শনিবার ৬ ডিসেম্বর ২০২৫ ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

শিরোনাম: বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে সুইজারল্যান্ড বানানোর স্বপ্ন দেখেছিলেন: তাজুল ইসলাম   ইংরেজি নববর্ষে প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা   করোনায় মৃত্যু কমেছে, শনাক্ত বেড়েছে    আরও ৩ জনের ওমিক্রন শনাক্ত   শপথ নিলেন নতুন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী   বাস সরাতে গিয়ে দুই মৃত্যু: সেই পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা   আন্দোলনের বিকল্প নেই, ফয়সালা রাজপথেই হবে: ফখরুল   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
বঙ্গবন্ধু কর্নার আমাকে আত্মিক শান্তি দেয়: মোহাম্মদ শামস্-উল ইসলাম
উৎপল দাস, বিশেষ প্রতিনিধি
প্রকাশ: শনিবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০২১, ১০:১২ পিএম আপডেট: ০৪.১২.২০২১ ১০:২৯ PM

অফিসটিতে ঢুকতেই সবার চোখ আটকে যায় কর্নারটিতে। বঙ্গবন্ধুর একটি আবক্ষ মূর্তি স্থাপন করা আছে সেখানে। কক্ষটির শেলফে শোভা পাচ্ছে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে অনেকগুলো বই। একটি বড় ছবির নিচে লেখা ‘দাঁড়াও পথিকবর, জন্ম যদি বঙ্গে/এইখানে কিছুক্ষণ বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে’। অফিসে আসা মানুষজন সেখানে থমকে দাঁড়িয়ে প্রবেশ করেন কর্নারটিতে। যারা অপেক্ষা করেন, তারা বই নিয়ে পড়ার চেষ্টা করেন। কেউ বা মোবাইলে সেখানকার সুন্দর দৃশ্যগুলো ধারণ করেন। অফিসটির অবস্থান রাজধানীর দিলকুশা এলাকায়। অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেডের প্রধান কার্যালয়। অগ্রণী ব্যাংক ভবনের সপ্তম তলায় চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কার্যালয় এবং বোর্ড রুমের পাশেই এ কর্নার। নাম দেওয়া হয়েছে বঙ্গবন্ধু কর্নার। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানায়, সেখানে বঙ্গবন্ধুর যে আবক্ষ ভাস্কর্য রয়েছে তার ওজন ১১৭ কেজি। বঙ্গবন্ধু সম্পর্কিত দেশ-বিদেশের বিভিন্ন বই-পুস্তক, ছবি, লেখা ও প্রামাণ্যচিত্র স্থান পেয়েছে কর্নারে। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা প্রায় ৪০০ বই রয়েছে সেখানে, যেগুলো বঙ্গবন্ধুর জীবনকর্মসহ দেশের সুস্পষ্ট ইতিহাস পাঠককে তথ্য দিতে যেন অপেক্ষা করছে। রয়েছে বঙ্গবন্ধুসংশ্লিষ্ট তিনটি ছবির অ্যালবাম, যাতে পাওয়া যায় বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিময় অনেক ছবি। বঙ্গবন্ধুর ছবিসংবলিত ৫ ও ১০ টাকার দুটি বড় নোটও রাখা আছে। কর্নারটি তৈরি করার উদ্যোগ ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শামস্-উল ইসলামের। ২০১৭ সালের ১০ এপ্রিল সেখানে বঙ্গবন্ধুর আবক্ষ মূর্তিটি উদ্বোধন করেন তৎকালীন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। অগ্রণী ব্যাংকে করা বঙ্গবন্ধু কর্নার দেশের দ্বিতীয় বঙ্গবন্ধু কর্নার। এর আগে আনসার-ভিডিপি ব্যাংকের এমডি থাকার সময় ২০১৬ সালে সেখানে দেশের প্রথম বঙ্গবন্ধু কর্নার করেছিলেন মোহাম্মদ শামস্-উল ইসলাম।
