প্রকাশ: শনিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১০:২৪ পিএম
বাংলাদেশের জন্মের আগে থেকেই ষড়যন্ত্র চলে আসছে। এখনো কিন্তু ষড়যন্ত্র চলছে। শুধু আল জাজিরাই নয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আরও একটি গণমাধ্যম এ বিষয়ে নানা ধরণের গুজব প্রচার করছে। সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে নানা ধরণের প্রোপাগান্ডা প্রচার করেছে। বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি শরিফুল হক ডালিম, নূর চৌধুরী, রাশেদ চৌধুরী ও মোসলেহ উদ্দিনের রাষ্ট্রীয় খেতাবও বাতিলের সুপারিশ করা হয়েছে। জিয়াউর রহমানসহ এই পাঁচজন এবং তাদের পরিবার মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য কোনো ধরনের রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা পাবেন না।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ২৪৯তম পর্বে শনিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) আলোচক হিসাবে উপস্থিত হয়ে এসব কথা বলেন নিরাপত্তা বিশ্লেষক ও সামরিক গবেষক মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুর রশিদ, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর এর উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক। দৈনিক ভোরের পাতা সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সিনিয়র রিপোর্টার উৎপল দাস।
সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক বলেন, ষড়যন্ত্র তো সেই একাত্তর সাল থেকেই শুরু হয়েছে। আমাদের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি যার নেতৃত্বে আমরা মহান মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীনতা লাভ করি, যে মুজিব সহস্র সংগ্রামের মাধ্যমে এই আওয়ামী লীগকে তিলে তিলে গড়ে তুলেছেন সেই মহা মানবই কিন্তু আমাদের এই ভাষার মাসের মূল আন্দোলন শুরু করেন। তার পর আস্তে আস্তে নানা সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত হয় এবং শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আমরা স্বাধীন বাংলা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করি। তারপর ১৯৭৫ সালের আমাদের জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করার পর এই ষড়যন্ত্রের মূল বীজ বপন করা হয়। আজ যার খেতাব নিয়ে কথা হচ্ছে তিনি তো ৭৫'র পরবর্তী সময়ে জিয়াউর রহমান শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী বানিয়েছেন, আব্দুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি বানিয়েছেন। এই জিয়াউর রহমানের পত্নী বেগম জিয়া নিজামিসহ আরও অনেক যুদ্ধাপরাধীদের গাড়িতে আমাদের বাংলাদেশের পতাকা লাগিয়ে বাংলাদেশের অবমাননা করেছেন। হাজার শহীদের বিনিময়ে আমাদের এই অর্জিত পতাকা তারা তুলে দিয়েছিলেন এই যুদ্ধাপরাধীদের গাড়িতে। তখন থেকেই তো ষড়যন্ত্র হয়েছে। জিয়া বঙ্গবন্ধু এবং জাতীয় চার নেতাসহ মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিল, পরে হত্যাকারীদের পুরস্কৃত করেছিল। তেমনই খালেদা জিয়াও একইভাবে একই কাজ করেছিল। বুদ্ধিজীবী হত্যার সাথে জড়িত সেই নিজামী-মুজাহিদদের মন্ত্রী করে তাদেরকে পুরস্কৃত করেছিল। আসলে বাংলার ইতিহাসে প্রত্যেকটি রন্ধে রন্ধে এই সকল কুচক্রীরা ধাপে ধাপে এইসকল ষড়যন্ত্র করেছে এবং এখনো তারা সক্রিয় আছে। স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তির প্রাক্কালে জিয়াউর রহমানের রাষ্ট্রীয় সে খেতাবটি বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা)। গত ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১ জামুকার ৭২তম সভায় একই সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি শরিফুল হক ডালিম, নূর চৌধুরী, রাশেদ চৌধুরী ও মোসলেহ উদ্দিনের রাষ্ট্রীয় খেতাবও বাতিলের সুপারিশ করা হয়েছে। জিয়াউর রহমানসহ এই পাঁচজন এবং তাদের পরিবার মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য কোনো ধরনের রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা পাবেন না। বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত ও দণ্ডপ্রাপ্ত খুনিদের খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়েছে। পাশাপাশি ওই হত্যাকাণ্ডে মদদ দেয়ার কারণে জিয়াউর রহমানের খেতাবও বাতিলের সিদ্ধান্তকে আমি মনে করি এটা আসলেই একটা যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত।