বিজয়ের মাস বাঙালি জাতিকে উদ্বেলিত করে: ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২ ডিসেম্বর, ২০২১, ১০:৫০ পিএম

আমরা একটা মাহেন্দ্রক্ষণের মধ্যে আছি, যেটা হয়তো আমরা সামনে আর নাও পেতে পারি। সুতরাং এই পরিপূর্ণ মুহূর্তকে আমাদের সম্পূর্ণভাবে উপভোগ করতে হবে। বিজয়ের মাস বাঙালি জাতিকে উদ্বেলিত করে, বিজয়ের মাস বাঙালি জাতিকে আনন্দিত করে, আমাদের দীপ্ত শপথে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রেরণা দান করে। একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হলেও বাঙালির স্বাধীনতার রক্তলাল সূর্যোদয়ের ভিত্তি সূচিত হয়েছিল বেশ আগেই। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণে উদ্দীপ্ত বাঙালি জাতি স্বাধীনতা অর্জনের দৃঢ় শপথ নিয়েছিল।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ৫৪১তম পর্বে বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) এসব কথা বলেন আলোচকরা। ভোরের পাতা সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের নির্দেশনা ও পরিকল্পনায় অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ পরিষদের (জানিপপ) চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ, বিএনসিসিও, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ড. বদরুজ্জামান ভূঁইয়া কাঞ্চন, শেরপুর সদরে মেডিকেল অফিসার (এমসিএইচ-এফপি), সেন্ট্রাল কাউন্সিলর বি এম এ ডা. শারমিন রহমান অমি। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ভোরের পাতার বিশেষ প্রতিনিধি উৎপল দাস।
অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ বলেন, আমরা একটা মাহেন্দ্রক্ষণের মধ্যে আছি যেটা হয়তো আমরা সামনে আর নাও পেতে পারি। সুতরাং এই পরিপূর্ণ মুহূর্তকে আমাদের সম্পূর্ণভাবে উপভোগ করতে হবে। বিজয়ের মাস বাঙালি জাতিকে উদ্বেলিত করে, বিজয়ের মাস বাঙালি জাতিকে আনন্দিত করে, আমাদের দীপ্ত সপথে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রেরণা দান করে। বাংলাদেশের সুদীর্ঘ রাজনৈতিক ইতিহাসে শ্রেষ্ঠ ঘটনা হলো ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে সশস্ত্র স্বাধীনতা সংগ্রামের এক ঐতিহাসিক ঘটনার মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতির কয়েক হাজার বছরের সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বপ্ন সাধ পূরণ হয় এ মাসে। বাঙালি জাতির সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন মুক্তিযুদ্ধের অবিস্মরণীয় গৌরবদীপ্ত চূড়ান্ত বিজয় আসে এ মাসের ১৬ ডিসেম্বর। স্বাধীন জাতি হিসেবে সমগ্র বিশ্বে আত্মপরিচয় লাভ করে বাঙালিরা। অর্জন করে নিজস্ব ভূ-খন্ড আর সবুজের বুকে লাল সূর্য খচিত নিজস্ব জাতীয় পতাকা। ভাষার ভিত্তিতে যে জাতীয়তাবাদ গড়ে উঠেছিল, এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর বিজয়ের মাধ্যমে ঘোষিত স্বাধীনতা পূর্ণতা পায় এ দিনে। বাঙালির হাজার বছরের স্বপ্ন পূরণ হওয়ার পাশাপাশি বহু তরতাজা প্রাণ বিসর্জন আর মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে এই অর্জন হওয়ায় বেদনাবিধূর এক শোকগাঁথার মাসও এই ডিসেম্বর। এ মাসেই স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি তাদের এদেশীয় দোসর রাজাকার-আলবদর আল-শামসদের সহযোগিতায় হানাদার গোষ্ঠী দেশের মেধাবী, শ্রেষ্ঠ সন্তান-বুদ্ধিজীবী হত্যার নৃশংস হত্যাযজ্ঞে মেতে ওঠেছিল। সমগ্র জাতিকে মেধাহীন করে দেওয়ার এ ধরনের ঘৃণ্য হত্যাযজ্ঞের দ্বিতীয় কোনো নজির বিশ্বে নেই। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বরের স্মৃতি ও চেতনা আমার এখনো মনে আছে। এবং সেই চেতনায় বলিয়ান হয়ে আমরা সেদিন থেকে প্রতিটি বছর বলীয়ান হয়ে এই দিবসটি পালন করে আসছি।