বঙ্গবন্ধুকে মন প্রাণ দিয়ে ভালোবাসেন এমন মানুষের সংখ্যা এ দেশে অগণিত। আবার মুজিব পাগল লাখো কোটি বঙ্গবন্ধু প্রেমির মতো এমন কিছু মানুষ আছেন যারা সেই সাধারণের কাতারে থেকেই অসাধারণ ও বিশেষ বৈশিষ্ট্যের অধিকারী এদের কেউ কেউ কাব্যমনা, শিল্পমনা, ভাবুক আবার কেউবা থাকেন স্বপ্নচায়ী। নিজের অজান্তেই ওরা জগতের অনেক কিছুই নিয়ে ভাবেন, স্বপ্ন দেখেন। এমনকি কল্পনায় আকাশ ভ্রমণ করেন অনেকে। আমার এ প্রতিবেদন যাকে নিয়ে তিনি হলেন একজন সৎ কর্মট, সদালপী, সদা হাস্যোজ্জ্বল একজন ব্যাংক ব্যক্তিত্ব আমাদের মৌলভীবাজারের কৃতি সন্তান, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (সিইও) মোহাম্মদ শামস্-উল ইসলাম। তিনি বঙ্গবন্ধু, তার কর্ম ও আদর্শকে মনের মধ্যে লালন করেন, ও প্রাণ দিয়ে ভালোবাসেন বলেই তাকে নিয়ে নিজেস্ব উদ্ভাবণী চিন্তার প্রতিফলন ঘঠিয়েছেন। এ বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে সম্পূর্ণ নতুন এক আবিষ্কার যা আজ বাংলাদেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্থাপিত হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যোগ্য নেতৃত্বের কারণেই আজকের স্বাধীন বাংলাদেশে। স্বাধীনতা অর্জনের ফলেই রাষ্ট্রীয় ব্যাংকের এমডির মতো শীর্ষ পদে আসীন হচ্ছেন বাংলাদেশিরা। জাতির পিতার প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসা থেকে অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (সিইও) শামস্-উল ইসলাম নিজ প্রচেষ্টায় উদ্ভাবন করলেন ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’।
বঙ্গবন্ধু কর্নার নিয়ে তার কথা বলা সুযোগ হয় বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে। সেই গল্পটাও শোনালেন শামস্-উল ইসলাম। তিনি জানান, তিনি প্রধানমন্ত্রীর হাতে ‘বঙ্গবন্ধু কর্নারে’র দুটি ছবি দিয়েছিলেন। তিনি আনন্দচিত্রে ছবি দুটি গ্রহণ করেছিলেন। এ ধারাবাহিকতায় সারা দেশে ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’ স্থাপনের নির্দেশ এসেছে। এর মাধ্যমে আমার স্বপ্নের বাস্তবায়ন হয়েছে। আমি হৃদয়ে যে আনন্দ পেয়েছি, তা কোনো শব্দ দিয়ে, কোনো ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব হবে না। তবে সব মিলেয়ে আমার কাছে মনে হয়েছে আমি হিমালয় জয় করেছি। সরকারের এই উদ্যোগটির ব্যপারে তিনি বলেন, খুবই খুশি লাগছে নিজের কাছে ,আমার একটি স্বপ্ন জাতীয় ভাবে বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে। 
শামস্-উল ইসলাম সুস্পষ্টভাবেই জানালেন, ওই বছরের ১২ জুন অগ্রণী ব্যাংকের পক্ষ থেকে আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ত্রাণ তহবিলে চেক দিতে যাওয়ার সময় সাহস করে দুটি ছবি নিয়ে গিয়েছিলাম। উদ্দেশ্য ছিল এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে জানানো। চেক দেওয়ার পর দুরু দুরু বুকে প্রধানমন্ত্রীকে বললাম, স্যার, আমি আমার অফিসে বঙ্গবন্ধু কর্নার করেছি। সেখানে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা অনেক বই আছে। একটি ছবি দেখালাম। তিনি ছবি দেখে সন্তোষ প্রকাশ করলেন। তাঁর প্রশংসা পেয়ে আরেকটা ছবি বের করে বললাম, স্যার, আমি আনসার ভিডিপি ব্যাংকে থাকার সময় ওখানেও একটা এমন বঙ্গবন্ধু কর্নার করেছি। দুটো ছবিই প্রধানমন্ত্রী রাখলেন।’ তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু কর্নার করা নিয়ে নানা মহলে বিভিন্ন ধরনের কথা হয়েছিল। তবে বেশির ভাগ মানুষই আমাকে সাহস জুগিয়েছেন। কেউ কেউ সমালোচনাও করেছেন। এমনকি আমার মেয়ে এবং স্ত্রীও এ বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছিলেন। তবে তারা আমার সাহসের প্রশংসা করেছিলেন। এখন সারা দেশে নয়, পুরো পৃথিবী জুড়েই যখন বঙ্গবন্ধু কর্নার গড়ে উঠছে তা দেখে সত্যি আনন্দিত হই। পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তে বঙ্গবন্ধু কর্নার আমাকে আতিœক শান্তি দেয়। শামস্-উল ইসলাম বললেন, বঙ্গবন্ধু কর্নার করা হচ্ছে সব স্কুলে। আমার খুব খুশি লেগেছে এতে। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও আদর্শ শিক্ষার্থীরা ভালোভাবে জানতে পারবে। আমি এত দিন যে চিন্তাটা করেছি, যে ধারণাটি উপস্থাপন করেছি সেটার একটা স্বীকৃতি মিলল।
