শনিবার ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫ ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

শিরোনাম: বিএনপির বড় বিশৃঙ্খলার চেষ্টা আ.লীগের সতর্কতায় বিফল: তথ্যমন্ত্রী   সংকটকে সম্ভাবনায় রূপ দিতে কাজ করছে সরকার: কাদের   নাটোরে ট্রেনে কাটা পড়ে ৩ জনের মৃত্যু   ‘কিছুই করি নাই শ্রেণিটা’ চোখ থাকতেও দেখে না: প্রধানমন্ত্রী   রাজকে আমার জীবন থেকে ছুটি দিয়ে দিলাম: পরীমনি   সৌদি আরবের ক্লাবে যোগ দিলেন রোনালদো   বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
ভারতের ভুল, আমাদের মাসুল
ড. মোহাম্মদ আলী মানিক
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৫ মার্চ, ২০২২, ৯:২৫ পিএম

বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন, বাঙালির সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন | আর যার একক নেতৃত্বে এই প্রাণের স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছিল তিনি হলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক  বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান। কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস স্বাধীনতা অর্জনের মাত্র সাড়ে তিন বছরের  মাথায় স্বাধীনতাবিরোধী পাকিস্তানী দোসরদের হাতে নির্মমভাবে সপরিবারে নিহত হন। ১৯৭৫ এর সাত সকালে খুনি ডালিম যখন দম্ভভরে বাংলাদেশ বেতারকে রেডিও বাংলাদেশ, মুক্তিযুদ্ধের শ্লোগান জয়  বাংলাকে বাংলাদেশ জিন্দাবাদ আর স্বাধীনতার চেতনা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশকে ইসলামী প্রজাতন্ত্র হিসাবে ঘোষণা দেয়, পার্শবর্তী দেশ ভারতের বোঝা উচিত ছিল বাংলাদেশ তখন পাকিস্তানের কব্জায় চলে যাচ্ছে। ইন্দিরা গান্ধীর মতো বিচক্ষণ রাষ্ট্রনায়কের উচিত ছিল তড়িৎ গতিতে সামরিক হস্তক্ষেপ করে পাকিস্তানী দোসরদের হাত থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করা। সোভিয়েত ইউনিয়ন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীনের  মতো  শক্তিশালী দেশগুলো তাদের পার্শ্ববতী বন্ধুপ্রতিম প্রতিম দেশগুলোতে সামরিক অভ্যুথানের মাদ্ধমে যখন তাদের  নিরাপত্তার প্রতি হুমকিস্বরূপ কোনো গোষ্ঠী ক্ষমতায় এসেছে, তখনি তারা তড়িৎ গতিতে সেই রাষ্ট্রে হস্তক্ষেপ করে  সেই অশুভ শক্তিকে অঙ্কুরেই বিনষ্ট করেছে। ভারতেরও বাংলাদেশের ব্যাপারে তাই করা উচিত ছিল।

কিন্তু দুঃখের বিষয়  ভারত তা করেনি! ভারত যদি তাই করতো তা হলে বিএনপি নামক পাকিস্তানপন্থি রাজনৈতিক দলের জন্ম হতোনা বা পাকিস্তানিদের দোসর স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াতে ইসলামীর বাংলাদেশে পুনর্জন্ম হতোনা! আর দীর্ঘ একুশটি বছর পাকিস্তানপন্থীদের যাঁতাকলে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের বিকৃতি হতোনা, নতুন প্রজন্মদের মগজ ধোলাই হতোনা! 
আজ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে সেই আক্ষেপের কথাই  বার বার বুকের ভেতর আঘাত করছে। হয়তো অনেকে বলবেন ভারত সেই সময় হস্তক্ষেপ করলে জনগণের সমর্থন পেতোনা।

