রবিবার ৭ ডিসেম্বর ২০২৫ ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

শিরোনাম: তফশিল ঘোষণার তারিখ এখনো ঠিক হয়নি: ইসি সচিব   প্রশাসনিক ক্যু করে ক্ষমতায় যাওয়া আর হয়ে উঠবে না: জামায়াত আমির   মোংলা পৌর জিয়া মঞ্চের সভাপতি সালাম, সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর; সাংগঠনিক পদে সমালোচনার ঝড়   ১৫ দল নিয়ে ‘মানবতার জোট’র আত্মপ্রকাশ   বাণিজ্যিক আদালত দেশের অর্থনীতিতে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে: প্রধান বিচারপতি   টাঙ্গাইলে ইসলামী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত   নির্বাচনে জনগণই তাদের ভোট পাহারা দেবে: সালাহউদ্দিন আহমদ   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
জুলাই সনদ কী, কেন এত আলোচনা
ভোরের পাতা ডেস্ক
প্রকাশ: রবিবার, ৬ জুলাই, ২০২৫, ৮:৪৯ পিএম

জুলাই সনদ ঘোষণা করতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গত কয়েকমাস ধরে দফায় দফায় আলোচনার পরও মৌলিক অনেক বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য দূর করা যায়নি বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

তবে জুলাই সনদ আসলে কী, কেন এ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মতবিরোধ, অন্যদিকে জুলাই সনদ ও জুলাই ঘোষণাপত্রের মধ্যে পার্থক্য কী-এসব প্রশ্ন এখন আলোচনায় আসছে।

কমিশন দাবি করছে, কয়েক দফার আলোচনায় এরই মধ্যে বেশ কিছু সংস্কার প্রস্তাবে ঐকমত্যে পৌঁছেছে রাজনৈতিক দলগুলো। তবে, এখনো আনুপাতিক নির্বাচন ব্যবস্থা, জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল বা এনসিসি গঠনসহ বেশ কিছু সাংবিধানিক সংস্কার প্রস্তাবে দলগুলোর মধ্যে নানা মতবিরোধও দেখা দিচ্ছে। 

ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, মত ভিন্নতা থাকলেও এই মাসের শেষ নাগাদ দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতে তারা জুলাই সনদ চুড়ান্ত করবে।

তবে, এখনো বেশ কিছু বিষয়ে ঐকমত্য না হওয়ায় সময়মতো জুলাই সনদ তৈরি নিয়ে শঙ্কা দেখা যাচ্ছে। কমিশন ঘোষিত সময়ের মধ্যে জুলাই সনদ না হলে আগামী ৩ অগস্ট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ছাত্র-জনতার উপস্থিতিতে জুলাইয়ের ইশতেহার ও ঘোষণাপত্র প্রকাশের কথাও বলছে এনসিপি।

এমন প্রশ্নে ঐকমত্য কমিশন বলছে, জুলাই ঘোষণাপত্র ও জুলাই সনদ দুটি একেবারেই আলাদা বিষয়। কেননা সব দলের ঐকমত্যের ভিত্তিতে যে সনদ বা সংস্কার প্রস্তাবনা তৈরি হবে, সেটি জুলাই সনদ বা জাতীয় সনদ।

ঐকমত্য কমিশন আরও বলছে, জুলাইয়ের ঘোঘণাপত্র তৈরির কাজ ঐকমত্য কমিশনের নয়, সেটি সরকার ও রাজনৈতিক দল মিলে করবে। শুধুমাত্র জুলাই সনদ প্রস্তুত করবে ঐকমত্য কমিশন।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছরের পাঁচই অগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর গণঅভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ৩১ ডিসেম্বর জুলাই প্রোক্লেমেশন বা গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র প্রকাশ করতে চেয়েছিল। পরে অবশ্য অন্তর্বর্তী সরকারের আশ্বাসে সেই অবস্থান থেকে সরে আসে শিক্ষার্থীরা। পরে সরকারের পক্ষ থেকে জুলাই সনদ ও জুলাই ঘোষণাপত্র দেওয়ার কথাও বলা হয়েছিল।