প্রসঙ্গত, সংরক্ষিত নারী আসনের সাংসদ আখতার জাহানও মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও আদর্শ শিক্ষার্থীদের জানাতে সারা দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু কর্নার স্থাপনের প্রস্তাব করেছিলেন। প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শুরু করে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গ্রন্থাগারে বঙ্গবন্ধু কর্নার স্থাপন করা হবে। এসব কর্নারে বঙ্গবন্ধুর জীবন নিয়ে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রকাশনা, গুরত্বপূর্ণ ছবিসহ বঙ্গবন্ধু সর্ম্পকিত নানান ডকুমন্টেস ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সংগ্রহে রাখা হবে। বঙ্গবন্ধু কর্নারের সর্বপ্রথম ধারণা আসে অগ্রণী ব্যাংকের এমডি মোহাম্মদ শামস-উল ইসলামের নিকট হতে। তিনি ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয়ের সপ্তম তলায় বঙ্গবন্ধু কর্নার স্থাপন করেন। যে কেউ এসে এখানে অবস্থিত এমন কর্নার দেখে বিস্মিত হন। কেউ কেউ নিজেকে ফ্রেমবন্দি করে নেন কর্নারে অবস্থিত বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যটির সাথে। জাতির পিতাকে ভালোবেসে এই কর্নারটি তৈরি করেছেন অগ্রণী ব্যাংকের এমডি মোহাম্মদ শামস-উল ইসলাম। প্রতিদিন কীভাবে বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধা জানানো যায় সেই ভাবনা থেকেই বঙ্গবন্ধু কর্নারের ধারণা। কর্নারটি সাজানো হয়েছে বই, ছবি ও ভাস্কর্য দিয়ে।
২০১৬ সালের আগস্ট থেকে রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পদে দায়িত্ব পালন করছেন মোহাম্মদ শামস-উল ইসলাম। এর আগে আনসার-ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংকের এমডি পদে সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। ব্যাংকারদের মাঝে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিকাশের লক্ষ্যে নিজ কর্মস্থল অগ্রণী ব্যাংক ও তার আগের কর্মস্থল আনসার-ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংকসহ মোট তিনটি পৃথক স্থানে জাতির জনকের ম্যুরালসহ ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’ স্থাপন করেছেন তিনি। তাঁর এই আইডিয়া থেকে সম্প্রতি দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গ্রন্থাগারে ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’ স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) সহকারী পরিচালক সাখাওয়াত হোসেন বিশ্বাস স্বাক্ষরিত এক চিঠির মাধ্যমে এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা জারি করা হয়। জাতির জনকের প্রতি অবিচল বিশ্বাস ও ভালোবাসা থেকেই তিনি সর্বপ্রথম উদ্যোগটি গ্রহণ করেছিলেন।
