
ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস গাজায় যুদ্ধবিরতির আলোচনা শুরু করতে প্রস্তুত বলে জানানোর পর চুক্তির বিষয় এগিয়ে নিতে রাজি হয়েছে ইসরায়েল। দখলদার দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু একটি প্রতিনিধিদলকে কাতারে পাঠাচ্ছেন।
ইসরায়েলি প্রতিনিধি দলটি গাজায় যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তি নিয়ে আলোচনা করতে রোববার (৬ জুলাই) দোহার উদ্দেশ্যে রওনা দিবে বলে জানিয়েছে এএফপি।
হোয়াইট হাউজে সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে নেতানিয়াহুর বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। প্রায় ২১ মাস ধরে চলা গাজা যুদ্ধ থামাতে নতুন করে চেষ্টা শুরু করেছেন ট্রাম্প।
যদিও নেতানিয়াহু আগেই জানিয়েছেন, যুদ্ধবিরতির খসড়া নিয়ে হামাস যে সংশোধনী দিয়েছে, তা ইসরায়েলের কাছে ‘অগ্রহণযোগ্য’।
এর আগে, স্থানীয় সময় শুক্রবার (৪ জুলাই) বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়- আমেরিকার মধ্যস্থতায় গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবের হামাস ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া জমা দিয়েছে।
যুদ্ধবিরতি আলোচনার সঙ্গে পরিচিত ওই কর্মকর্তা বার্তা সংস্থাটিকে জানান, হামাসের প্রতিক্রিয়া ইতিবাচক, যা যুদ্ধবিরতির চুক্তিকে সহজতর করতে পারে।
হামাস শুক্রবার জানিয়েছিল, তারা ‘অবিলম্বে ও আন্তরিকভাবে’ আলোচনায় অংশ নিতে প্রস্তুত এবং প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতির বিষয়ে তাদের জবাব পাঠানো হচ্ছে।
নেতানিয়াহুর দফতর থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘হামাস কাতারি প্রস্তাবে যে পরিবর্তন চাচ্ছে, তা গতরাতে আমাদের জানানো হয়েছে। কিন্তু এসব পরিবর্তন ইসরায়েলের কাছে মেনে নেওয়ার মতো নয়।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু প্রস্তাবিত আলোচনায় অংশ নিতে নির্দেশ দিয়েছেন। সেইসঙ্গে কাতারি প্রস্তাবের ভিত্তিতে জিম্মিদের মুক্তির বিষয়ে সংলাপ চালিয়ে যেতে বলেছেন, যেটিতে ইসরায়েল ইতোমধ্যে সম্মতি দিয়েছে।’
হামাস এখনো যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি সম্পর্কে তাদের জবাব প্রকাশ্যে জানায়নি। তবে কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতায় প্রস্তাবটি হামাসের কাছে পৌঁছেছে।
আলোচনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ফিলিস্তিনি দুটি সূত্র এএফপিকে জানিয়েছে, প্রস্তাবে ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির কথা বলা হয়েছে। এ সময় হামাস ১০ জন জীবিত জিম্মি মুক্তি দেবে এবং কয়েকটি মৃতদেহ ফেরত পাঠাবে। এর বিনিময়ে ইসরায়েলের কাছে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মুক্তি চাওয়া হয়েছে।
তবে তারা জানিয়েছে, হামাসের পক্ষ থেকে আরও কিছু শর্ত তোলা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে—ইসরায়েলের সেনা প্রত্যাহারের রূপরেখা, আলোচনার সময় পুনরায় যুদ্ধ শুরু না হওয়ার নিশ্চয়তা ও জাতিসংঘের নেতৃত্বে ত্রাণ বিতরণ ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার দাবি।