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাদিয়া আফরিন।
বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান রিনা বেগম (৫৫) নামে ওই নারী। মঙ্গলবার (১৩ জুলাই) বিকেলে হাসপাতাল থেকে তার মরদেহ গ্রামের বাড়ি সোনাতলা উপজেলার জোড়গাছা ইউনিয়নের কুশাহাটায় নিয়ে যান স্বজনরা। কিন্তু করোনায় মারা যাওয়ায় মরদেহ গোসল করাতে রাজি হচ্ছিলেন না কেউ।
বিষয়টি জানতে পেরে মধ্যরাতে কুশিহাটা গ্রামে ছুটে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাদিয়া আফরিন। রাত ২টায় তিনি মৃত রিনা বেগমকে গোসল করিয়ে কাফন পরিধান করান। তারপর ১৫ জন মুসল্লি জানাজায় অংশ নেন।
জানা গেছে, সোনাতলা উপজেলার কুশিহাটা গ্রামের বাসিন্দা মোতালেব হোসেন ও তার স্ত্রী রিনা বেগম বেশ কয়েকদিন ধরে করোনা আক্রান্ত হয়ে নিজ বাড়িতে চিকিৎসাধীন ছিলেন। মঙ্গলবার সকালে বাড়িতে রিনা বেগমের অবস্থা গুরুতর হলে তাকে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকেল ৩টার দিকে রিনা বেগম মারা যান। মারা যাওয়ার পর তার মরদেহ নিয়ে স্বজনরা গ্রামের বাড়িতে আসেন।
এ সময় মরদেহ গোসল করানো নারীরা রিনা বেগমকে গোসল করাতে রাজি হননি। কেউ যখন রাজি হয় না এ খবর পৌঁছায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিয়া আফরিনের কাছে। খবর পেয়ে তিনি মধ্যরাতে কুশিহাটা গ্রামে রিনা বেগমের বাড়িতে রওনা হন। ওই বাড়িতে পৌঁছে রাত ২টার দিকে রিনা বেগমকে গোসল করিয়ে কাফন পরিয়ে দাফনের জন্য প্রস্তুত করে দেন সাদিয়া আফরিন। এরপর রিনা বেগমের জানাজায় অংশ নেন ১৫ জন স্থানীয় মুসল্লি।
এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিয়া আফরিনের সঙ্গে কুশিহাটা গ্রামে উপস্থিত ছিলেন সোনাতলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রেজাউল করিম রেজা, পরিদর্শক (তদন্ত) কামাল হোসেন, জোড়গাছা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রোস্তম আলী মণ্ডলসহ আরও অনেকে।
সোনাতলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিয়া আফরিন বলেন, করোনায় মৃত নারীকে কেউ জানাজার জন্য গোসল করাতে রাজি হচ্ছিল না, তার কোনো সন্তানও নেই। এ ছাড়া তার স্বামীও করোনায় আক্রান্ত ছিলেন। তখন আমি সেখানে গিয়ে গোসল করিয়ে দিই। এতে আমাকে এক বৃদ্ধা সহযোগিতা করেছেন।
ভোরের পাতা/কে