বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে আওয়ামী লীগ: বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২৯ জুন, ২০২১, ১০:৫৩ পিএম

জাতি সত্তার চিন্তা চেতনা থেকেই হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও শামসুল হকের যৌথ নেতৃত্বে ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠিত হয়। জন্মলগ্নে এই দলের নাম ছিল ‘পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ’। পাকিস্তানি শাসক শোষণ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য নিজেদের একটি জাতি সত্তার অধিকার আদায়ের জন্যই এই সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। জনগণের দেহ মনের নিরঙ্কুশ স্বাধীন বিচরণের আকাক্সক্ষা পূরণে জন্ম নেয় দলটি। আমাদের এই সময়ে যে গণতন্ত্র বিদ্যমান আছে সেটা ধরে রাখতে হবে ও জননেত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে আরও বহুদূর এগিয়ে যেতে হবে।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ৩৮৫তম পর্বে মঙ্গলবার (২৯ জুন ) আলোচক হিসেবে উপস্থিত হয়ে এসব কথা বলেন- নাটোর ৪ আসনের সংসদ সদস্য, নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস, সেক্টর কমান্ডার ফোরামের যুগ্ম মহাসচিব, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুল মাবুদ, জার্মান আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি, বাংলাদেশ জাতীয় শ্রমিক লীগের সাবেক আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ আহমেদ সেলিম। দৈনিক ভোরের পাতা সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ভোরের পাতার সিনিয়র রিপোর্টার উৎপল দাস।
বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস বলেন, আপনারা সবাই জানেন আমাদের উপমহাদেশের শাসনভার দখলে ছিল ব্রিটিশদের হাতে। ১৯৪৭ সালে দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে ভারত-পাকিস্তান বিভক্তির মধ্য দিয়ে ব্রিটিশ শাসনের অবসান হলেও ঔপনিবেশিক দুঃশাসন থেকে মুক্তি পায়নি বাংলার মানুষ। পৃথিবীতে এমন কোন দেশ নেই যে একটি দেশের মাঝখানে দুইটি দেশ থাকে। কোথায় পূর্ব পাকিস্তান আর কোথায় পশ্চিম পাকিস্তান। মাজখানে ভারত একটি স্বাধীন দেশ ছিল। এইযে জাতি সত্তার চিন্তা চেতনা থেকেই হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও শামসুল হকের যৌথ নেতৃত্বে ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠিত হয়। জন্মলগ্নে এই দলের নাম ছিল ‘পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ’। পাকিস্তানি শাসক শোষণ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য নিজেদের একটি জাতি সত্তার অধিকার আদায়ের জন্যই এই সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। জনগণের দেহ মনের নিরঙ্কুশ স্বাধীন বিচরণের আকাক্সক্ষা পূরণে জন্ম নেয় দলটি। অনেক রক্তাক্ত পথ ধাপে ধাপে পাড়ি দিয়ে ৫৫ সালে আওয়ামী পরিপূর্ণ অসাম্প্রদায়িক দল হিসেবে জনগণের প্রত্যাশা পূরণে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জনে এগিয়ে চলে। তার আগেই ৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে জয় দিয়েই শুরু হয় মিশন। ভাষা আন্দোলন থেকে ছয় দফা হয়ে স্বাধীন বাংলাদেশ। আওয়ামী মুসলিম লীগ যেমন সংগঠনগতভাবে ভাষা আন্দোলনে যুক্ত হয়, তেমনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও ভাষা আন্দোলনের শুরু থেকেই এ আন্দোলনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন। ১৯৭১ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বঙ্গবন্ধু জাতীয় চার নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমেদ, এম মনসুর আলী, এ এইচ এম কামারুজ্জামানকে সঙ্গে নিয়ে দেশ গড়ার কাজে মনোনিবেশ করেছিলেন। কিন্তু জাতির দুর্ভাগ্য, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করার মধ্য দিয়ে এ দেশের পিছিয়ে যাওয়া শুরু হয়। সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশ এবং আওয়ামী লীগের জন্য এক দুঃসময় শুরু হয়। এমন পরিস্থিতিতে ১৯৮১ সালে বিদেশে নির্বাসিত বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। ওই বছরই তিনি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দেশে ফিরে এসে আওয়ামী লীগের হাল ধরেন। তরুণ বয়সে আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হয়ে দলকে ঐক্যবদ্ধ ও শক্তিশালী করতে মনোনিবেশ করেন শেখ হাসিনা। পিতার অনুসরণে তিনিও এ দেশের গ্রাম থেকে গ্রামে ছুটে বেড়ান। বঙ্গবন্ধু যেমন পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে গ্রামগঞ্জে ঘুরে ঘুরে আওয়ামী লীগকে বিশাল একটি মহীরুহে পরিণত করেছিলেন তেমনি তার কন্যাও একই কাজ করে আওয়ামী লীগকে পুনর্জীবিত করেন। স্বাধীনতার সপক্ষের শক্তি, মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ী দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ হাজারো লড়াই, সংগ্রাম, ত্যাগ-তিতিক্ষা অতিক্রম করে আজ এই পর্যায়ে এসেছে। আশা করি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বগুণে আওয়ামী লীগ সফলতার ধারাবাহিকতা ধরে রাখবে। বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে আওয়ামী লীগ এবং উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবেও সারা বিশ্বে অন্যতম উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে আওয়ামী লীগ।