শিক্ষা ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণভাবে ডিজিটালাইজেশনে রূপান্তরিত করতে হবে: ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৩ জুলাই, ২০২১, ১১:৩৮ পিএম

আমরা সবাই মিলে আজকে যে বিষয়টা নিয়ে কথা বলতে হাজির হয়েছি সেটা নিয়ে এখন আলোচনা করা সময়ের দাবি। বর্তমানে আমরা যে সমস্যার সম্মুখীন হয়েছি তার থেকে উত্তরণ হওয়ার একমাত্র উপায় হচ্ছে এডপ্ট পলিসি নির্ধারণ করা। আমাদের সবাইকে একটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে যে করোনা পূর্ব পৃথিবীতে আর কখনোই ফিরে যাওয়া সম্ভব না। করোনায় শিক্ষার ব্যবস্থার কথা বলতে গিয়ে আমি শুরুতেই যে কথা বলতে চাচ্ছি সেটা হল গত দেড় বছর ধরে বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনা ও পরিকল্পনা অনুযায়ী সারা দেশে যে পরিমাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে সেক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি আলোচনা বা সমালোচনা হয়েছে যে বিষয়টিকে নিয়ে সেটা হচ্ছে শিক্ষা ব্যবস্থাকে নিয়ে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া নিয়ে যতবেশি নেগেটিভ আলোচনা হয়েছে ততবেশি আলোচনা কিন্তু আর কোন বিষয় নিয়ে হয়নি। আমাদের আর পুরানো অবস্থায় ফিরে যাওয়া সম্ভব নয়। এই অসহায় বিকল্প বা করুণ বিকল্পকে মেনে নিয়ে আমাদেরকে ডিজিটালাইজড হতেই হবে। এর বাইরে কোন পরিকল্পনা করা ছাড়া আমাদের কাছে আর কোন উপায় নেই। শিক্ষাখাতে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন আরও বাড়াতে হবে।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ৩৯৯তম পর্বে মঙ্গলবার আলোচক হিসেবে উপস্থিত হয়ে এসব কথা বলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক, জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ পরিষদের (জানিপপ) চেয়ারম্যান ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুরের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সরিফা সালোয়া ডিনা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আফজাল হোসেন। দৈনিক ভোরের পাতা সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সাবেক তথ্য সচিব নাসির উদ্দিন আহমেদ।
ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ বলেন, আমরা সবাই মিলে আজকে যে বিষয়টা নিয়ে কথা বলতে হাজির হয়েছি সেটা নিয়ে এখন আলোচনা করা সময়ের দাবি। বর্তমানে আমরা যে সমস্যার সম্মুখীন হয়েছি তার থেকে উত্তরণ হওয়ার একমাত্র উপায় হচ্ছে এডপ্ট পলিসি নির্ধারণ করা। আমাদের সবাইকে একটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে যে করোনা পূর্ব পৃথিবীতে আর কখনোই ফিরে যাওয়া সম্ভব না। আমাদেরকে এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করে করোনা উত্তোরণ পরিস্থিতিতে করোনাকালীন সময়ে যে প্রণীত রণকৌশল অবলম্বন করে এই পরিস্থিতি সামাল দিতে সক্ষম হয়েছি তা ভবিষ্যতে ধরে রাখা এবং চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য আমাদের প্রস্তুত হওয়া এবং এটি অবশ্যই ডিজিটাইলেজশনে হতে হবে। এনালগ মাইন্ড সেটআপ থেকে আমাদের বেড়িয়ে আসতে হবে। আমাদেরকে স্থায়ীভাবে ডিজিটাল ব্যবস্থায় নিজেদেরকে উন্নীত করতে হবে। গত বছরের ফেব্রুয়ারি-মার্চ হতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো করোনা মহামারির কারণে বন্ধ হতে শুরু করে। দীর্ঘ এক বছরেরও বেশি সময় ধরে আমাদের দেশেও সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। গুটিকয়েক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইংরেজি শিক্ষা মাধ্যম স্কুলগুলো শুরু হতে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে নিলেও পরবর্তীতে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো অনলাইনের মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম চালু করতে থাকে। তবে সব পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় শতভাগ শিক্ষার্থী ক্লাস রুমের শিক্ষা থেকে বঞ্চিত রয়েছে। তাই আমাদের অনলাইন পাঠদান ও অনলাইন পরীক্ষা গ্রহণ কমপ্রিহেনসিভ ভাবে নিশ্চিত করতে হবে। এটা সাময়িক ব্যবস্থা হিসেবে গ্রহণ করলে চলবে না। সেজন্য যেখানে যতটুকু প্রয়োজন সেটাকে আমাদের রাষ্ট্রকে নিশ্চিত করতে হবে। আমরা ভর্তুকি নানান ক্ষেত্রে দিয়ে থাকি, এখানে শিক্ষা সব থেকে বড় ক্ষেত্র হতে পারে। আমাদের সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠরত শিক্ষার্থীরা এক পর্যায়ের হয় না। সে বাস্তবতাটা মাথায় আমাদের বিষয়ভিত্তিক সমাধানে আসতে হবে। এবং এই ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ইউজিসি এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে একযোগে টিম হিসেবে কাজ করতে হবে। আমাদের ভুলে গেলে চলবে না একেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে একেক রকম ফের আছে। যেমন আমাদের বেগম রকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়, হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি রিলেটেড বিশ্ববিদ্যালয়। আবার ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এটি বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয়। আবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আরও গোটা কয়েক বিশ্ববিদ্যালয় মিলে ৭৩ অধ্যাদেশ অনুসারে পরিচালিত হয়। অতএব আমাদেরকে এখনি শিক্ষা ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণরূপে ডিজিটাইলেজেশনে রূপান্তরিত করতে হবে।
ভোরের পাতা/পি