রবিবার ১৬ মার্চ ২০২৫ ২ চৈত্র ১৪৩১

শিরোনাম: মার্চের ১৫ দিনে প্রবাসী আয় ১৬৫ কোটি ডলার   আবরার হত্যার রায় ছাত্ররাজনীতির জন্য কড়া বার্তা   স্বাধীনতা দিবসের কুচকাওয়াজ হচ্ছে না : স্বরাষ্ট্র সচিব   রায়ে সন্তুষ্ট আবরার ফাহাদের বাবা, দ্রুত কার্যকরের প্রত্যাশা   রায়ে সন্তুষ্ট আবরার ফাহাদের বাবা, দ্রুত কার্যকরের প্রত্যাশা   রাজউকের অনুমোদন ছাড়াই অবৈধ নির্মাণ, সাংবাদিককে হুমকি!   রায়ে আবরার ফাহাদের মায়ের সন্তুষ্টি প্রকাশ   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
মতে অনৈক্য
স্বাস্থ্য সংস্কার প্রতিবেদন জমা পড়ছে না কাল
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ৩:১১ পিএম

জনস্বাস্থ্য, চিকিৎসা ও মেডিক্যাল শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে প্রস্তুত করা হচ্ছে স্বাস্থ্য সংস্কার প্রস্তাব। আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি কমিশনের পক্ষ থেকে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা থাকলেও সদস্যরা ঐকমত্যে না পৌঁছানোর কারণে তা জমা হচ্ছে না। 

কমিশনের প্রধান জাতীয় অধ্যাপক এ কে আজাদ খান জানিয়েছেন, এ বিষয়ে সরকারের কাছে আরো সময় চাওয়া হয়েছে। 

অন্তর্বর্তী সরকারের স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের একাধিক সদস্য গণমাধ্যমকে জানায়, এ পর্যন্ত ১০টি বিষয়ে সবাই ঐকমত্য হয়েছে।

বিষয়গুলো হলো ওষুধ, রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যয় কমিয়ে আনা, বিদেশমুখী প্রবণতা কমিয়ে জনবান্ধব স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা, বাজেট বৃদ্ধি, দুর্নীতি ও অপচয় কমিয়ে বাজেটের ব্যবহার বৃদ্ধি, প্রাথমিক স্বাস্থ্য নিশ্চিত করা, নগর স্বাস্থ্যে অবহেলা দূরীকরণ, অর্থের অভাবে হাসপাতালে জরুরি সেবা ব্যহূত যেন না হয় এবং এ বিষয়ে আইন প্রণয়ন, চিকিৎসা শিক্ষার মানোন্নয়ন, গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা। 

জাতীয় অধ্যাপক এ কে আজাদ খান বলেন, ‘স্বাস্থ্যসেবায় বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে চিকিৎসকদের কমিশন নেওয়া অনৈতিক ও অবৈধ। চিকিৎসকদের কমিশন রোধ করা হবে। আশা করছি, এতে মানুষের চিকিৎসা খরচ কমিয়ে আনা যাবে।’

তিনি বলেন, ‘এই কমিশনের কাজ এ খাতে পলিসি তৈরিতে সরকারকে পরামর্শ দেওয়া। মতবিনিময়সভায় পাওয়া পরামর্শগুলো পরবর্তী সময়ে কমিশনের প্রতিবেদন তৈরিতে ব্যবহার করা হবে।’

কমিশনের কয়েকজন সদস্য জানান, জনগণ কী চায়, এ বিষয়ে সবার মতামত নিয়ে কমিশন প্রতিবেদন তৈরিতে কাজ করছে। চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে অথবা আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে সংস্কার প্রস্তাব জমা দেওয়া হতে পারে। 

বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতকে নতুন করে সাজাতে হবে। মেডিক্যাল কলেজগুলোতে চিকিৎসক, নার্স ও দক্ষ কর্মচারীর সংকট রয়েছে। প্রয়োজন অনুপাতে ভবন নেই, যন্ত্রপাতি নেই। হাসপাতালে শয্যা নেই। মেঝেতে, শৌচাগারের সামনে, করিডরে, সিঁড়িতেও রোগীদের থাকতে হচ্ছে।

