
চান্দিনা থানায় গ্রেফতার প্রক্রিয়ায় এক নতুন ধাঁধা! কুমিল্লার রাসেল, যিনি পেশায় ড্রাইভার হলেও সমকণ্ঠ পত্রিকার স্ট্যাফ রিপোর্টার মনিরুল ইসলামের জন্যে মাইক্রোকার চালক ও পরিচালক হিসেবে নিযুক্ত, তার সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনাকে কেন্দ্র করে থানায় এস আই – মিথুন কুমার মন্ডলের অভিযোগে আসামির স্ত্রীর ওপর কূ-প্রস্তাবের অভিযোগ উঠেছে।
ঘটনার খুঁটিনাটি:
গত ৭ মার্চ সন্ধ্যায়, কুমিল্লার রাসেলের পরিচালিত মাইক্রোকারে কিছু যাত্রী নির্দিষ্ট ভাড়ার বিনিময়ে গন্তব্যে যাতায়াতের জন্য অনুরোধ জানান। তবে রাস্তার প্রতিবন্ধকতার কারণে যাত্রাপথে অনেক রাত পেরিয়ে, অবশেষে স্থানীয় কিছু লোকের সন্দেহের সামনে পড়ে যান যাত্রীগণ। প্রশ্নোত্তরের অযোগ্য উত্তরের কারণে স্থানীয়রা পাঁচজনকে উত্তম মাধ্যম ব্যবহারে আটক করে থানায় হস্তান্তর করে।
থানায় এস আই মিথুন কুমার মন্ডলের জিজ্ঞাসাবাদে যাত্রীগণ প্রত্যাখ্যানে ফেঁসে যাওয়ার সাথে সাথে, ড্রাইভার রাসেলকেও সন্দেহের আওতায় এনে আটক করার আইনি প্রক্রিয়া শুরু করা হয়। ঘটনার খবরে আরও চোখে পড়ে, রাসেলের স্ত্রী, তানজিলা, যখন অবিলম্বে থানায় পৌঁছে তাকে দেখতে পান, তখন পুলিশের পক্ষ থেকে তারও একটা চমকপ্রদ দাবির সম্মুখীন হতে হয়।
অপ্রত্যাশিত দাবির আঁধারে:
রাসেলের স্ত্রীকে পুলিশের এস আই মিথুন কুমার মন্ডল জানান, তিনি ২ লক্ষ টাকা ঘুষ দাবী করছেন। যদি টাকা প্রদান না করা যায়, তাহলে তাকে দুই রাত তাঁর সাথে থেকে “অনৈতিক কাজ” করার প্রস্তাব দেয়ার হুমকি দেন – এবং আরও জানান, “যদি এই কথা বাইরে প্রকাশ পায়, তাহলে তোমাকেও তোমার স্বামীর মতো মিথ্যা মামলায় জেলে ঢুকিয়ে দেব”। ভয় ও হতাশায় কান্নায় ভেঙে পড়া তানজিলা অবশেষে তার বৃদ্ধ শশুরকে নিয়ে থানার বাইরে চলে যান।
মামলার কুয়াশা ও নতুন প্রশ্ন:
টাকার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায়, রাসেলকে আদালতে প্রেরণ করে দেওয়া হয়। আকস্মিকভাবে, তাকে অভিযোগে মামলার বাদী না হওয়ায়, ১ বছর পূর্বে ঘটিত সিএনজি চুরি মামলার আসামী হিসাবে দেখানো হয় – যার ঘটনা নিজেও অবাঞ্চিত ও সন্দেহের। প্রশ্ন উঠছে, পাঁচজন আসামির মধ্যে মাত্র দুজনকে কেন আদালতে প্রেরণ করা হলো? বাকী আসামিরা কোথায়? কেন রাসেলের স্ত্রীকে কূ-প্রস্তাব দেওয়ার প্রচেষ্টা চালানো হলো?
এসআই মিথুনের কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে, তিনি অভিযোগগুলোকে “সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট” বলে অস্বীকার করেন। রাসেলকে কেনো ১ বছর আগের পুরোনো মামলায় গ্রেফতার দেখানো হলো – সে বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না বলে মন্তব্যের আশ্রয় নেন।
অন্যদিকে, যখন কোন উৎস থেকে জানতে চাইলে, “সদ্য নারী কেলেংকারিতে বদলি হয়ে ওসি মোঃ নাজমুল হুদা” নামক কর্মকর্তার কথা উল্লেখ করা হলো, তবে সে বিষয়ে স্পষ্ট কিছু বলা এড়িয়ে যাওয়া হয়। চূড়ান্তভাবে, চান্দিনা থানার বর্তমান ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাও বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন – তথাপি আসল সত্য প্রকাশিত হয়নি।
চান্দিনা থানার এই ঘটনায় পুলিশ ব্যবস্থার দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও নারী নিরাপত্তার হুমকি স্পষ্ট প্রতিফলিত হয়েছে। প্রশ্ন উঠছে – কি কি কারণের ভিত্তিতে এ ধরনের প্রক্রিয়া পরিচালিত হচ্ছে? থানার প্রশাসনিক কাঠামোতে কি এখনো আঘাতক্ষতির বীজ রয়ে গেছে?
এই অভিযোগ ও ঘটনার প্রেক্ষিতে, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার দাবি করা হচ্ছে। জনসাধারণ ও ন্যায়বিচারের পক্ষ থেকে স্পষ্ট ও দ্রুত তদন্তের প্রত্যাশা অব্যাহত রয়েছে।