
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে আবারো শুরু হয়েছে অবৈধ দখলদারদেরকে উচ্ছেদ অভিযান কার্যক্রম।
গতকাল মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বিকাল থেকে জেলার সোনারগাঁও উপজেলার প্রাণকেন্দ্র মোগরাপাড়া চৌরাস্তা বাস স্ট্যান্ডে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে এ অভিযানের কাজ শুরু করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা রহমান। উচ্ছেদ অভিযান চলে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত।
এদিকে মঙ্গলবার উচ্ছেদের সময় বিভিন্ন দোকানে থাকা মালামাল সরাতে ব্যবসায়ীরা সময় চাওয়ায় উচ্ছেদ কার্যক্রম স্থগিত করে বুধবার থেকে আবারও এ কার্যক্রম চলবে বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। এ সময়ের মধ্যে সকলকে স্বস্ব জিনিসপত্র সরিয়ে নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে আবারও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দুই পাশে উচ্ছেদ অভিযান চালায় উপজেলা প্রশাসন। এ সময় অভিযানের নেতৃত্ব দেন উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি মঞ্জুর মোর্শেদ। সাথে ছিলেন সোনারগাঁও থানা পুলিশ, কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশ, আনসার সদস্যসহ উপজেলা ভূমি অফিসের কর্মচারী ও স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মী।
উপজেলার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দুই পাশে সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের জায়গা দখল করে তিনটি কাঁচাবাজারসহ কমপক্ষে দুই হাজারের অধিক অবৈধ দোকানপাট গড়ে তুলে স্থানীয় প্রভাবশালীরা। যা থেকে মাসে কোটি টাকা চাঁদাবাজী করার অভিযোগ দীর্ঘ দিনের। আর স্থানীয় প্রভাবশালীদের সাথে গোপন আঁতাতে মাসোয়ারা পেয়ে থাকেন সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তর, থানা পুলিশ এবং হাইওয়ে পুলিশের কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী।
এদিকে অবৈধ উচ্ছেদ অভিযানে সরেজমিনে গেলে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা জানায়, থানা পুলিশ বা হাইওয়ে পুলিশের নতুন কর্মকর্তারা সোনারগাঁওয়ে যোগদান করলে কিছুদিন পর পর অবৈধ দোকানপাট নামকাওয়াস্তে উচ্ছেদ অভিযান চালায়। ফলে বিভিন্ন ঋণদানকারী সংস্থা থেকে ঋণ নেওয়া ব্যবসায়ীরা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
তারা জানান, উপজেলা প্রশাসন একদিকে তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভেঙে গুড়িয়ে দিয়ে যান অপরদিকে, প্রভাবশালীরা আগের চেয়ে বেশি দামে দোকান দিতে উঠে-পড়ে নামেন। কোন জায়গায় আগে ব্যবসা করা ব্যবসায়ী তাদের চাহিদানুযায়ী টাকা দিতে না পারলে অন্যব্যক্তিদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে জায়গা দিয়ে থাকেন।
ব্যবসায়ীরা জানান, জায়গার অগ্রিম বাবদ কমপক্ষে দুই লাখ টাকা থেকে ১০ লাখ টাকা আর দৈনিক কমপক্ষে ১০০ টাকা থেকে ১২শ টাকা ভাড়া বাবদ আদায় করা হয়।
তাদের (ব্যবসায়ী) দাবি, কিছুদিন পরপর লোক দেখানো উচ্ছেদ অভিযান না করে মহাসড়কে যানবাহন নির্ভিঘেœ চলাচল ও ব্যবসায়ীদের জন্য স্থায়ীভাবে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা রহমান দৈনিক ভোরের পাতাকে বলেন, আমি এর আগেও এইখানে উচ্ছেদ করেছি। উচ্ছেদের পর নতুন করে বসতে টাকা নেওয়ার বিষয়টি আমার জানা ছিল না, আপনার কাছ থেকেই শুনেছি। যদি এমন ঘটনার প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যারা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী তাদের জন্য স্থায়ীভাবে কিছু করার চিন্তাভাবনা চলছে। আমরা চেষ্টা করব স্থায়ীভাবে কিছু করার।