কথা হয় বঙ্গবন্ধু কর্নারের উদ্যোক্তা অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ শামস্-উল ইসলামের সাথে। তিনি বলেন, সাত বছর আমি দেশের বাইরে ব্যাংকিং করেছি। ক্যারিয়ারের ১৬ বছর কাটিয়েছি চট্টগ্রামে। ২০০৯ সালের ১ জানুয়ারি আমি জিএম পদোন্নতি পেয়ে প্রধান কার্যালয়ে আসি। সে সময় আমাকে হেড অব আইডি করা হয়। একই সঙ্গে সিলেট অঞ্চলের অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়। জিএম পদটি দেশের বিদ্যমান পরিস্থিতিতে একটি সম্মানজনক পদ হিসেবেই স্বীকৃত। সিলেট যাওয়ার পর আমার মনে হলো, দেশ স্বাধীন না হলে আমি জিএম হতে পারতাম না। হয়তো হাবিব ব্যাংকের এসপিও পর্যন্ত যেতে পারতাম। যার জন্য দেশটি স্বাধীন হলো, আমি জিএম হতে পারলাম, সেই বঙ্গবন্ধুর সম্মানে কিছু করার ইচ্ছে হলো। সিলেট অঞ্চলে অগ্রণী ব্যাংকের তিনটি জোনাল অফিস আছে। এর মধ্যে মৌলভীবাজারের অফিসটি বেশ বড়সড়। তখন আমি কার্যালয়টির ফাঁকা জায়গায় ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’ করার প্রস্তাব দিলাম। একটি বুক সেলফ কিনে দিলাম এবং কর্মকর্তাদের বললাম, বঙ্গবন্ধুর ওপর যত বই লেখা হয়েছে, সবগুলো সংগ্রহ করে সেলফে জমা করতে। পরে নিজ উদ্যোগে ২০১০ সালে বেশকিছু বই কিনে সেলফ সাজিয়েছি। এভাবেই অগ্রণী ব্যাংকের মৌলভীবাজার কার্যালয়ে ‘বঙ্গবন্ধু কর্ণার’ গড়ে ওঠে। পরবর্তীতে এমডি হয়ে যখন আনসার-ভিডিপি ব্যাংকে গেলাম, তখন মনে হলো ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয়ের দ্বিতীয় তলায় বিস্তৃত পরিসরে ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’ স্থাপন করা সম্ভব। এর মধ্যেই মাথায় আসল, বঙ্গবন্ধুর একটি মুরাল স্থাপনের।
আনসার-ভিডিপি ব্যাংকে যোগদানের সময় সেটির অবস্থাও খুবই নাজুক ছিল। আর্থিকভাবে ভঙগুর ব্যাংকটির উদ্যোগে বিস্তৃত পরিসরে ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’ স্থাপন করা সহজ ছিল না। আনসার-ভিডিপি নামে যে একটি ব্যাংক আছে, মানুষ সেটিও জানত না। কিন্তু ব্যাংকটির এমডি পদে দায়িত্ব গ্রহণের পর সর্বোচ্চ আন্তরিকতার মাধ্যমে কাজ করেছি। এর ফলে আনসার-ভিডিপি ব্যাংক ঘুরে দাঁড়িয়েছে। একই সঙ্গে সফলভাবে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালসহ একটি সমৃদ্ধ লাইব্রেরি স্থাপন করা সম্ভব হয়েছে।

বঙ্গবন্ধুকে ভালোবেসে ২০১০ সালে অগ্রণী ব্যাংক মৌলভীবাজারের আঞ্চলিক কার্যালয়ে প্রথম বঙ্গবন্ধু কর্নার স্থাপন করি, এরপর আনসার ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংকের এমডি থাকা অবস্থায় ২০১৫ সালে বঙ্গবন্ধুর ৪১তম শাহাদাতবার্ষিকীতে ব্যাংকটির দ্বিতীয় তলায় চেয়ারম্যানের কক্ষ ও বোডরুমের পাশে দ্বিতীয় বঙ্গবন্ধু কর্নার স্থাপন করি। অগ্রণী ব্যাংকের এমডি মোহম্মদ শামস্-উল ইসলাম বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী স্মরণীয় করে রাখতে সারা দেশে অগ্রণী ব্যাংকের শাখাগুলোতে বঙ্গবন্ধু কর্নার স্থাপন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যখন আমি প্রথম এই কর্নার চালু করি তখন অনেকেই বিভিন্নভাবে এই কর্নার স্থাপনের সমালোচনা করেছেন। আজ সদাশয় সরকারই সারা দেশে বঙ্গবন্ধু কর্নার স্থাপন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আমি এতে আনন্দিত ও গর্বিত। অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শামস্-উল ইসলাম মুজিবশতবর্ষ উপলক্ষে প্রত্যেকটি শাখায় ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বিনামূল্যে বীরাঙ্গনাদের মাঝে সেলাই মেশিন দিয়েছেন। উত্তরবঙ্গের মঙ্গা ও চর এলাকায় একটি করে আদর্শ গ্রাম করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যেখানে রাস্তা, টিউবওয়েল, স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা থাকবে। আর বঙ্গবন্ধুর নামে চর এলাকায় একটি করে রাস্তা করে দেওয়া হবে। বাংলাদেশ শিশু একাডেমিতে অগ্রণী