আসলে তা ঠিক নয়। রাতের আঁধারে কাপুরুষের মতো পাকিস্তানী এজেন্ট ফারুক-রশিদ-ডালিম-নূর গংরা যেভাবে জাতির জনককে সপরিবারে হত্যা করেছিল, তার পরিপেক্ষিতে সাধারণ জনগণ হয়ে পড়েছিল শোকে কাতর, ভয়ে হতবিহবল! জীবনের শঙ্কায় প্রতিবাদের ভাষা হারিয়ে ফেলেছিলো! আপামর জনগণ যে বঙ্গবন্ধু এবং তার পরিবারকে কতটা ভালোবাসতো তার জ্বলন্ত প্রমান ছিল দুটি ঘটনা।

তার একটি ছিল বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের কিছুদিনের মধ্যে ২৭ আগস্ট তৎকালীন ঢাকালীগের আবাহনী বনাম দিলখুশার খেলায় পুরো স্টেডিয়ামের আবাহনীর প্রতি স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন দেওয়া , যা ছিল  সত্যিই অকল্পনীয়! কেননা বঙ্গবন্ধুর জীবদ্দশায় লীগ শিরোপাধারী আবাহনীর জনপ্রিয়তা ছিল শূন্যে! তা অবশ্য কোনো রাজনৈতিক কারণে হয়নি, হয়েছিল মোহামেডান, ওয়ান্ডা রার্স, ওয়ারী, ভিক্টরিয়ার মতো ঐতিহ্যবাহী জনপ্রিয় ক্লাবের খেলোয়াড়দের দ্বারা  আবাহনী গঠিত হওয়ায়! তাই এই পুরো স্টেডিয়ামের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন ছিল বঙ্গবন্ধু ও তার পুত্র খেলাপ্রেমিক শেখ কামালের প্রতি সাধারণ মানুষের ভালোবাসার প্রতিফলন।

আর দ্বিতীয়টি ছিল খালেদ মোশাররফের স্বল্পকালীন ক্ষমতা দখলের সময় বঙ্গবন্ধু এবং  তার পরিবারের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আজিমপুর থেকে বত্রিশ নাম্বার পর্যন্ত জনতার ঢল! 

তাই বলছিলাম ভারত সেই সময় হস্তক্ষেপ করলে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি স্বতঃস্ফূর্তভাবে রাস্তায় নেমে আসতো তাদের সমর্থনে একাত্তরের মতো।

 সেই সময় বঙ্গবন্ধুর তিরোধানে জাতীয় চার নেতার নেতৃত্বে সরকার গঠিত হতো আর সামরিক বাহিনীও পুনর্গঠিত হতো মুক্তিযোদ্ধা অফিসার আর সৈনিকদের দ্বারা। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ পরিচালিত হতো। একুশ বছর পাকিস্তানপন্থীদের দ্বারা দেশ পরিচালনার জ্বালা আর সহ্য করতে হতোনা! রাজাকার শাহ আজিজ, আলিম, নিজামী দের মন্ত্রী হিসাবে দেখতে হতোনা! পৃথিবীর ইতিহাসে বাংলাদেশ একমাত্র দেশ যেখানে স্বাধীনতাবিরোধীরা প্রকাশ্যে রাজনীতি করছে! ভারত  সময়মতো হস্তক্ষেপ করলে তাও হতোনা!

তাই স্বাধীনতার এই সুবর্ণজয়ন্তীতে হৃদয়ে এখনো রক্তক্ষরণ হচ্ছে সেই একুশটি বছরের জন্য যার মাসুল আমরা এখনো দিয়ে যাচ্ছি! ভারতের সেই ভুল এর বদান্যতায় আজ সমাজের প্রতিটি স্তরে স্বাধীনতা বিরোধীরা শক্ত ঘাঁটি গেড়ে বসেছে আর প্রতিনিয়ত ষড়যন্ত্র করছে বাংলাদেশকে আবার পাকিস্তানে রুপান্তিরত করতে।

লেখক:  সহ সভাপতি, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Screenshot_1.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: vorerpata24@gmail.com বার্তা ইমেইল:news@dailyvorerpata.com বিজ্ঞাপন ইমেইল:vpgmad@gmail.com