
মো. সেলিম। গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জে। চাকরি করছেন ঢাকা উত্তরের কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট অফিসের গুলশান সার্কেল-৪ এ। অফিস সহায়ক পদে। তাও আবার অস্থায়ী ভিত্তিতে। দিনপ্রতি ৬০০ টাকা বেতনে।
তার প্রভাব বলয় এতটাই ঊর্ধ্বগামী যে, ঝাড়ুদার থেকে কমিশনার সব যেন তার নখদর্পণে। পুরো কর সার্কেলজুড়ে কায়েম করেছেন নিজস্ব বলয়। এ যেন ধরাকে সরাজ্ঞান করার মতো অবস্থা।
ভোরের পাতার দীর্ঘ অনুসন্ধানে উঠে এসেছে এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, সামান্য ৬০০ টাকা বেতনের চাকুরে হয়েও গড়ে তুলেছেন অঢেল সম্পদের পাহাড়। নামে-বেনামে কিনেছেন একাধিক বিলাসী ফ্ল্যাট।
সেসব সম্পদের পুরোপুরি সবিস্তার বর্ণনাসহ অনুসন্ধানী প্রতিবেদন পড়তে চোখ রাখুন ভোরের পাতায়।
অনুসন্ধান আরো বলছে, ভ্যাটের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের মনোরঞ্জনের জন্য রাজধানীর গুলশান-বনানীর অভিজাত এলাকায় পাঁচ তারকা হোটেলের সুইট বুক করা তার নিত্য-নৈমিত্তিকার কাজ। যার একটি ভয়েজ রেকর্ড এসেছে ভোরের পাতার কাছে।
সর্বোচ্চ পদে আসন্ন কর্তাদের স্ত্রী ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যের জন্মদিনে বিনামূল্যে খাবার ও উপহারসামগ্রী সরবরাহ করেন তিনি। যার একাধিক ছবি সংরক্ষিত রয়েছে এই প্রতিবেদকের কাছে।
একটি বিশেষ সূত্রের বরাত, কর্মকর্তাদের সাথে ব্যবসায়ীদের অর্থ লেনদেনের মাধ্যম হিসেবে কাজ করেন সেলিম। ভ্যাটের পুরো সার্কেলজুড়ে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে রয়েছে তার নাম।
সূত্রটি আরো জানায়, শুধু ব্যবসায়ী বা ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে মধ্যস্থতাকারী নয়, জিম্মি করে ঘুষ আদায়ে ভ্যাটের যেকোনো কর্মকর্তার কাছে তিনি পরিচিত।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে মুঠোফোন নাম্বারে ভোরের পাতার পক্ষ থেকে কাস্টম এক্সাইজ ও ভ্যাটের গুলশান সার্কেল-৪ এর অফিস সহায়ক সেলিমের সাথে কথা বলার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু বিধিবাম, ঘটনার প্রেক্ষাপট যায় পাল্টে।
এদিকে, এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ না করতে রাজধানীর একটি থানার ভারপ্রাপ্ত পদমর্যাদার এক কর্মকর্তাকে দিয়ে ভোরের পাতার এক উচ্চপদস্থকে ফোন করা হয়।
সার্বিক বিষয় নিয়ে সরাসরি কথা হয় ঢাকা উত্তরের কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট অফিসের গুলশান সার্কেল-৪’র সহকারী কমিশনার ফয়সাল বিন রহমানের সাথে। তার কাছে প্রশ্ন ছিল ৬০০ টাকা গড় হাজিরার একজন অফিস সহায়ক কীভাবে এত সম্পদের মালিক হন। বিষয়টি শুনে তিনিও অনেকটা হতবাক বনে যান। বলেন, এটা কী করে সম্ভব? তবে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।