
বাগেরহাটের মোংলা পৌরসভার মনপুরা সেতুর কাছে বঙ্গবন্ধু সড়ক এলাকায় জমি নিয়ে বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত এক ব্যক্তির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে পরস্পরবিরোধী অভিযোগ উঠে।
পরে পুলিশ মৃত্যুর কারণ উদঘাটনে মরদেহ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য আদালতের অনুমতি চেয়ে আবেদন করে। আদালতের নির্দেশনার পর আজ সকাল সাড়ে ১১ টায় মোংলা পৌর শ্রমিক কবরস্থান থেকে লাশ উত্তোলন করা হয়।
বাড়ির সীমানা নির্ধারণকে কেন্দ্র করে অগ্নিকাণ্ড ও সংঘর্ষের ঘটনায় আহত হন লিয়াকত মাঝি (৬১)। পরে তিনি মারা গেলে মরদেহ পুলিশকে না জানিয়ে ময়নাতদন্ত ছাড়া দাফন করা হয়।
পুলিশ, স্থানীয় বাসিন্দা ও ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, মোংলা পৌরসভার বঙ্গবন্ধু সড়ক এলাকায় সেলিম হোসেন মাঝির পরিবারের সঙ্গে প্রতিবেশী আবুল কালাম হাওলাদারের ২০-২৫ বছর ধরে জমির সীমানা নিয়ে বিরোধ রয়েছে। এর জেরে গত ২৮ নভেম্বর দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় পক্ষের কয়েকজন আহত হন।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সেলিম হোসেনের পক্ষ নিজের রান্নাঘরে আগুন দিয়ে প্রতিপক্ষের কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন বলে অভিযোগ ওঠে। তবে সেলিমের স্বজনদের দাবি, যা ঘটেছে-সে অনুযায়ীই তারা মামলা করেছেন। একই ঘটনায় প্রতিবেশী মেহেদী হাসান হাওলাদার প্রতিপক্ষের লোকজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলার জন্য অভিযোগ দেন।
পুলিশ সে অভিযোগ মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করেনি অভিযোগ করে মো. আবুল কালাম হাওলাদার বলেন, প্রতিপক্ষ তাদের জব্দ করতে হামলার নাটক সাজিয়ে 'মিথ্যা মামলা' করেছে।
জানা গেছে, সংঘর্ষে আহত লিয়াকত মাঝির শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে মোংলা থেকে গত ২০২৪ সালের ১ ডিসেম্বর খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা গেলে স্বজনরা তাঁর মরদেহ নিয়ে মোংলায় ফেরেন। পরে পুলিশকে না জানিয়ে ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফন করেন।
এ বিষয়ে মোংলা থানার ওসি তদন্ত মানিক চন্দ্র গাইন বলেন, দাফনের পর পুলিশ লিয়াকত মাঝির মৃত্যুর খবর পায়। কী কারণে তিনি মারা গেছেন, তা জানতে মরদেহ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য আদালতের অনুমতি চাওয়া হলে। মহামান্য আদালত তা আমলে নিয়ে লাশ কবর থেকে উত্তোলন করার নির্দেশনা দেয় ।
নির্দেশনা অনুযায়ী লাশ উত্তোলন করে বাগেরহাট ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। লাশের ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের পর বোঝা যাবে কী কারণে তিনি মারা গিয়েছিলেন।
এ সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সহকারি কমিশনার ভূমি নওসীনা আরিফ লাশ উত্তোলনের সময় কবরস্থানে উপস্থিত ছিলেন।
তিনি বলেন, আদালতের নির্দেশে তাকে এ লাশ উত্তোলনের দায়িত্ব দেয়া হয়। লাশ উত্তোলনের পর ময়নাতদন্তের জন্য বাগেরহাটে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে বোঝা যাবে কী কারণে তিনি মারা গেছেন। এ সময় তার সাথে মোংলা থানা পুলিশের একটি টিম উপস্থিত ছিলো।