শনিবার ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১ ফাল্গুন ১৪৩১

শিরোনাম: বাংলাদেশ নিয়ে ভারতের ষড়যন্ত্র এখনো চলমান   বাড়িতে আগুন : এখনো তদন্ত না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে যা বললেন কাফি   দেশে ফিরলেন প্রধান উপদেষ্টা   শেখ হাসিনার বিচার না করলে মানুষ আমাদের ক্ষমা করবে না : ড. ইউনূস   বাংলাদেশ ইস্যুতে ট্রাম্পের বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিলেন আসিফ নজরুল   যুদ্ধবিমান বিক্রির প্রস্তাব ট্রাম্পের, শিগগিরই লাভজনক বাণিজ্য চুক্তির কথা বললেন মোদি   আমিরাত সফর শেষে দেশের পথে প্রধান উপদেষ্টা   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
কৃষকের কাজে আসছে না সাড়ে ৫’শ কোটি টাকার প্রকল্প
ফেনী প্রতিনিধি
প্রকাশ: বুধবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২৫, ৭:৩৪ AM

বৈদ্যুতিক পাম্পের সাহায্যে প্রিপেইড মিটার ব্যবস্থায় ভূগর্ভস্থ পাইপলাইনের মাধ্যমে খাল থেকে জমিতে সেচের পানি সরবরাহ পদ্ধতি চালু করতে, পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় ফেনীতে মুহুরী সেচ ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়।

এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক এডিবির ৫৬২ কোটি ৬৯ লাখ টাকা অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলেও কৃষকরা বলছেন কোনো কাজেই আসছে না এই প্রকল্প বরং কৃষকের খরচ বেড়েছে আগের চেয়ে বেশি।

মাঠে অবকাঠামো থাকলেও স্কিমগুলো কেন অকেজো হয়ে আছে তার সদুত্তর দিতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।
আগস্টের বিপর্যয়কর বন্যায় ফসলের এই মাঠে বুক পরিমাণ পানি থাকলেও এখন শুকিয়ে চৌচির। পানির অভাবে কৃষক আবাদ করতে পারছে না ধান-ফসল।

কৃষকের এমন দুরবস্থা নিরসনে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক এডিবির ৫৬২ কোটি ৬৯ লাখ টাকা অর্থায়নে আগের সরকার মুহুরী সেচ ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছিলেন।

কথা ছিল বৈদ্যুতিক পাম্পের সাহায্যে প্রিপেইড মিটার ব্যবস্থায় ভূগর্ভস্থ পাইপলাইনের মাধ্যমে খাল থেকে জমিতে সেচের পানি সরবরাহ করা হবে। কৃষক কম দামে পাবেন তা। কিন্তু মাঠে গিয়ে দেখা যায় উল্টো চিত্র। অবকাঠামোর অস্তিত্ব ঠিক থাকলেও পানি সরবরাহের অধিকাংশ স্কিমই অকেজো। কোথাও বৈদ্যুতিক ট্রান্সমিটার নেই আবার কোথাও নেই মিটার।

ফেনী সদর উপজেলার কালিদহের কৃষক কবির আহম্মদ বলেন, কোনো রকমে জোড়াতালি দিয়ে কাজ করছে কিন্তু কাজের কাজ হচ্ছে না, উঠছে না পানি।

আফসার উদ্দিন নামের মোটবীর আরেক কৃষক বলেন, স্কিম চলবে কিভাবে বৈদ্যুতিক ট্রান্সমিটারই নেই। ক'দিন পর পর চুরি হয়ে যায়। এই কৃষক জানান, ট্রান্সমিটার চুরির ঘটনায় স্থানীয়দের পাশাপাশি বিদ্যুৎ বিভাগের লোকজনও জড়িত রয়েছে।

