
যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলা জুড়ে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা বা এনজিও।
অভিযোগ উঠেছে, আর্থসামাজিক উন্নয়ন ও দারিদ্র্য বিমোচনের নামে অধিকাংশ এনজিও ক্ষুদ্রঋণ গ্রহীতাদের সেবার নামে শোষণ করে চলেছে। ভুক্তভোগীদের তরফে অভিযোগ রয়েছে,সরকারি তরফে তদারকি ও জবাবদিহি না থাকায়
এসব এনজিওগুলো বেপরোয়া ও লাগামছাড়া হয়ে উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে,ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচির আওতায় লগ্নিকৃত এসব বেসরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো স্বল্পমুনাফা ও সহজশর্তের ঋণের প্রতিশ্রুতির আড়ালে চড়াসুদ আদায় করে চলেছে।
কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান ঋণ খেলাপির দায়ে চক্রবৃদ্ধি হারে সুদাসল পরিশোধে বাধ্য করছে। এক্ষেত্রে খেলাপিদের উপর নেমে আসছে অমানুষিক নির্যাতন-নিপীড়ন। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, সর্বনিম্ন ১০শতাংশ হার থেকে শুরু করে ১৮/২০শতাংশ পর্যন্ত লগ্নিকৃত ঋণ এর বিপরীতে সুদ আদায় করা হচ্ছে।
সঠিক পরিসংখ্যান জানা না গেলেও পৌর সদরসহ উপজেলাব্যাপি অর্ধশতাধিক বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা বা এনজিও গড়ে উঠেছে।
গ্রামীণ ব্যাংক,ব্র্যাক,কারিতাস,জাগরণী চক্র,আশা, আরআরএফ,প্রচেষ্টা সমাজ উন্নয়ন,শিশু নিলয় ফাউন্ডেশন,ডিআরও, আর্স বাংলা, পল্লী প্রগতি সংস্থা, পেন ফাউন্ডেশন,পিকেএসএফ, ইত্যাদি কয়েকটি এনজিও'র সামাজিক উন্নয়ন কর্মকান্ড চোখে পড়লেও অন্যরা থেকে যান চোখের আড়ালে।
অভিযোগ রয়েছে, মোটা দাগে আর্থসামাজিক উন্নয়ন অগ্রগতির ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত কয়েকটি এনজিও ব্যতীত বেশিরভাগ এনজিও 'ক্রেডিট প্রোগ্রাম' ক্ষুদ্র ঋণদান কর্মসূচি নিয়ে ব্যস্ত। মৌলিক চাহিদা শিক্ষা,স্বাস্থ্য, স্যানিটেশন,সুপেয় পানি, আর্সেনিক মুক্ত টিউবয়েল, শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ,সামাজিক বনায়ণে বৃক্ষরোপণ, ইত্যাদি জনহিতকর কাজের ব্যাপারে এনজিও গুলোর ইতিবাচক তেমনকোন ভূমিকা লক্ষ্য করা যাচ্ছেনা।
বরং বেশিরভাগ এনজিও বা বেসরকারি অর্থলগ্নীকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ক্রেডিট প্রোগ্রামের আওতায় ক্ষুদ্রঋণ বিতরণ ও চড়াসুদ আদায় নিয়ে ব্যস্ত!
তথ্যানুসন্ধানে জানাগেছে,প্রতিটি কর্মদিবসে অফিসের হাজিরা খাতায় নাম লিখিয়ে এনজিও গুলোর নারী-পুরুষ মাঠকর্মীদের বাইসাইকেল কিংবা মোটর সাইকেলে ঋণের টাকা আদায়ে গ্রাম-গ্রামান্তরের পাড়ামহল্লা চসেবেড়াতে দেখা যায়। এসব এনজিওর বিভিন্ন নামে 'সমিতি'র গ্রুপ সদস্যদের মাঝে দেয়া এসব ঋণের টাকা আদায়কে কেন্দ্র করে শোষণ বঞ্চনার মতো অপ্রীতিকর-অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্ম নেয়। ঋণের জালে আটকেপড়া অসহায় গ্রহীতা পরবর্তী ঋণ পাওয়া না পাওয়ার সংশয়-সন্দেহে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এসব অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ধামাচাপা পড়ে যায়!