প্রকাশ: বুধবার, ২৬ জুলাই, ২০২৩, ২:০৭ পিএম আপডেট: ২৬.০৭.২০২৩ ২:১১ PM

ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেছেন, মানুষকে কষ্ট না দিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সমাবেশ করা উচিত। ভবিষ্যতে হয়তো এমন সময় আসবে যে জনগণ অতিষ্ঠ হয়ে গেলে এসব কর্মসূচিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা লাগতে পারে।
বুধবার (২৬ জুলাই) সকালে পুরান ঢাকার হোসেনি দালানের সামনে ২৯ জুলাই পবিত্র আশুরার নিরাপত্তা নিয়ে আয়োজিত সংবাদ বিফ্রিং শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, পরিস্থিতি পর্যালোচনা ও পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে কয়েকটি রাজনৈতিক দলকে সমাবেশের অনুমতি দেব। রাজনৈতিক সমাবেশ করা গণতান্ত্রিক অধিকার। জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিতও করা ঢাকা মহানগর পুলিশের দায়িত্ব ও কর্তব্য।
তিনি বলেন, আমি সব রাজনৈতিক দলকে অনুরোধ করব, কর্মদিবসে (ওয়ার্কিং ডেতে) সমাবেশ করা মানে রাজধানী অচল করে দেওয়া, লাখ লাখ মানুষকে রাস্তায় যানজটের মধ্যে আটকে রাখা। এসব বিষয় মাথায় রেখে তারা যেন কর্মপরিকল্পনায় পরিবর্তন (চেঞ্জ) এনে বন্ধের দিনে নিয়ে যান।
তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক দলের সমাবেশস্থলে যাঁরা আসবেন, তাঁরা কোনোভাবেই লাঠিসোঁটা ও ব্যাগ নিয়ে যেন না আসেন। এতে বিস্ফোরক থাকতে পারে, (সাবোটাজ) নাশকতা হতে পারে। নিরাপত্তার স্বার্থে সব রাজনৈতিক দলকে অনুরোধ করব, আপনারা জনগণকে কষ্ট না দিয়ে সমাবেশ করুন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, আপনারা জানেন আগামী ২৯ জুলাই পবিত্র আশুরা। সারা বিশ্বে মুসলিম সম্প্রদায় অত্যন্ত ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে পবিত্র আশুরা উদযাপন করে থাকি। শিয়া সম্প্রদায় আশুরা উপলক্ষে সুন্নিদের থেকে আলাদা কিছু রীতি ও নিয়মকানুন তারা পালন করেন।
গত সাড়ে ৪০০ বছর ধরে শিয়া সম্প্রদায় এই ইমামবাড়া থেকে তাজিয়া মিছিল ও প্রার্থনাসহ অন্যান্য ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করে থাকেন। মূল অনুষ্ঠানটি পালন করা হবে ২৯ জুলাই। প্রতিবারই শান্তিপূর্ণভাবে এই অনুষ্ঠান উদযাপিত হয়ে আসছে।
কিন্তু ২০১৫ সালে তাজিয়া মিছিলে এখানে বোমা বিস্ফোরণ হয়েছিল। ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গিবাদ যারা করেন, তারাই এ ঘটনা ঘটিয়েছিলেন। তারপর থেকে এ ধরনের ঘটনা এড়াতে এই অনুষ্ঠানে আমরা বিশেষ নিরাপত্তা দিয়ে থাকি।
গোলাম ফারুক বলেন, আজ আমরা এখানে ঘুরে ঘুরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখলাম। আমরা ইমামবাড়া এলাকা সিসি ক্যামেরার আওতায় নিয়ে এসেছি। রাস্তাগুলো সিসি ক্যামেরার আওতায় থাকবে। এই এলাকার সামনে-পেছনে সাদা পোশাক ও পোশাক পরিহিত পুলিশ সদস্যরা নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত থাকবে। এই পুরো এলাকা ডগ স্কোয়াডের মাধ্যমে সুইপিং করা হবে। যাতে পুনরায় কোনো দুষ্কৃতকারী এখানে কোনো দুর্ঘটনা না ঘটাতে পারে।
তিনি আরও বলেন, আমরা আশা করব আগামী ২৭,২৭ ও ২৯ জুলাই অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে এই অনুষ্ঠান পালিত হবে। এক্ষেত্রে আয়োজকদের প্রতি আমাদের কিছু পরামর্শ রয়েছে।
তাজিয়া মিছিলে যেন উচ্চস্বরে ঢাক-ঢোল না বাজানো হয়, গায়ে চাদর ঢেকে কোনো লোক যেন চলাফেরা না করে, শরীরের আঘাত করে রক্তাক্ত জখম করা, শিশুদের জন্য দৃষ্টিকটু হয় এসব বিষয় এড়িয়ে চলা। আয়োজকদের সঙ্গে মিটিং করে এসব বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছি। ওনারাও কিছু নিরাপত্তা পরামর্শ দিয়েছেন। আশা করি সুষ্ঠু সমন্বয়ের মাধ্যমে আমরা নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পারবো।