স্থানীয় কৃষকরা বলছেন এ প্রকল্পটিতে চলেছে লুটপাট। পুকুর নয়, সাগরচুরি হয়েছে। কৃষকের স্বার্থের কথা বললেও হয়েছে উল্টোটা। কৃষক তেলের পাম্পে পানি তুলে সেচ দিলেও যে খরচ হয় এই প্রি-পেইড মিটার ব্যবস্থায় খরচ ধরা হয়েছে তার চেয়েও বেশি।

আজগর উদ্দিন নামের সোনাগাজীর আমিরাবদের এক কৃষক বলেন, আগে তেল দিয়ে পাম্পের মাধ্যমে যেভাবে পানি তোলা হতো। কথা ছিলো সেই খরচ থেকে এই পদ্ধতিতে খরচ কমবে। কিন্তু সেটা না হয়ে হচ্ছে উল্টোটা।

পানি ব্যবস্থাপনা ফেডারেশন বলছে কৃষক এই পর্যন্ত  প্রকল্পের সুফল পাচ্ছেন না তারা। ৮’শর অধিক পাম্পের বেশির ভাগ অকেজো। কর্তৃপক্ষ কাজ না করে বন্যার অজুহাত সামনে এনেছেন। অপরদিকে কৃষি কর্মকর্তারা বলছে দ্রুত সেচ ব্যবস্থা সচল করতে না পারলে প্রভাব পড়বে আবাদে।

মুহুরী সেচ প্রকল্প পানি ব্যবস্থাপনা ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মাইন উদ্দিন কামরান বলেন, কাগজে-কলমে ৮'শর বেশি পাম্প থাকলেও দেড়শর বেশি পাম্প কখোনোই চালু ছিল না। কর্তৃপক্ষ আগস্টের বন্যাকে ক্ষতির জন্য দায়ী করলেও প্রকল্পে লুটপাটের কারণেই এমন দশা।

কালিদহ এলাকার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবু তৈয়ব বলেন, আগস্ট মাসের বন্যায় কৃষক ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। সরকারিভাবে সার-বীজ ও প্রণোদনা দেয়া হয়েছে কিন্তু পানির অভাবে অনেক কৃষক সবজিসহ ধান চাষাবাদ করতে পারছেন না। এতে করে কৃষক ক্ষতির সম্মুখীন হবেন।

এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে চলতি বছরের আগস্টসহ কয়েক দফার বন্যায় ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে প্রকল্পটি। পুনরায় স্কিমগুলো মেরামত করে সেচের আওতায় আনার জন্য কাজ চলমান।

পানি উন্নয়ন বোর্ড ফেনীর নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ রাশেদ শাহরিয়ার বলেন, প্রকল্পের কাজ শেষে কিছু স্কিম চালু হয়েছিলো। কৃষক সুফলও পেতে আরম্ভ করেছিলো কিন্তু আগস্ট মাসের বন্যা পুরো প্রক্রিয়াকে এলোমেলো করে দিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ব্যাপক মাত্রায়। সেসব মেরামত করে চালুর চেষ্টা চলমান।

২০১৫-১৬ অর্থ বছরে ফেনীতে মুহুরী সেচ ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। মাঝে করোনার কারণে বছর দু-এক কাজ বন্ধ থাকে। ২০২৪ এর জুনে কাজ শেষ হয়।

৫৩৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ভূগর্ভস্থ পাইপলাইনের  পরিকল্পিত ৫৩৪টি স্কিমের মধ্যে চালু হয় মাত্র ১৩০টি। যেগুলো চালু হয়েছিল সেগুলোর সিংহভাগও এখন অকার্যকর।

ফেনীর পাঁচটি উপজেলা ও চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার ১৮ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ দেয়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে শুরু হয় এই প্রকল্প। কিন্তু  তার ধারেকাছেও পৌঁছানো যায়নি। এই প্রকল্পের মাধ্যমে ৩ হাজার হেক্টর জমিও আসেনি সেচের আওতায়।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://dailyvorerpata.com/ad/af.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: vorerpata24@gmail.com বার্তা ইমেইল:news@dailyvorerpata.com বিজ্ঞাপন ইমেইল:vpgmad@gmail.com