এসব সংকট কাটাতে যে বাজেট দরকার, সেটিও নেই। তাই বাজেট অন্তত তিন গুণ বাড়াতে হবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক এম এ ফয়েজ বলেন, ‘একটি দেশের সুস্থ জাতি দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করে। জনগণকে স্বাস্থ্যবান করতে যে স্বাস্থ্যব্যবস্থা দরকার, দেশে এ ধরনের স্বাস্থ্যব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। ৫০ বছরে গুণগত স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার জন্য জাতীয়ভাবে কোনো পদক্ষেপই নেওয়া হয়নি। আমরা শুধু বিল্ডিং বানিয়েছি, কিছু জিনিস ক্রয় করেছি। কিন্তু এগুলো ব্যবহারের জন্য কোনো জনবল তৈরি করিনি। আমরা কী প্রয়োজন মতো প্যারামেটিক, ফিজিওথেরাপিস্ট, ল্যাবরেটরি টেকনোলজিস্ট তৈরি করেছি? শুধু বলছি, চিকিৎসক সময় দেয় না, রোগ নির্ণয় সঠিকভাবে হচ্ছে না।’

অধ্যাপক ফয়েজ বলেন, ‘২০৩০ সালে আমাদের ইউনিভার্সাল হেলথ কভারেজ অর্জন করার কথা। বিশ্বে যেসব দেশে উন্নত স্বাস্থ্যব্যবস্থা গড়ে উঠেছে তারা সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবাকে গুরুত্ব দিয়েছে। দুঃখজনক হলেও সত্য, আমরা স্বাস্থ্য সুরক্ষা কর্মসূচি পরীক্ষামূলক করতে গিয়েই দেড় দশক পার করে দিয়েছি। মাত্র এক জেলা টাঙ্গাইলে করেছি। কিন্তু সারা দেশে কখন করব আর এর ফলাফল কবে পাব, জানি না।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের উচিত হবে আগামী পাঁচ বছর সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে নীতিনির্ধারণ করে বাস্তবায়ন করা। যাতে টাকার অভাবে কেউ যেন চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত না হন। যেখানে মানুষ সেবা  নেবে সেটা হবে গুণগত ও নিরাপদ সেবা। এর জন্য যে ধরনের স্বাস্থ্য অবকাঠামো ও বাজেট দরকার, সেটি আমাদের নেই। বিশেষ করে নগরে প্রাথমিক স্বাস্থ্যব্যবস্থা নেই। গ্রামে যারা প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে থাকেন তারা আবার বেশির ভাগ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার স্বীকৃত স্বাস্থ্যকর্মী নন।’

উন্নত স্বাস্থ্যসেবার উন্নতি করবেন স্বাস্থ্যসেবা কর্মীরা। তাদের দক্ষ ও আস্থাশীল করে গড়ে তুলতে হবে। এর জন্য যে মেডিক্যাল শিক্ষাব্যবস্থা দরকার সেটা ঊনবিংশ শতাব্দীর। একবিংশ শতাব্দীতে এসে তো ওই স্বাস্থ্যকর্মী দিয়ে কাজ হবে না। এর জন্য প্রয়োজন একবিংশ শতাব্দীর শিক্ষাব্যবস্থা।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের সাবেক উপদেষ্টা ও সংস্থার কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ডা. মোজাহেরুল হক বলেন, ‘যেসব দেশে পকেট থেকে টাকা খরচ করে স্বাস্থ্যসেবা সরাসরি কেনা হয়, তার মধ্যে বাংলাদেশ একটি। এখানে ব্যক্তি রোগীর চিকিৎসা খরচ বিশ্বে সর্বোচ্চ।’

তিনি বলেন, ‘পকেট থেকে টাকা খরচ করে যখন চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে হয় তখন এর প্রভাব পড়ে পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে। এতে মানুষ গরিব থেকে আরো গরিব হয়ে যায়। অথচ এ টাকা অন্য খাতে ব্যয় হতে পারত। যেমন- পুষ্টিকর খাবার, সুন্দর বাসস্থান, কাপড়চোপড় ইত্যাদিতে।’ 

অধ্যাপক মোজাহেরুল হক বলেন, ‘আমাদের চিন্তা করতে হবে- এমন একটা স্বাস্থ্যব্যবস্থা, যেটায় দেশের বেশির ভাগ মানুষ উপকৃত হবেন। যেহেতু দেশের বেশির ভাগ মানুষ গ্রামের বাস করেন, ফলে গ্রামের মানুষের স্বাস্থ্যের মানোন্নয়ন জরুরি। উপজেলা হাসপাতাল, ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র, কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোকে শক্তিশালী ও জনবান্ধব করতে হবে, যাতে মানুষ আস্থা নিয়ে সেখানে সেবা নিতে আসে। এরপর রেফারেল পদ্ধতি চালু করা। আমরা চাই, রোগীবান্ধব স্বাস্থ্যব্যবস্থা, যা পুরো জাতিকে রোগমুক্ত রাখতে সাহায্য করবে।’



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://dailyvorerpata.com/ad/af.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: vorerpata24@gmail.com বার্তা ইমেইল:news@dailyvorerpata.com বিজ্ঞাপন ইমেইল:vpgmad@gmail.com