ব্যাংকের উদ্যোগে প্রতিবছর যে শিশু সাহিত্য পুরস্কার দেওয়া হয়, সে পদক এবার বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে শিশু একাডেমি কর্তৃক ‘বঙ্গবন্ধু গোল্ড মেডেল’ হিসেবে দেওয়া হবে। মোহাম্মদ শামস্-উল ইসলাম আরো বলেন, মুজিবশতবর্ষ উপলক্ষে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢোকার মুখে আমরা একটি বঙ্গবন্ধু ম্যুরাল স্থাপন করেছি। এছাড়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিবছর মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের যে গোল্ড মেডেল দেওয়া হয়, এবার আমরা তার নাম পরিবর্তন করে ‘বঙ্গবন্ধু গোল্ড মেডেল’ এই নামে দিব। তিনি বলেন, অগ্রণী ব্যাংকের এমডি ও সিইও হিসেবে যোগদানের একশ’ দিনের মধ্যে প্রধান কার্যালয়ের চেয়ারম্যান, এমডিসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ফ্লোরের প্রবেশদ্বারে বঙ্গবন্ধু কর্নার স্থাপন করেছি। এখানে রয়েছে বঙ্গবন্ধুর ১১৭ কেজি ওজনের ব্রোঞ্জের একটি আবক্ষ ভাস্কর্য। আরও আছে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কিত বিভিন্ন বই, জার্নাল, বক্তৃতার সিডি, অ্যালবামসহ বিভিন্ন প্রকাশনা। এখানে স্থাপিত মনিটরে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শোনার ব্যবস্থা রয়েছে। অনেকে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে অনেক সংগঠন করে। আমি তাদের সঙ্গে দেখা হলে বলি, বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে আগে বই পড়ো। বঙ্গবন্ধু যে কত বিশাল, সেটা সম্পর্কে জানো। তাদের বলি, বঙ্গবন্ধু কত বিশাল! তাঁকে আবিষ্কার না করতে পারলে তুমি তো ফলোয়ার হতে পারবে না। আজ হয়তো কেউ এখানে এলো কোনো কাজে, এসে বঙ্গবন্ধু কর্নারে রাখা বই নিয়ে জাতির পিতা সম্পর্কে কিছু জানল, সেটাই আমার সার্থকতা। অগ্রণী ব্যাংকের এমডি মোহাম্মদ শামস্-উল ইসলাম বলেন, বঙ্গবন্ধু কর্নারের এই ধারণাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার কথাও ভাবা হচ্ছে। তহবিল সংগ্রহ করে দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধু কর্নার করে দেওয়ার পরিকল্পনা আমাদের আছে। 
এদিকে, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবর্ষ পালনের অংশ হিসেবে প্রথম বঙ্গবন্ধু কর্নার স্থাপন করলো অগ্রণী এক্সচেঞ্জ হাউজ প্রাইভেট লিমিটেড, সিঙ্গাপুর। দেশের বাইরে এই প্রথম কোন আর্থিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক কর্পোরেট আবহে বঙ্গবন্ধু কর্নার স্থাপন করা হয়। গত ১৬ মার্চ, ২০২১ বঙ্গবন্ধু কর্নার স্থাপনের অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন করেন সিঙ্গাপুরে নিযুক্ত হাইকমিশনার জনাব মো. তাউহিদুল ইসলাম, এনডিসি। উক্ত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ থেকে সংযুক্ত ছিলেন বঙ্গবন্ধু কর্নারের নন্দিত উদ্ভাবক অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং সিইও মোহাম্মদ শামস্-উল ইসলাম এবং ফরেন রেমিট্যান্স ডিভিশনের প্রধান উপ-মহাব্যবস্থাপক রুবানা পারভীন। এছাড়া বাংলাদেশ হাইকমিশনের শ্রম উইংয়ের ১ম সেক্রেটারী জনাব আহম্মেদ হোসেন ভুঁইয়া, সিঙ্গাপুর- বাংলাদেশ সোসাইটির প্রেসিডেন্ট মো. জহিরুল ইসলাম, সেক্রেটারী এমদাদ হোসেন, বাংলাদেশ চেম্বার সিঙ্গাপুরের প্রেসিডেন্ট বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর ড. এম এ রহিম, সেক্রেটারী মো. সাব্বির হোসেন, অগ্রণী এক্সচেঞ্জ হাউজের পরিচালক এবং সিইও এ এস এম শরীফুল ইসলাম এবং অপারেশন ম্যানেজার নেছার আহমেদ মিশুকসহ বাংলাদেশের রেমিট্যান্স যোদ্ধারা উপস্থিত ছিলেন।