গত ৬ জুন জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনুস বলেন, জুলাই সনদ হলো একটি প্রতিশ্রুতি। একটা জনকল্যাণমুখী রাষ্ট্র নির্মাণের জন্য সংস্কার কমিশন যে প্রস্তাবগুলো দিয়েছে, সেগুলোর মধ্য থেকে রাজনৈতিক দলগুলো যে কটিতে একমত হয়েছে, তার তালিকা থাকবে এই সনদে।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর রাষ্ট্র সংস্কারে যে ১১টি কমিশন গঠন করে, সে সব কমিশনের প্রস্তাবগুলো নিয়ে গত কয়েক মাস ধরে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে ধারাবাহিক সংলাপ করছে ঐকমত্য কমিশন। এতে সংবিধান, নির্বাচন ব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন, দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার সংক্রান্ত মোট ১৬৬টি সুপারিশ রাজনৈতিক দলগুলোর ধারাবাহিক বৈঠক করে ঐকমত্য কমিশন। ঐকমত্য কমিশনের সাথে ধারাবাহিক এই আলোচনায় বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপিসহ ৩০টি রাজনৈতিক দল অংশ নেয়।

ঐকমত্য কমিশন জানিয়েছে, এসব প্রস্তাবনার মধ্যে ৮০টিরও বেশি প্রস্তাবনায় সামগ্রিকভাবে ঐকমত্যে পৌঁছেছে রাজনৈতিক দলগুলো। পরবর্তীতে গুরুত্বপূর্ণ আরও ২০টির মত প্রস্তাবনা চিহ্নিত করে সেগুলো নিয়ে আলোচনা এখনো চলছে।

ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ওই ২০টির মধ্যে এখন পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পাঁচটি বিষয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা হয়েছে। বাকি প্রায় ছয় থেকে সাতটি বিষয় আমরা আলোচনা করেছি যেগুলো এখন পর্যন্ত আমরা কোন সিদ্ধান্তে আসতে পারিনি।

ঐকমত্য কমিশন বলছে, গুরুত্বপূর্ণ এইসব প্রস্তাবে বড় রাজনৈতিক দলগুলোকে রাজি করানোর পর এগুলো নিয়েই তৈরি হবে জুলাই সনদ।

ঐকমত্য কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আমাদের এখন কতগুলো মৌলিক বিষয়ে ঐকমত্য দরকার। তা না হলে আবারো স্বৈরাচারের পুনরুত্থান আমরা ঠেকাতে পারবো না। 

অবশ্য ঐকমত্য কমিশন চূড়ান্ত সংস্কার প্রস্তাবকে আপাতত জুলাই সনদ বললেও শেষ পর্যন্ত এটির নাম পরিবর্তনের ইঙ্গিতও দিয়েছে।

অধ্যাপক রীয়াজ বলেন, এটা আসলে জাতীয় সনদ। আবার জুলাই সনদ এই অর্থে, যাতে জুলাই সনদ বললে আগামীতে বোঝা যাবে ২০২৪ জুলাইয়ে কি ঘটেছিল, যার প্রেক্ষিতে এই সনদ করতে হয়েছে। তবে জাতীয় কিংবা জুলাই সনদ যে নামই থাকুক না কেন এই সনদ আগামী দিনে দেশের রাজনীতিতে মাইলফলক হিসেবেই থাকবে।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা অবশ্য এই সনদকে চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের দালিলিক ভিত্তি হিসেবেই দেখছেন।

এ বিষয়ে বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমদ বলেন, জুলাই আমাদের যে বার্তা দিল, সেটার একটা দলিল থাকা দরকার। সে জন্য জুলাই সনদ থাকা জরুরি।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://dailyvorerpata.com/ad/af.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: vorerpata24@gmail.com বার্তা ইমেইল:news@dailyvorerpata.com বিজ্ঞাপন ইমেইল:vpgmad@gmail.com