চলতি রবিমৌসুমে যশোরের ঝিকরগাছায় গোল আলুর বাম্পার ফলন হলেও কাঙ্খিত বাজারদর না পাওয়ার শঙ্কায় আছেন কৃষকেরা। গেল সপ্তাহে আলুর বাজারে চরম ধস নামে। বাজার এখন কিছুটা চাঙ্গা প্রতি কেজি গোল আলু বিক্রি হয়েছে ৮/১০ টাকায়। এখন ১২/১৪ টাকা। প্রতিকেজিতে দাম বেড়েছে ৪/৫ টাকা। সাম্প্রতিক বৈরি আবহাওয়ার সাথে হালকা বৃষ্টি ও ঝড়ো হওয়ায় কৃষকের আলু খেতের বীজতলার ব্যাপক ক্ষতি হয়। ফলে, পঁচে যাওয়ার আশংকায় অপরিপোক্ত আলু উত্তোলনে বাধ্য হয় এতদা লের কৃষক। এক যোগে বাজারে আমদানির চাপ বাড়তে থাকায় আলুর বাজারে ধস নামার কারণ। তবে বর্তমানে বাজার দর উর্দ্ধমুখি হওয়ায় ক্ষতি গ্রস্থ্য কৃষকদের মনোবল চাঙ্গা হতে শুরু করেছে।
আলুর ভালো দাম পাওয়ার আশায় ফের বুক বাঁধছেন কৃষক। আলু উত্তোলনের এখন মধ্যবর্তি সময় চলছে। কৃষি বিভাগ ও কৃষকদের দেওয়া তথ্যানুয়ায়ী পানিসারা ইউনিয়নে বর্ণি গ্রামে কৃষক হাসেম আলী ১০ বিঘা, নারাঙ্গালী গ্রামের লাল্টু মাষ্টার ১২ বিঘা, রাজাপুর গ্রামের জলিল মিয়া ৩০ বিঘা, আলি নেওয়াজ বাবু ২০ বিঘা, প্রফেসর আজিজুর রহমান ১৫ বিঘা বোধখানা গ্রামের আলাউদ্দীন ১৫ বিঘা, আলি হোসেন ১০বিঘা, সোহারব হোসেন ১৫ বিঘা, গদখালী সৈয়দ পাড়া গ্রামের রুসতম আলী ১০ বিঘা, মিজান মেম্বার ৩০/৩২ বিঘা, সুলতান মিয়া ১৫ বিঘা উন্নতমানের ডাইমন্ড ও স্টিক কাটিলাল জাতের আলুর আবাদ করেছেন।
উপজেলার পানিসারা, নাভারণ ও গদখালী ইউনিয়নে প্রতিবছরে ব্যাপক গোল আলুর আবাদ হয়ে থাকে। এ বছরও এর তেমন ব্যত্যয় ঘটেনি, জানিয়েছেন উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ। উপজেলার কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মাসুদ হাসান পলাশ ভোরের পাতাকে জানিয়েছেন, এ বছর ৪১০ হেক্টর জমিতে আলুর উৎপাদন হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা গড় ১৩ হাজার ৮০ মেঃটন। বোধখানা ১২নং ব্লাকের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারী কৃষি অফিসার আয়ুব হোসেন দাবি করেন, তার ব্লাকে একশো হেক্টর জমিতে গোল আলুর আবাদ হয়েছে। তিনি জানান, প্রতিহেক্টরে উৎপাদন হয়েছে ২১/২২ মেঃটন গোল আলু।
কৃষকেরা জানান, প্রতিবিঘা আলুর আবাদে বীজতলা তৈরি, সার, সেচ, কীটনাশক ইত্যাদি খরচ বাবদ ব্যয় দাঁড়ায়৩৫/৩৬ হাজার টাকা। প্রতিবিঘা আলুর গড় উৎপাদন দাঁড়ায় ৩৫/৪০ মন বর্তমান বাজার মূল্য হিসাবে প্রতিবিঘায় লোকসান প্রায় ১৮/১৯ হাজার টাকা। তবে বর্তমানে বাজার উর্দ্ধোমুখি হওয়ায় লোকসান পুষিয়ে নিতে পারবেন বলে আশা কৃষকদের।
এমন আশার কথা শুনালেন ঝিকরগাছা বাজারের বিশিষ্ট পাইকারি আলু ব্যবসায়ি আব্দুল গফুর, আলমমিয়া, আমিনুর রহমান ও বিল্লাল হোসেন জানিয়েছেন, বাজারে ৫৫কেজির প্রতি বস্তা আলু ৬০৫টাকা, ৬০ কেজির প্রতি বস্তা ৬৬০/৬৬৫টাকা ও ৬৫ কেজির প্রতি বস্তা বিক্রি হচ্ছে ৭১৫টাকা দরে। তাদের দাবি, আলুর আমদানি-রপ্তানির উপর নির্ভর করে বাজার দর। এখন বাজার চাঙ্গা হতে শুরু করেছে, ফলে কৃষকদের হতাশ হওয়ার কোন কারণ নাই।