হাইকমিশনার অগ্রণী এক্সচেঞ্জ হাউজ এ ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’ স্থাপনের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং এ উদ্যোগের জন্য অগ্রণী ব্যাংকের এমডি এবং সিইওকে ধন্যবাদ জানান। তিনি অগ্রণী এক্সচেঞ্জ হাউজের সেবার মানের ধারাবাহিক উন্নতিতে সাধুবাদ জানান। এ সময় এমডি এবং সিইও মোহাম্মদ শামস্-উল ইসলাম দেশের গন্ডি পেরিয়ে প্রবাসে বঙ্গবন্ধুর আদশ ও নীতি ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানান এবং উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। অগ্রণী এক্সচেঞ্জ হাউজের সিইও এবং পরিচালক এ এস এম শরীফুল ইসলাম উপস্থিত সকলের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। 

শামস্-উল ইসলাম বলেন, আমার স্বপ্ন আমার কল্পনা থেকেই আমি ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’ করেছি, আজ সরকার দেশব্যাপী আমার এ স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করছেন। তিনি বলেন বঙ্গবন্ধুকে জানতে হলে আগে দেশ ও জাতির বিষয়ে জানতে হবে। অনেকেই বঙ্গবন্ধুর সমালোচনা করেন, কারো সমালোচনা করতে হলে তার সম্পর্কে জেনে বুঝে সমালোচনা করতে হয়। আর জানতে হলে বই পড়তে হবে। আজকের তরুণ প্রজন্মকে আরো বেশি বেশি করে বই পড়তে হবে। ইতিহাস জানতে হবে, বঙ্গবন্ধু কে তা বুঝতে হবে। বঙ্গবন্ধু কর্নার সেক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের জ্ঞানপিপাসুদের ও বঙ্গবন্ধু প্রেমিদের তথ্য দিয়ে সহায়তা করতে যথেষ্ট ভূমিকা রাখবে। উল্লেখ্য, বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের উপর এখন পর্যন্ত দেশ-বিদেশে প্রায় ১৩ শতাধিক মৌলিক গ্রন্থ রয়েছে। এগুলো বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় প্রকাশিত। এছাড়া বঙ্গবন্ধুর উপর বেশ কিছু সংখ্যাক বই চীন, জাপানী, ইতালী, জার্মানি ও সুইডিশসহ কয়েকটি বিদেশি ভাষায় প্রকাশিত হয়েছে। ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর থেকে এই ভূ-খ-ের নিরিহ নির্যাতিত নিপিড়িত বঞ্চিত মানুষের নিজস্ব পরিচয় আর বাঙালি জাতিসত্তা প্রতিষ্ঠার প্রশ্নে যিনি ছিলেন বরাবরই অনড় ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলের সাড়ে সাত কোটি মানুষের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠার যিনি কখন আপোস করেন নি। শত হুমকি নির্যাতন আর প্রলোভনে ও মেনে নেননি পশ্চিমাশাসক শ্রেণির অন্যায্য কোন প্রস্তাব। নিজের জীবন বিপন্ন করে সব সুখ স্ব^াচ্ছন্দ্য বিসর্জন দিয়ে যিনি বাঙালি জাতির মুক্তি সংগ্রামে নিজেকে অকাতরে বিলিয়ে দিয়েছেন। তিনি আর কেউ নয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বাঙালির অভিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। দেশ ও জাতির জন্য তাঁর এই অপরিসীম ত্যাগ আর অবিস্মরণীয় অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ কোটি কোটি মানুষের কাছে আজ তিনি বঙ্গবন্ধু, বাঙালি জাতির পিতা, মহান নেতা, বিশ্ব মানচিত্রে স্বাধীন স্বার্বভৌম বাংলাদেশের স্থপতি। তিনি অমর ও অক্ষয় হয়ে আমাদের হৃদয়ে বেঁচে আছেন। 



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Screenshot_1.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: vorerpata24@gmail.com বার্তা ইমেইল:news@dailyvorerpata.com বিজ্ঞাপন ইমেইল:vpgmad@gmail.com