আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে টানানো হয়েছে ‘জুলাই যোদ্ধাদের প্রধান কার্যালয়’ লেখা ব্যানার। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর গুলিস্তানে শহীদ আবরার ফাহাদ এভিনিউয়ে (সাবেক বঙ্গবন্ধু এভিনিউ) নিষিদ্ধঘোষিত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এই চিত্র দেখা যায়। তবে কে বা কারা এটি টানিয়েছে তা জানা যায়নি।
গতকাল সরেজমিনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের গিয়ে দেখা যায়, ভবনের বাইরের দেয়ালে দুটি ব্যানার ঝুলছে।
ব্যানার দুটিতে লেখা—‘জুলাই যোদ্ধাদের প্রধান কার্যালয়’। দুটি ব্যানারের একটিতে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে রংপুরে শহীদ আবু সাঈদ ও ঢাকায় শহীদ মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধের ছবি রয়েছে। ঠিকানায় ২৩ শহীদ আবরার ফাহাদ এভিনিউ, মতিঝিল, ঢাকা লেখা। আরেকটি ব্যানারে জুলাই যোদ্ধাদের প্রধান কার্যালয় ও ঠিকানা লেখা রয়েছে।
ব্যানার দুটি সম্পর্কে জানতে ভবনটির আশপাশের প্রতিষ্ঠানগুলোর লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত বুধবার কয়েক শ লোক একটি গরু ও দুটো খাসি নিয়ে মিছিল করতে করতে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয়। এরপর তারা এখানেই এগুলো জবাই করে রান্না করে। রাতে সবাইকে খিচুড়ি খাওয়ানো হয় ও মিলাদ পড়ানো হয়। মিলাদ শেষে আগতদের মধ্যে একদল এই ব্যানারটি লাগিয়ে দিয়ে যায়।
আশপাশের প্রতিষ্ঠানগুলোর লোকজন জানায়, সেদিন যারা এসেছিল তাদের কাউকেই এই এলাকায় বা কার্যালয় ব্যবহার করতে দেখা যায়নি। ওই দিন পর্যন্ত কার্যালয়টি যেভাবে গণশৌচাগার হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে এখনো সেভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। শুধু ব্যানার দুটি টানানো রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ১৪ মে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। সেই ভিডিওতে দেখা যায়, জুলাই যোদ্ধা পরিচয়দানকারী একদল লোক আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে এবং এখন থেকে এটিকে তারা তাদের কেন্দ্রীয় কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করবে বলে ঘোষণা দিচ্ছে।
সে সময় নিষিদ্ধঘোষিত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ভবনে জুলাই যোদ্ধাদের প্রধান কার্যালয় লেখা একটি ব্যানারও টানানো হয়। যেখানে ঠিকানা হিসেবে ২৩ আবরার ফাহাদ এভিনিউ উল্লেখ রয়েছে।
এদিকে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সঙ্গে যুক্ত ৮০টি সংগঠন মিলে জুলাই ঐক্য তৈরি করেছে। এই জুলাই ঐক্যে জুলাই যোদ্ধা নামে কোনো সংগঠন নেই বলে জানিয়েছেন জুলাই ঐক্যের একটি সংগঠন জুলাই ইউনিটির অন্যতম সংগঠক মোসাদ্দেক আলী ইবনে মোহাম্মদ। কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, ‘আমাদের জুলাই ঐক্যে জুলাই যোদ্ধা নামে কোনো সংগঠন নেই। আমরা কখনো এই নামও শুনিনি। আজকে আপনাদের থেকে এই নাম শুনতে পাচ্ছি। আমরা খোঁজ শুরু করেছি। গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ভবনে আগুন দেওয়া হয়েছিল। এরপর আগস্টজুড়ে চলে লুটপাট। তখন থেকে বহুতল ভবনটি অনেকটা পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। স্থানীয়রা ভবনটির নিচতলা গণশৌচাগার হিসেবে ব্যবহার করছে।’